হায়দরাবাদ : আমেরিকান ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজির একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে রোজকার রুটিনে সাতটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস যোগ করে নিলে অনেকটাই কমে যেতে পারে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি । আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের 'লাইফস সিম্পল 7' নামে পরিচিত এই সাতটি অভ্যাস ৷ কার্ডিওভাসকুলার এবং মস্তিষ্ককে ভাল রাখার জন্য যে যে বিষয়গুলির অভ্যাস প্রয়োজন সেগুলি হল (Tips to Prevent Dementia ):
- সবসময় সক্রিয় থাকা
- ভালো স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া
- ধূমপান না করা
- কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা
- রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা
- ওজন কমানো
মিসিসিপি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি হোল্ডার তথা গবেষণার লেখক অ্যাড্রিয়েন টিন বলেন, "লাইফস সিম্পল 7-এর মত স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলি সামগ্রিকভাবে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কম করতে পারে ৷ তবে 'হাই-জেনেটিক রিস্ক' যুক্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য কি না তা নিশ্চিত নয় ৷" তবে গবেষণা উঠেছে এঁদের ক্ষেত্রেও ঝুঁকি কিছুটা অবশ্য়ই কমতে পারে ৷ গবেষণার জন্য 8,823 জন ইউরোপীয় এবং 2,738 জন আফ্রিকান মানুষকে বেছে নেওয়া হয়েছিল ৷ 30 বছর ধরে তাঁদের ফলো-আপ করেছিলেন গবেষকরা ৷ গবেষণার শুরুতে দলটির গড় বয়স ছিল 54 বছর ৷
এই পরীক্ষায় সাতটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস পালনের নিরিখে দলটিকে স্কোর (0-14 নম্বর) দেওয়া হয়েছিল ৷ ইউরোপীয়দের মধ্যে গড় স্কোর ছিল 8.3 এবং আফ্রিকানদের মধ্যে গড় স্কোর ছিল 6.6 । গবেষকরা আলঝাইমার রোগের 'জিনোম-ওয়াইড' পরিসংখ্যান ব্যবহার করে গবেষণার শুরুতে জেনেটিক ঝুঁকির স্কোর গণনা করেছিলেন ৷ এই পরীক্ষা জানায় ডিমেনশিয়ার জন্য কার কতখানি জেনেটিক ঝুঁকি রয়েছে । জেনেটিক ঝুঁকির উপর ভিত্তি করে ইউরোপীয় অংশগ্রহণকারীদের মোট পাঁচটি গ্রুপে বিভক্ত করা হয়েছিল এবং আফ্রিকানদের তিনটি গ্রুপে বিভক্ত করা হয়েছিল ।
সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল তাঁদের যাঁদের আলঝাইমার, APOE e4 কিংবা APOE-এর সমস্য়ার মধ্য়ে কমপক্ষে একটি রয়েছে ৷ ইউরোপীয়দের মধ্যে 27.9 শতাংশ APOE e4 ভ্যারিয়েন্ট ছিলেন ৷ আর আফ্রিকানদের মধ্যে 40.4% এর APOE e4 ভ্যারিয়েন্ট ছিলেন । সর্বনিম্ন ঝুঁকির গ্রুপে রাখা হয়েছিল APOE e2 ভ্যারিয়েন্টকে, যা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমানোর সঙ্গে সম্পর্কিত ৷
আরও পড়ুন : যৌন মিলনে দীর্ঘ বিরতি শুধু সম্পর্কে নয় প্রভাব ফেলতে পারে শরীরেও
সমীক্ষার শেষে দেখা গিয়েছে, ইউরোপিয়ানদের মধ্যে 1,603 জন ব্যক্তি এবং আফ্রিকানদের মধ্যে 631 জন ব্যক্তি ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন । ইউরোপিয়দের ক্ষেত্রে গবেষকরা দেখেছেন 'লাইফস সিম্পল 7'-এর পরীক্ষায় যাঁদের স্কোর সর্বোচ্চ ছিল সেই ব্যক্তিদের ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কম ছিল । লাইফস্টাইল ফ্যাক্টর স্কোরে প্রতিটি এক-পয়েন্ট বৃদ্ধির জন্য, ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি 9% কম হতে দেখা গিয়েছে। ইউরোপিয়দের মধ্যে, লাইফস্টাইল ফ্যাক্টর স্কোরে যাঁরা একেবারে নীচের দিকে ছিলেন তাঁদের তুলনায় মধ্যম এবং উচ্চ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি 30% থেকে 43% কম ছিল। আফ্রিকানদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি নিন্ম স্কোরের থেকে উচ্চ স্কোরের মধ্য়ে 6% থেকে 17% কম ছিল ।