হায়দরাবাদ, 17 ফেব্রুয়ারি: সদ্য অবসট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন 'ডিস্কো কিং' বাপ্পি লাহিড়ী ৷ আসুন দেখে নেওয়া যাক, অবসট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগটি ঠিক কী এবং কাদের ক্ষেত্রে এর সম্ভবনা সবচেয়ে বেশি ৷ অবসট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার ক্ষেত্রে ঘুমের মধ্য়েই শ্বাসবায়ু গ্রহণের পথে সমস্যা তৈরি হয় বা অনেকক্ষেত্রে শ্বাসপ্রক্রিয়াটি বিকল হয়ে যায় (What Is Obstructive sleep apnea) ৷
সাধারণ ক্ষেত্রে শ্বাসগ্রহণের পথে বাধার সৃষ্টি হলে ঘুমের মধ্য়ে নাক ডাকার সমস্য়া তৈরি হয় ৷ স্লিপ অ্য়াপেনিয়ার রোগীদের ওজন কন্ট্রোল করা এবং বিএমআই সঠিক রাখা একান্ত প্রয়োজন ৷ আমারা এবিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়েছিলাম, হায়দরাবাদের ভিআইএনএন হাসপাতালের চিকিৎসক, এমডি (জেনারেল মেডিসিন) ডাঃ রাজেশ ভুক্কালা বলেন, “যখন আমরা শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করি এবং ত্য়াগ করি, তখন আমাদের অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা মিলে যাওয়া উচিত। কিন্তু অবসট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়াতে, যা সাইনাস, নাক, ঘাড়ের গঠনের সঙ্গে সম্পর্কিত, সেক্ষেত্রে এই মাত্রার ভারসাম্য় বজায় থাকে না ।
- রোগের কিছু লক্ষণ:
- জোরে জোরে নাক ডাকা
- ঘুম থেকে ওঠার পরেও মারাত্মক ক্লান্তি, যেন বিশ্রাম নেওয়াই হয়নি ৷
- হালকা মাথার যন্ত্রণা
- দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তিভাব
- নিত্য়দিনের কাজ কর্ম করার ক্ষেত্র অক্ষমতা
- ঘুমের মধ্য়ে বারবার হঠাৎ হঠাৎ জেগে ওঠা
- মানসিক চাপ
- শ্বাসকষ্ট
চিকিৎসক আরও বলেন, এ ধরণের ব্য়ক্তিদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, স্টিওআর্থারাইটিস, হাইপোথাইরয়েডিজম সমস্য়াও প্রবল হয়ে ওঠে ৷ সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির ক্ষেত্রে শরীর অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের মধ্য়ে মাত্রার ভারসাম্য় না থাকার কারণে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যেমন হৃৎপিণ্ড, মস্তিক, ফুসফুসেরও ক্ষতি সাধিত হতে পারে ৷
কাদের ক্ষেত্রে রোগের ঝুঁকি বেশি:
- সাধারণত যাঁরা অতিরিক্ত মোটা
- যাঁদের গলা 17 ইঞ্চির থেকে বেশি লম্বা
- যাঁদের বিএমআই 25 এর বেশি
- যাঁদের ডিএনএস বা ডিভিয়েটেড ন্য়াসাল স্পেক্টামের সমস্য়া রয়েছে
- যাঁদের অ্য়ালার্জি, সাইনোসাইটিস বা অ্য়াস্থামার সমস্য়া রয়েছে
- রোগ কীভাবে চিহ্নিত করা যায়:
ঘুমন্ত অবস্থায় একজন ব্যক্তিকে ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করলেই তিনি স্লিপ অ্যাপনিয়ার রোগী কি না, তা নির্ণয় করা যেতে পারে ৷ যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় পলিসমনোগ্রাফি বলা হয় । এর জন্য় হাসপাতালে বা বাড়িতে একটি বিশেষ মেশিন বসানো হয় ৷ যখন সেই ব্যক্তি ঘুমোচ্ছেন তখন দেখা হয় তিনি কীভাবে শ্বাসগ্রহণ করছেন, তিনি কতটা অক্সিজেন নিচ্ছেন এবং কতখানি কার্বন ডাই অক্সাইড ছাড়ছেন, তাঁর হার্টবিট কত দ্রুত চলছে এবং তাঁর রক্তচাপ ঠিক আছে কি না ? ইনডেক্স অনুযায়ী 6.5 অবধি রিডিং স্বাভাবিক, এর বেশি হলে কিন্তু ভয়ের কারণ রয়েছে ৷
আরও পড়ুন:টিকার পরে শক্তিশালী হচ্ছে অ্যান্টিবডি, আশার আলো নয়া সমীক্ষায়
- প্রতিকারের উপায়:
এক্ষেত্রে রোগের প্রতিকারের জন্য় কারণ গুলি খুঁজে বের করে তার চিকিৎসা শুরু করতে হবে ৷ ন্য়াসাল স্পেক্টামে সমস্য়া থাকলে তার চিকিৎসা করাতে হবে ৷ ওজন কমানো এবং বিএমআই ঠিক রাখার দিকে নজর দিতে হবে ৷ ব্য়ক্তি যদি প্রবীণ হন সেক্ষেত্রে অস্ত্রপচারের মত বিকল্পগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে ৷