হায়দরাবাদ, 8 সেপ্টেম্বর : সার্স-কোভ-2-এর (SARS-CoV-2) নতুন একটি ভ্যারিয়্যান্ট পাওয়া গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা-সহ বিশ্বের অন্য দেশগুলিতে ৷ কোভিড-19 (COVID-19) সংক্রমণের নতুন ভ্যারিয়্যান্টটি আরও বেশি শক্তিশালী এবং ভ্যাকসিনের সুরক্ষাকেও হার মানাতে পারে, জানাচ্ছে গবেষণা ৷
দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিকেবল ডিজিজেস (National Institute for Communicable Diseases, NICD) এবং কাওয়াজুলু-নাটাল রিসার্চ ইনোভেশন অ্যান্ড সিকোয়েন্সিং প্ল্যাটফর্ম (KwaZulu-Natal Research Innovation and Sequencing Platform, KRISP), এই দুই সংস্থার বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন যে, দেশে এ বছর মে মাসে সি.1.2-র (C.1.2) প্রথম সন্ধান পাওয়া যায় ৷
13 অগস্ট পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সি.1.2 ভ্যারিয়্যান্টটি চিনে (China), কঙ্গো (Democratic Republic of the Congo), মরিশাস (Mauritius), ইংল্যান্ড (England), নিউজিল্যান্ড (New Zealand), পর্তুগাল (Portugal) এবং সুইৎজারল্যান্ডে (Switzerland) পাওয়া গিয়েছে ৷
24 অগস্টে অনলাইন সংস্থায় (MedRxiv) প্রকাশিত গবেষণাপত্র থেকে জানা গিয়েছে, সি.1-এর তুলনায় সি.1.2-এর মিউটেশন অনেক বেশি হয়েছে ৷ দক্ষিণ আফ্রিকায় সার্স-কোভ-2-এর প্রথম সংক্রমণের ঢেউয়ে অন্যতম উৎস সি.1 ৷
আরও পড়ুন : Sukhibhava : ফুসফুসে করোনাভাইরাসের সংখ্যা বৃদ্ধিই কোভিড-19-এ মৃত্যুর কারণ, জানাচ্ছে গবেষণা
বিশ্বে এখনও যতগুলি দুশ্চিন্তাজনক ভ্যারিয়্যান্টের (variants of concern, VOCs) খোঁজ মিলেছে, তাদের তুলনায় এই নতুন ভ্যারিয়্যান্টটির অনেক বেশি মিউটেশন হয়েছে ৷ তাঁরা উল্লেখ করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকা এবং দুনিয়াজুড়ে এই সি.1.2-এর ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা আর দ্রুততা সম্পর্কে এখনও পুরোপুরি জানা যায়নি ৷
গবেষণায় জানা যাচ্ছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রতি মাসে সি.1.2 জিনোমের সংখ্যা বেড়ে চলেছে ৷ মে মাসে জিনোম সিকোয়েন্সিং ছিল 0.2% ৷ জুনে তা বেড়ে হয়েছিল 1.6% ৷ আর তারপরে জুলাইতে 2% ৷
গবেষকরা জানাচ্ছেন, "দেশে প্রথম বিটা এবং ডেল্টা ভ্যারিয়্যান্ট চিহ্নিত করা হয় ৷ এই ভ্যারিয়্যান্টটিরও বিটা ও ডেল্টা ভ্যারিয়্যান্টের মতোই দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ৷"
গবেষণা অনুযায়ী, সি.1.2 ধরনের ভ্যারিয়্যান্টটির প্রতি বছর মিউটেশনের হার 41.8% ৷ যা বর্তমানে অন্য ভ্যারিয়্যান্টগুলির বিশ্বে মিউটেশনের হারের (current global mutation rate) দ্বিগুণ ৷
ভাইরোলজিস্ট (Virologist) উপাসনা রায় (Upasana Ray) উল্লেখ জানিয়েছেন, 2019-এ চিনে প্রথম যে ভাইরাসটি ধরা পড়েছিল তার থেকে এটা অনেকটা আলাদা ৷ সি.1.2-এর (C.1.2 line) স্পাইক প্রোটিনে (spike protein) জড়ো হওয়া অসংখ্য মিউটেশনের ফল এই ভ্যারিয়্যান্ট ৷
তিনি বলেন, "এর সংক্রামিত হওয়ার ক্ষমতা আরও বেশি এবং দ্রুত হতে পারে ৷ স্পাইক প্রোটিনে এতগুলো মিউটেশন রয়েছে, যার ফলে এটা রোগপ্রতিরোধক ক্ষমতাকে হারিয়ে দিতে পারে ৷ আর সেজন্যই এটা বিশ্বজুড়ে চলতে থাকা ভ্যাকসিনেশন প্রকল্পের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ ৷" উপাসনা রায় সিএসআইআর-ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ বায়োলজি-র কলকাতা শাখার (Kolkata's CSIR-Indian Institute of Chemical Biology) বিজ্ঞানী ৷ তিনি এই গবেষণায় যুক্ত ছিলেন না ৷
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, "এক্ষেত্রে কোভিড-19 সংক্রমণ রোখার বিধিনিষেধগুলি খুব অবশ্যই ঠিক করে মেনে চলতে হবে, যাতে আর না ছড়ায় ৷"