আমাদের অনেকের কাছেই কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পরের গৃহবন্দি দশাটি রীতিমত একটি কঠিন পর্ব ৷ কারণ নিভৃতবাসে থাকতে থাকতে ভীষণ একা বোধ করাই খুব স্বাভাবিক ৷ কিন্তু কোনও ব্যাক্তির যদি আগে থেকেই কোনও মানসিক অসুখ থাকে তাঁর জন্য এটি মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে ৷ দেখে নিন বেশ কিছু স্ট্রাটেজি, যা অনুসরণ করলে আপনি করোনার নিভৃতবাসের মধ্যেও নিজের মানসিক স্বাস্থ্য়ের খেয়াল রাখবেন (How to look after your mental health during COVID) ৷
করোনা সংক্রমিত হওয়ার পরেও বাড়িতে কিভাবে নিজের মানসিক স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখবেন :
যখন আপনি ভীষণরকম অসুস্থতা এবং অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে চলেছেন, তখন মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে বেশকিছু সহজ ধাপ মনে রাখাও অত্যন্ত জটিল হয়ে পড়ে ৷ তাই যদি আপনি কোভিডের জেরে আইসোলেশনে থাকেন, তাহলে এই কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখা অত্য়ন্ত জরুরি ৷
- জ্বর, পেশির টান এবং যন্ত্রণার জন্য প্য়ারাসিটামল ব্যবহার করুন ৷
- স্বাস্থ্যকর খাবার খান ৷
- যদি আপনার জ্বর থাকে অবশ্য়ই বেশি করে জল বা তরল খাবার খান
- অন্তত দশদিনের জন্য ব্যায়ম করা বন্ধ রাখুন এবং আপনার উপসর্গগুলি কমতে শুরু করলে ধীরে ধীরে এক্সারসাইজ শুরু করতে পারেন ৷
- দীর্ঘ শ্বাস নিন কারণ নিভৃতবাসের মধ্য়ে এটি আপনার ফুসফুসকে ভাল রাখতে সাহায্য করবে এবং আপনাকে সেরে উঠতেও সাহায্য করবে ৷ তবে এ বিষয়ে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ৷
- মনকে শান্ত রাখার চেষ্টা করুণ কারণ এর ফলে অসুস্থতার উৎকন্ঠা কাটবে, কাটবে একাকীত্বও ৷
- মনকে অন্য়দিকে ঘুরিয়ে রাখার চেষ্টা করুন বই পড়ুন, ছবি দেখুন , কিছু সৃজনশীল কাজে নিজেকে যুক্ত করুণ ৷
- ফোনের মাধ্যমে বা অনলাইনে পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলুন ৷
আপনার কোভিড উপসর্গগুলির দিকে নজর দেওয়াও একান্ত জরুরি ৷ রয়্য়াল অস্ট্রেলিয়ান কলেজ অফ জেনারেল ফিজিশিয়ানস উপসর্গগুলি নজরে রাখার জন্য একটি ডায়েরি ব্য়বহার করে ৷ চাইলে আপনিও এমন কিছু ব্যবহার করতে পারেন অথবা হেলথডিরেক্ট সিমটম চেকারও ব্য়বহার করতে পারেন, যাতে কখন মেডিক্যাল সাহায্য দরকার তা বোঝা যায় ৷
কোভিডের সময় উৎকণ্ঠা থেকে বাঁচতে খেয়াল রাখুন কিছু বিষয় :
চরম অনিশ্চয়তা এবং উৎকণ্ঠা থেকে বাঁচতে অনেকেই মদ্যপান, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, জুয়া এবং অন্যান্য নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েন ৷ তাঁরা মনে করেন এর জেরে মনকে অন্যদিকে ব্যস্ত রাখা সম্ভব হবে এবং শারীরিক কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে ৷
কিন্তু এতে সাময়িক লাভ হলেও এধরনের বিষয় আপনাকে দীর্ঘদিনের জন্য মানসিক অসুখের রোগী করে তুলতে পারে ৷ এমনকি মোবাইলে একের পর দুঃখের খবর, নেতিবাচক খবর দেখতে থাকাও ঠিক নয় ৷ কারণ তা আপনাকে মানসিকভাবে আরও হতাশ করে দেবে ৷
আরও পড়ুন : টি সেল ভ্যাকসিনেশনের মাধ্যমে করোনার বিরুদ্ধে দীর্ঘস্থায়ী লড়াই সম্ভব, বলছে গবেষণা
মানসিক রোগীদের জন্য বিষয়টি আরও অনেক কঠিন :
যাঁরা আগে থেকেই মানসিক অসুখে ভুগছেন তাঁদের জন্য বিষয়টি আরও অনেক বেশি কঠিন ৷ তাঁদের ক্ষেত্রে তাই এ বিষয়ে অনলাইন থেরাপি নেওয়া প্রয়োজনীয় ৷ এছাড়া অবশ্যই ইতিবাচক সৃজনশীল কাজে যুক্ত থাকতে পারেন ৷ এক্সারসাইজ, অনলাইন থেরাপিও শুরু করতে পারেন চিকিৎসকের পরামর্শমতো ৷ কোভিডের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই চিকিৎসকের সংখ্যা এবং হাসপাতাল নিয়ে একটি বিরাট সংকট দেখা দিয়েছে ৷ তার প্রভাব পড়েছে মানসিক হাসপাতালগুলির ক্ষেত্রেও ৷ যার জেরে মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য বিষয়টি আরও কঠিন হয়ে উঠেছে ৷