হায়দরাবাদ, 2 সেপ্টেম্বর : কোভিড-19-এ আক্রান্ত বহু মানুষের মৃত্যুর কারণ ফুসফুসে সার্স-কোভ-2-এর সংখ্যা বৃদ্ধি, জানা গিয়েছে একটি গবেষণায় ৷
ফুসফুসে ভাইরাসের সংখ্যা বৃদ্ধিই কোভিড-19-এর মৃত্যুর কারণ
ন্যাচারাল মাইক্রোবায়োলজি জার্নালে (Nature Microbiology Journal) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী যাঁরা করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ভয়ঙ্কর অসুস্থ হয়েও টিকে থেকেছেন, তাঁদের তুলনায় যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের ফুসফুসের নিচের বায়ুথলিতে (lower airways) 10গুণ বেশি ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে ৷
নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের (New York University) গ্রসম্যান স্কুল অফ মেডিসিনের (Grossman School of Medicine) গবেষকেরা জানিয়েছেন, এর আগে অনুমান করা হচ্ছিল যে, মৃত্যুর ঝুঁকির ক্ষেত্রে একসঙ্গে একাধিক সংক্রমণ, যেমন ব্যাকটেরিয়াল নিউমোনিয়া (bacterial pneumonia) অথবা শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ৷
ইতিমধ্যে এই গবেষক দল মৃত্যুর কারণ হিসেবে ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের প্রভাব নিয়ে কোনও প্রমাণ খুঁজে পায়নি ৷ তাঁরা সতর্ক করেছেন যে, সঙ্কটজনক রোগীকে ঘন ঘন অ্যান্টিবায়োটিকস দেওয়ার জন্য এটা হতে পারে ৷
এনওয়াইইইউ ল্যানগং হেলথে (NYU Langone Health) মেডিসিন বিভাগের (Professor in the Department of Medicine) অধ্যাপক ইমরান সুলেইমান (Imran Sulaiman) বলেন, "আমাদের গবেষণা জানাচ্ছে যে ফুসফুস বিপুল সংখ্যক ভাইরাসে সংক্রামিত হওয়ায় তার সঙ্গে লড়তে ব্যর্থ হয়েছে শরীর ৷ আর সেই কারণে প্যানডেমিকে বহু সংখ্যক রোগী মারা গিয়েছেন ৷"
আরও পড়ুন : Sukhibhava : টিকে থাকতে ভোল বদলাতে পারে করোনাভাইরাস, জানাচ্ছে গবেষণা
তাছাড়া এই গবেষণা জানিয়েছে, কোভিড-19-এ আক্রান্ত যে সব রোগীরা বেঁচে গিয়েছেন আর যাঁরা মারা গিয়েছেন, এঁদের শরীরে করোনাভাইরাস প্রতিরোধকারী রাসায়নিক পদার্থের নিঃসরণের তারতম্য রয়েছে ৷ যাঁরা মারা গিয়েছেন তাঁদের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে প্রয়োজনীয় 50% কম রাসায়নিক পদার্থের নিঃসরণ হয়েছে ৷
এই বিশেষ ধরনের প্রোটিন শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতার একটা অংশ ৷ উপকোষগুলি এবং রাসায়নিক পদার্থ, যারা শরীরে নতুন কোনও মাইক্রোবের আক্রমণ হলে তাকে আটকানোর কথা মনে রাখে ৷ ভবিষ্যতে এ ধরনের লড়াইয়ের জন্য শরীরকে তৈরি করে ৷
অভিযোজিত রোগ প্রতিরোধক পদ্ধতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে পারছে না, এটাই সমস্যা, জানিয়েছেন লিওপোলডো সিগাল (Leopoldo Segal), মেডিসিন বিভাগের (Department of Medicine) সহকারী অধ্যাপক (Associate Professor) ৷
"যদি আমরা এর উৎস খুঁজে বের করতে পারি, তাহলে এর উপযুক্ত চিকিৎসাও বের করা যাবে ৷ এর ফলে শরীরে নিজস্ব লড়াই করার ক্ষমতা তৈরি হবে", বললেন সিগাল ৷
যদিও, তিনি জানিয়েছেন যে এই গবেষণা শুধুমাত্র সেই সব রোগীদের নিয়ে করা হয়েছে, যাঁরা কোভিডে আক্রান্ত হয়ে দু'সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৷ এটা হতে পারে যে, প্রথম দিকে কোভিড-19 সংক্রমণে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ বা রোগীর স্বয়ংক্রিয় রোগপ্রতিরোধক (autoimmunization) ক্ষমতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ৷
এই গবেষণার জন্য 589 জন পুরুষ ও মহিলার শরীর থেকে ব্যাকটেরিয়াল ও ফাংগাল সংক্রমণের নমুনা সংগ্রহ করেছিল দলটি ৷