সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, শিশুদের মধ্যে মানসিক চাপ তাদের খাবারের সঙ্গে সম্পর্কিত ৷ যেসব শিশুরা বেশি স্ট্রেসের সম্মুখীন হয় তারা বেশি জাঙ্ক ফুড খায় ( Junk food enhanced Stress in Children)। 'জার্নাল অফ নিউট্রিশন এডুকেশন অ্যান্ড বিহেভিয়ার'-এ প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, 25 শতাংশ মানুষ সফ্ট ড্রিঙ্কস পান করেন যাতে চিনি বেশি থাকে এবং 35 শতাংশ মানুষ চিপস এবং অন্যান্য ভাজাভুজি খাবার খান । এই প্রসঙ্গে শিশুদের খাদ্যাভ্যাস ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়ে ইটিভি ভারতের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করলেন শিশু মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সুজাতা রাজামানি ৷
প্রশ্ন: স্ট্রেস এবং জাঙ্কফুডের মধ্যে সম্পর্ক কী ?
উত্তর: মানসিক চাপ বেড়ে গেলে শরীর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখায় । মস্তিষ্ক কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার জন্য সংকেত দেয় । ফলে চিপস, চকলেট, পেস্ট্রিকেক, মিষ্টি খাওয়ার প্রবল তাগিদ দেখা দেয় । শিশু বা বাবা-মা কেউই এই অভ্যন্তরীণ ক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন নয় । বাচ্চাদের যদি এই ধরনের খাবার খাওয়ার প্রবণতা থাকে তার মানে বুঝতে হবে তারা মানসিক চাপে রয়েছে ।
প্র: সমস্ত বাবা-মা চান তাঁদের সন্তান ভালোভাবে লেখাপড়া করুক, তাই না ?
উ: মানসিক চাপ দুই ধরনের হতে পারে । প্রথমটি হল বাড়িতে বাবা-মায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব, যার প্রভাব শিশুদের উপর চাপ বাড়ায় । দ্বিতীয়টি হল ভালোভাবে পড়াশোনা করার চাপ । সবাই প্রথম হতে পারে না । প্রত্যেক ছাত্রের আলাদা আলাদা দক্ষতা থাকে । অভিভাবক ও স্কুল শিক্ষকদের এবিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং উৎসাহিত করতে হবে । শুধুমাত্র নম্বরের ক্ষেত্রেই নয়, গান, নাচ এবং খেলাধুলায়ও এই বিষয়গুলিকে গুরুত্ব দিতে হবে ৷ সব বাবা-মা চান তাঁদের সন্তান অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকুক । কিন্তু মনে রাখতে হবে শখ শিশুদের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে ৷ শিশুদের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলতে হবে ।
প্র: পিৎজ্জা এবং বার্গার এখন খাদ্যাভ্যাসের অংশ, তাই না ?
উ: কিছু বাবা-মা তাঁদের বাচ্চাদের স্ন্যাকস যেমন চিপস, বিস্কুট এবং চকলেট দেন । এই অভ্যাস ভালো নয় । তাঁদের সন্তানদের কী ধরনের খাবার দেওয়া উচিত সে বিষয়ে সচেতন থাকা দরকার । স্বাস্থ্যকর খাবারে অভ্যাস করাতে হবে । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দ্বারা ভারতীয় খাবারের মধ্যে ইডলিকে সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর প্রাতঃরাশ হিসাবে বিবেচনা করা হয় । এসব ছেড়ে আমরা ছুটছি নুডুলস আর গার্লিক ব্রেডের পেছনে ।
আরও পড়ুন: হালকা মানসিক চাপ মস্তিস্কের বিকাশে সাহায্য় করে, বলছে গবেষণা
প্র: শিশুদের উপর জাঙ্ক ফুডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী ?
উ: যেহেতু কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার সময় শরীরে প্রচুর পরিমাণে চর্বি গ্রহণ করে, তাই শৈশবকালীন স্থূলতার সম্ভাবনা থাকে । এর পাশাপাশি নানা সমস্যা দেখা দেয় যেমন, আত্ম-অবঞ্চনা এবং নেতিবাচক চিন্তা বৃদ্ধি পায় এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, মেয়েদের পিরিয়ড ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয় ৷