2020 সালে কোভিড এল । আর তা নিয়ে এল একটা নতুন চ্যালেঞ্জ, যা হল লকডাউন বা এমন কোনও জায়গা থেকে দূরে থাকতে হল যেটাকে ‘বাড়ি’ বলে উল্লেখ করা হয় ।এই সময়ে অতিরিক্ত কাজ করা চিকিৎসক ও সব সময় উদ্বেগে থাকা রোগী একটা কীভাবে যোগাযোগ করতে হবে, এই গুরুতর সমস্যার সমাধান খুঁজতে লাগল ।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা তৈরি হল । যেমন – লকডাউন, কারফিউ বা সিল করে দেওয়া ভবনে থাকার জন্য রোগীরা বাড়ির বাইরে বের হতে পারছিলেন না । অথবা তাঁদের সন্তানেরা, আত্মীয়রা বিদেশে আটকে পড়েছিলেন এবং ফিরতে পারেননি, তাই তাঁদের ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার মতো কেউ ছিলেন না । অথবা তাঁরা পরিযায়ী হিসেবে এই প্যানডেমিকের মধ্যে সুরক্ষিত থাকার জন্য বাড়িতে ফিরছিলেন । চিকিৎসকদের যেহেতু পিপিই কিট পরতে হচ্ছিল ও বহুস্তরের মাস্ক ব্যবহার করতে হচ্ছিল, তাই তাঁদের পক্ষেও পুরনো প্রেসক্রিপশন ও রেকর্ড খুঁজে পাওয়া কঠিন হচ্ছিল । আর একটা বড় সমস্যা ছিল, যা হল – রোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা এবং তাঁদের রোগের সঠিক অবস্থা বুঝতে পারা ।
প্রযুক্তি চিকিৎসকদের দ্রুত একাধিক উপায়ে যোগাযোগ স্থাপনে সাহায্য করে এবং রোগীদের কাছ থেকে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করার সুযোগ করে দেয় । বহু চিকিৎসক দ্রুত নিজস্ব ডোমেন সহ সিঙ্গেল পেজ ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলেন । সেখানে রোগীরা চিকিৎসককে কখন পাওয়া যাবে, অ্যাপোয়েন্টমেন্ট নেওয়ার পদ্ধতি এবং এর ফলে চিকিৎসকরা সেই তথ্যগুলি সরাসরি হাতে পেয়ে যাচ্ছেন, যেগুলি তাঁরা রোগীদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারেন । এটা সহজ ও কম খরচে ভার্চুয়াল ভিজিটিং কার্ড হয়ে যায় চিকিৎসকদের জন্য, যা সম্ভবত লাইভ আপডেটও দিতে থাকে ।
আরও পড়ুন : কোরোনার পর নতুন কর্মসংস্থান, ভূমিকা এবং কেরিয়ার; কর্মজগতের ভবিষ্যৎ
অন্য একটি কাজের মাধ্যমে প্রতিটি চিকিৎসকের কাজের পদ্ধতি বুঝতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসকের যোগাযোগ গড়ে তোলে ।
ভিডিয়ো কলিংয়ের জন্য আমরা চিকিৎসকদের সাহায্য করি । তাঁদের হোয়াটস অ্যাপ বিজনেস, জুম, ডুয়ো, স্কাইপ, গুগল মিট এবং জিও মিট এও অ্যাকাউন্ট তৈরি করে দিই । গুগল ড্রাইভ ও মাইক্রোসফট ওয়ান ড্রাইভ এর মাধ্যমে সুরক্ষিত ক্লাউড স্টোরেজ সলিউশন তৈরি করে সাহায্য করে দিই ।
ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থার সঙ্গে সড়গড় হতে চিকিৎসকরা বরাবরই খুব সমস্যায় পড়তেন । বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ‘ওয়ালেট’ কী, ইউপিআই এর সঙ্গে এর পার্থক্য কী এবং গুগল পে, পেটিএম, ভিম ইউপিআই ব্যবহারের সময় প্রতারণার হাত থেকে কীভাবে সুরক্ষিত থাকতে হবে, তা নিয়ে তাঁদের শিখিয়ে সাহায্য করেছি ।
রোগীদের জন্যও বিষয়টি খুব চ্যালেঞ্জের ছিল । কারণ, বিভিন্ন চিকিৎসকের তৈরি করা প্রোটোকল ও পদ্ধতি বোঝার প্রয়োজন ছিল । প্রযুক্তির সাহায্যে সহজ ও সহজে বোঝা যায় এমন ইনফোগ্রাফিক্স তৈরি করা হয়, যা চিকিৎসকরা তাঁদের রোগীদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারেন । অনেক ক্ষেত্রে ইউটিউব ভিডিয়ো তৈরি করা হয় রোগীদের সচেতনতার জন্য ।
পুরো পদ্ধতিটি প্রবাহিত করা হয়েছিল এবং রোগীর তথ্য সুরক্ষিত করার পাশাপাশি চিকিৎসকের মানসিক শান্তি নিশ্চিত করতে মেডিকো-লিগালের নিয়ম অনুযায়ী নিরাপদ হিসাবে তৈরি করা হয়েছিল ।
আরও পড়ুন : প্রবীণদের মধ্যে কোভিডের পুনরায় সংক্রমণ কম হলেও রয়েছে: ল্যান্সেট
ইতিমধ্যে স্থিতিশীল আর্কিটেকচারের কারণে চিকিৎসক এবং রোগীদের উভয়ের জন্য শেখার রেখা প্রতিদিন কমতে থাকে । তবুও কোভিড-19 এর সঙ্গে সম্পর্কিত অনিশ্চয়তা অব্যাহত রয়েছে । তৈরি করা সমাধানগুলির কোনওটিই অপ্রয়োজনীয় হিসেবে বিবেচিত হয়নি এবং এক বছর আগে যেমন ছিল, এখনও তেমন কার্যকর । সীমাবদ্ধতার দিক থেকে অনেক চিকিৎসক এই ‘ফিজিটাল’ সমাধানগুলিতে আগের চেয়ে বেশি নির্ভর করে চলেছেন এবং তারা আগে এগুলি ছাড়া কীভাবে কাজ করেছে তা কল্পনা করতে পারে না । দক্ষতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, রোগীদের স্বাচ্ছন্দ্য এবং সুবিধাগুলি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে । আর আমাদের সাধারণ জীবনযাত্রার মতো ত্রুটিযুক্ত হতে পারে, রোগীর চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা সংক্রান্ত পরিষবা যতটা সম্ভব মসৃণ করার জন্য প্রচেষ্টা করা হয় !
আরও তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন - dr.suraj@TechnoMedix.com