বছরের এই সময় যখন তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে, তখন ওয়ার্ক আউট তথা শরীরচর্চা করা ক্রমশ কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে । গরমের তাপের জেরে হওয়া ঘাম, ওয়ার্ক আউটকে ক্লান্তিকর করে তোলে এবং এর ফলে তার প্রভাব এসে পড়ে চুলের উপর । বিশেষ করে তাদের জন্য, যারা রোজ শরীরচর্চা করে । চুলে জমা ঘাম এবং নোংরা থেকে মুক্তি পেতে আমরা রোজ চুল ধোব কি না, এই সমস্যায় ভুগি । কারণ তেলতেলে, ঘর্মাক্ত, আলুথালু চুল কারওরই পছন্দ নয় ।
ওয়ার্কআউটের আগে
ওয়ার্কআউটের জন্য মানানসই, এমন হেয়ারস্টাইল বেছে নিন । সবসময় ওয়ার্কআউট সেশনের জন্য চুল সতেজ রাখুন এবং এমন হেয়ারস্টাইল বেছে নিন যা আপনার ওয়ার্কআউটের পরিকল্পনার সঙ্গে জুতসই হয় । রিল্যাক্সেশন প্রক্রিয়ায় বেশিরভাগ মানুষই বেছে নেন আলগা খোপা, যাতে তারা ধ্যানের সময় আরামদায়ক অবস্থায় থাকতে পারে । যদি কার্ডিও করেন তাহলে চুল এক জায়গায় আটকে থাকবে এমন হেয়ারস্টাইল যেমন ব্রেড কিংবা পনিটেল করতে পারেন । এতে চুল আপনার মুখ থেকে দূরে থাকবে যাতে আপনার ওয়ার্কআউট সেশন কোনও বাধা ছাড়াই চলতে পারে ।
চুলের সরঞ্জাম ব্যবহার করুন
ওয়ার্ক আউটের জন্য চুল সবসময় পরিষ্কারভাবে বেঁধে রাখবেন, যাতে তা মুখ থেকে দূরে থাকে । চুলের নানা ধরনের সাজ সরঞ্জাম ব্যবহার করতে পারেন । সোয়েটব্যান্ড, স্ক্রাঞ্চি ক্লিপস এবং হেয়ারব্যান্ড ব্যবহার করতে পারেন সেইসব উড়ে আসা চুলের জন্য যা আর্দ্রতার কারণে হয়ে থাকে । এগুলি চুলের স্টাইল বজায় রেখে, তাকে যথাস্থানে রাখতে সাহায্য করে ।
চুলের পারফিউম এবং শাইন স্প্রে সবথেকে ভাল
আগে যে কেশ-সুগন্ধি মিলত, তাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যালকোহল মেশানো থাকে, যা চুলে প্রয়োগ করলে চুল শুষ্ক হয়ে পড়তে পারে । হেয়ার পারফিউমকে এমনভাবে তৈরি করা হয়, যাতে তার ‘পয়েন্টেড’ অংশ, সহজে চুলে স্প্রে করে সুগন্ধ ছড়াতে পারে আর এতে চুল শুষ্কও হবে না । হেয়ার পারফিউমগুলি চুলকে সুগন্ধে ভরিয়ে তোলে এবং সেইভাবেই রেখে দেয় যখন আপনার সবথেকে বেশি এর প্রয়োজন হয় । শাইন স্প্রে আপনার চুলকে, হালকা পলিশ দিতে এবং দীর্ঘমেয়াদী মসৃণতা দিতে দারুণ কাজ করে ।
ওয়ার্কআউটের পরে
আপনার চুলের গোড়াকে রিফ্রেশ করুন শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনারের মাধ্যমে
ওয়ার্ক আউট সেশনের পরের কেশচর্চার মূল বিষয় হল চুলের গোড়াকে ‘রিফ্রেশ’ করা । আর এটা কোনওভাবেই জটিল হওয়া উচিত নয় । তাই ওয়ার্ক আউট অনুসারে চুল ধোওয়ার রুটিন তৈরি করুন, যার মধ্যে থাকবে একটি কোমল এবং ‘পিউরিফাইং’ শ্যাম্পু । চুলের যে সব অংশ পরিষ্কার করা কঠিন, যে অংশ অতিরিক্ত তেল এবং নোংরা জমে থাকে, তা সাফ করতে এটি সাহায্য করবে । এই ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল এবং স্ক্যাল্প থেকে সমস্ত নোংরা, ঘাম আর চটচটে পদার্থ দূর করে দেবে । ভাল করে দিনে দু’বার শ্যাম্পু করবেন । জলের তাপমাত্রা খুব বেশি ঠান্ডা বা খুব বেশি গরম যেন না হয় । ঈষদুষ্ণ থেকে ঠান্ডা জলই ভাল । সবসময় চুল শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনিং করুন । চুলে কন্ডিশনার ৩ থেকে ৫ মিনিট রাখুন । তারপর ঠান্ডা জলে চুল ধুয়ে নিন ।
চুলেরও টিএলসি দরকার
চুল বাঁধার জন্য ইলাস্টিক হেডব্যান্ড ব্যবহার করতে ইচ্ছা হতেই পারে কিন্তু আপনার চুলের আরও বেশি ভালবাসা এবং যত্ন দরকার । তাই চুল খোলা এবং আলগা রাখা উচিত এবং চুলকে ফিতে দিয়ে বা গোল চুল বাধার ব্যান্ড দিয়ে বাধা যেতে পারে যাতে চুল ছিড়ে যাওয়া এবং কোনওরকম জট বা ক্ষতি আটকানো যায় ।
হেয়ারড্রায়ারকে "না" বলুন
ভেজা চুল তোয়ালেতে জড়িয়ে স্বাভাবিকভাবে শুকিয়ে নিন । হেয়ারড্রায়ার কখনও ব্যবহার করবেন না কারণ তা চুলকে শুষ্ক করে দেয় । ফ্রিজ দূর করতে চুলে কয়েক ফোঁটা সেরাম মেখে নিতে ভুলবেন না । এতে চুলের জট কেটে যায়, চুল চকচক করে । তাই আপনি চুলের জট ছাড়ানোর জন্য এবং চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য সময় বের করে নিতেই পারেন ।