যে মহিলারা গর্ভাবস্থায় দিনে হাফ কাপ হলেও কফি খেয়েছেন, তাঁদের সদ্যোজাত সন্তানের আকার সামান্য হলে ছোটো হয় ৷ একটি নতুন গবেষণায় এই বিষয়টি লক্ষ্য করা গিয়েছে ৷ গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, দিনে প্রায় দু’কাপ কফি –অর্থাৎ 200 মিলিগ্রামের কম ক্যাফিন সেবন করেছেন যেসব মহিলারা, তাঁদের সন্তানদের আকার ও বডি মাস কমে যাচ্ছে ৷ এতে ভ্রূণের ঝুঁকি বাড়ছে বলেই মনে করছেন গবেষকরা ।
জন্মের সময় আকার ছোটো হলে শিশুদের ভবিষ্যতে ওবেসিটি, হৃদরোগ ও ডায়াবিটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায় । ইউনাইস কেনেডি শ্রাইভার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্টের গবেষক ক্যাথরিন এল গ্রাঞ্জ বলেন, “যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা আরও জানতে পারছি, তার আগে পর্যন্ত আমাদের গবেষণার ফলাফল বলছে, গর্ভাবস্থায় ক্যাফিনযুক্ত পানীয় সীমিত অথবা এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ ।”
জেএএমএ নেটওয়ার্ক ওপেনে প্রকাশিত এই গবেষণায় গবেষকরা জাতিগত ও জনগোষ্ঠীগতভাবে আলাদা দুই হাজার মহিলার তথ্য সংগ্রহ করেন 12টি স্বাস্থ্যপরিষেবা সংস্থা থেকে ৷ যেখানে 8 থেকে 13 সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বাদের নাম নথিভূক্ত ছিল । 10 থেকে 13 সপ্তাহ পর্যন্ত সেই মহিলাদের থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং দেখা হয় যে, রক্তে ক্যাফিন এবং শরীরে ক্যাফিন ভেঙে তৈরি হওয়া প্যারাজ্যানথিন রয়েছে কি না ।
আরও পড়ুন, পুরুষ ও নারীর মস্তিষ্কের ফারাক কোথায়, দেখাল গবেষণা
যাঁদের রক্তে নূন্যতম বা শূন্য ক্যাফিনের মাত্রা, সেই মহিলাদের তুলনায় বেশি ক্যাফিন রয়েছে এমন মহিলাদের সদ্যোজাত সন্তানরা তুলনায় গড়ে 84 গ্রাম (প্রায় তিন আউন্স) কম ওজনের, দৈর্ঘ্যে ০.44 সেন্টিমিটার (প্রায় 0.17 ইঞ্চি) ছোটো এবং পরিধিতে 0.28 সেন্টিমিটার (প্রায় 0.11 ইঞ্চি) কম ।
আবার যে মহিলারা দিনে 50 মিলিগ্রাম ক্যাফিন সেবন করেছেন (হাফ কাপ কফির সমান), তাঁদের সন্তানরা ক্যাফিনহীন মায়েদের সন্তানদের থেকে গড়ে 66 গ্রাম (প্রায় 2.3 আউন্স) হালকা । একইরকম ভাবে পরিধিতেও গড়ে 0.32 সেন্টিমিটার (প্রায় 0.13 ইঞ্চি) কম ।
গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন, ক্যাফিন সম্ভবত জরায়ু ও প্ল্যাসেন্টার রক্তবাহকগুলিকে সঙ্কুচিত করে দেয়, যার জেরে ভ্রূণে রক্ত সরবরাহ ব্যহত হয় এবং বৃদ্ধিতে বাধা পড়ে । পাশাপাশি, বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে, ক্যাফিন ভ্রূণের স্ট্রেস হরমোনের কাজকর্মের ব্যাঘাত ঘটায়, যার জেরে জন্মের পরে দ্রুত ওজন বেড়ে যাওয়া এবং ভবিষ্যতে ওবেসিটি, হদরোগ এবং ডায়াবিটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায় ।