ETV Bharat / sukhibhava

হিংয়ের আয়ুর্বেদিক গুণাগুণ - সুখীভব

আগের মতো এখনও একাধিক আয়ুর্বেদিক জিনিস তৈরিতে হিংয়ের প্রয়োগ হয় । হিংয়ের গন্ধ তীব্র এবং কটূ । তাই এটিকে স্নায়ুতন্ত্রের জন্য উদ্দীপক হিসাবে ব্যবহার করা হয় ।

হিং
হিং
author img

By

Published : Jul 8, 2020, 12:25 PM IST

হিং হল এমন একটি মশলা, যা আমরা বহু বছর ধরে আমাদের হেঁশেলে ব্যবহার করে আসছি । কিন্তু এর যে কত গুণাগুণ আছে, তা সম্পর্কে অনেকেই অবহিত নন । আগের মতো এখনও একাধিক আয়ুর্বেদিক দ্রব্য তৈরিতে এর প্রয়োগ হয় । পুনের কল্পায়ূ হেলথ কেয়ার ক্লিনিক, আয়ুর্বেদিক ফার্মাসিউটিক্যালসের MD ডাঃ কল্পেশ রমেশলাল বাফানা বলেছেন, "হিং তথা ফেরুলা ফোটিডা দু’রকম হয় । একটার রং কালো, যার তীব্র গন্ধ আছে । আর একটার রং সাদা, যা ওষুধে ব্যবহৃত হয় ।"

ডাঃ কল্পেশের মতে, হিংয়ের নিম্নলিখিত গুণাগুণ রয়েছে :

1. নার্ভাস সিস্টেম

  • হিংয়ের গন্ধ তীব্র এবং কটূ । তাই এটিকে স্নায়ুতন্ত্রের জন্য উদ্দীপক হিসাবে ব্যবহার করা হয় । নার্ভাস সিস্টেমকে উদ্দীপিত করতে এটি ব্যবহৃত হয় ।
  • হিং বেদনানাশক । তাই গাঁটের ব্যথা অথবা মাংসপেশীর ব্যথা নিরাময়ে, ওই অংশে মালিশ করার তেলগুলির অন্যতম সক্রিয় উপাদান হল হিং । যেহেতু এটি উষ্ণতাবর্ধক, তাই ব্যথা কমাতে, ব্যথার উপশমে সাহায্য করে ।
  • বহু আয়ুর্বেদিক দ্রব্যে হিংকে 'অ্যান্টিকনসালভ্যান্ট' তথা 'খিঁচুনি-রোধক' হিসাবে ব্যবহার করা হয় । অতর্কিতে অসুস্থতার মুখে পড়লে, তা প্রতিরোধে সাহায্য করে । তাছাড়া এটি প্যারালিসিস, ফেশিয়াল পালসি, সায়াটিকা, এপিলেপসি প্রভৃতি নিরাময়েও উপকারী ।

2. রেসপিরেটরি সিস্টেম

শ্বাসযন্ত্রের অতি সাধারণ রোগ-ব্যাধির তালিকায় পড়ে ঠান্ডা লাগা, সর্দি এবং টানা কাশি । এই রকম পরিস্থিতিতে আমাদের ফুসফুস এক ধরনের বাধার মুখে পড়ে, যা প্রকৃতিতে আঠালো । একে ফেলগাম বলে । তাই, শ্বাসযন্ত্রে আটকে থাকা এই ফেলগামকে দূর করতে হিং খুবই উপকারী । কারণ এটি অত্যন্ত উষ্ণ ক্ষমতাসম্পন্ন ঔষধি উপাদান ।

3. সারকুলেটরি সিস্টেম

পেরিকার্ডিয়াল ইফিউশন নামে এক ধরনের পরিস্থিতিতে, তরল পদার্থ আমাদের হৃৎপিণ্ডের চারপাশে এসে জমে থাকে । এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হিং ভালো কাজ করে । যাদের হৃৎপিণ্ড দুর্বল বা যাদের হৃদগতি ধীর লয়ের, তাদের ক্ষেত্রেও হিং উপকারী ।

4. ডাইজেস্টিভ সিস্টেম

এর তীব্র, ঝাঁঝালো স্বাদ এবং উষ্ণ প্রকৃতির জন্য খিদে বাড়াতে হিং খুবই ভালো । খিদে বাড়ানোর পাশাপাশি এটি ভারী খাবার হজম করতেও সাহায্য করে । যাদের পেট সহজে পরিষ্কার হয় না, তাদের ক্ষেত্রে হিং সমস্যা মেটাবে । তাছাড়া পেটে ব্যথা, গ্যাস কিংবা পেটফাঁপা সারাতেও হিং কাজ দেয় ।

5. ইউরিনারি সিস্টেম

ডাইইউরেটিক হিসাবে হিংয়ের কোনও জুড়ি নেই । এতে মূত্রের গতি সচল থাকে এবং কিডনিতে মূত্রের পরিস্রাবণের গতিও বাড়ে, যা 'ইউরিনারি স্টোনস' তথা মূত্রথলিতে জমে থাকা পাথর দূর করতে সাহায্য করে । তাছাড়া ব্ল্যাডারে মূত্র জমে থাকার ফলে যে ব্যথা অনুভূত হয়, এটি তাকেও প্রশমিত করে ।

6. রিপ্রোডাকটিভ সিস্টেম

হিং কামোদ্দীপক । এটি মানুষের যৌন তাড়না বৃদ্ধি করে । তাই বন্ধ্যাত্ব দূরীকরণে এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে 'ওভিউলেশন'-এ সাহায্য করে । প্রসবোত্তর মহিলাদের জরায়ু পরিষ্কার রাখতেও এটি উপকারী ।

ডাঃ কল্পেশের মতে, "আয়ুর্বেদে হিংয়ের নানা রকম ব্যবহারের উল্লেখ আছে । ভালো উদ্দীপক ছাড়াও এটি শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে এবং শরীর থেকে নানা ধরনের ক্ষরণের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ।" তবে যদিও, হিংয়ের গুণের কোনও শেষ নেই, তবু অতিরিক্ত হিং সেবনে হিতে বিপরীত হতে পারে । তাই হয় স্বল্প পরিমাণে হিং সেবন করা উচিত অথবা কোনও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে হিং গ্রহণ করা উচিত ।

হিং হল এমন একটি মশলা, যা আমরা বহু বছর ধরে আমাদের হেঁশেলে ব্যবহার করে আসছি । কিন্তু এর যে কত গুণাগুণ আছে, তা সম্পর্কে অনেকেই অবহিত নন । আগের মতো এখনও একাধিক আয়ুর্বেদিক দ্রব্য তৈরিতে এর প্রয়োগ হয় । পুনের কল্পায়ূ হেলথ কেয়ার ক্লিনিক, আয়ুর্বেদিক ফার্মাসিউটিক্যালসের MD ডাঃ কল্পেশ রমেশলাল বাফানা বলেছেন, "হিং তথা ফেরুলা ফোটিডা দু’রকম হয় । একটার রং কালো, যার তীব্র গন্ধ আছে । আর একটার রং সাদা, যা ওষুধে ব্যবহৃত হয় ।"

ডাঃ কল্পেশের মতে, হিংয়ের নিম্নলিখিত গুণাগুণ রয়েছে :

1. নার্ভাস সিস্টেম

  • হিংয়ের গন্ধ তীব্র এবং কটূ । তাই এটিকে স্নায়ুতন্ত্রের জন্য উদ্দীপক হিসাবে ব্যবহার করা হয় । নার্ভাস সিস্টেমকে উদ্দীপিত করতে এটি ব্যবহৃত হয় ।
  • হিং বেদনানাশক । তাই গাঁটের ব্যথা অথবা মাংসপেশীর ব্যথা নিরাময়ে, ওই অংশে মালিশ করার তেলগুলির অন্যতম সক্রিয় উপাদান হল হিং । যেহেতু এটি উষ্ণতাবর্ধক, তাই ব্যথা কমাতে, ব্যথার উপশমে সাহায্য করে ।
  • বহু আয়ুর্বেদিক দ্রব্যে হিংকে 'অ্যান্টিকনসালভ্যান্ট' তথা 'খিঁচুনি-রোধক' হিসাবে ব্যবহার করা হয় । অতর্কিতে অসুস্থতার মুখে পড়লে, তা প্রতিরোধে সাহায্য করে । তাছাড়া এটি প্যারালিসিস, ফেশিয়াল পালসি, সায়াটিকা, এপিলেপসি প্রভৃতি নিরাময়েও উপকারী ।

2. রেসপিরেটরি সিস্টেম

শ্বাসযন্ত্রের অতি সাধারণ রোগ-ব্যাধির তালিকায় পড়ে ঠান্ডা লাগা, সর্দি এবং টানা কাশি । এই রকম পরিস্থিতিতে আমাদের ফুসফুস এক ধরনের বাধার মুখে পড়ে, যা প্রকৃতিতে আঠালো । একে ফেলগাম বলে । তাই, শ্বাসযন্ত্রে আটকে থাকা এই ফেলগামকে দূর করতে হিং খুবই উপকারী । কারণ এটি অত্যন্ত উষ্ণ ক্ষমতাসম্পন্ন ঔষধি উপাদান ।

3. সারকুলেটরি সিস্টেম

পেরিকার্ডিয়াল ইফিউশন নামে এক ধরনের পরিস্থিতিতে, তরল পদার্থ আমাদের হৃৎপিণ্ডের চারপাশে এসে জমে থাকে । এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হিং ভালো কাজ করে । যাদের হৃৎপিণ্ড দুর্বল বা যাদের হৃদগতি ধীর লয়ের, তাদের ক্ষেত্রেও হিং উপকারী ।

4. ডাইজেস্টিভ সিস্টেম

এর তীব্র, ঝাঁঝালো স্বাদ এবং উষ্ণ প্রকৃতির জন্য খিদে বাড়াতে হিং খুবই ভালো । খিদে বাড়ানোর পাশাপাশি এটি ভারী খাবার হজম করতেও সাহায্য করে । যাদের পেট সহজে পরিষ্কার হয় না, তাদের ক্ষেত্রে হিং সমস্যা মেটাবে । তাছাড়া পেটে ব্যথা, গ্যাস কিংবা পেটফাঁপা সারাতেও হিং কাজ দেয় ।

5. ইউরিনারি সিস্টেম

ডাইইউরেটিক হিসাবে হিংয়ের কোনও জুড়ি নেই । এতে মূত্রের গতি সচল থাকে এবং কিডনিতে মূত্রের পরিস্রাবণের গতিও বাড়ে, যা 'ইউরিনারি স্টোনস' তথা মূত্রথলিতে জমে থাকা পাথর দূর করতে সাহায্য করে । তাছাড়া ব্ল্যাডারে মূত্র জমে থাকার ফলে যে ব্যথা অনুভূত হয়, এটি তাকেও প্রশমিত করে ।

6. রিপ্রোডাকটিভ সিস্টেম

হিং কামোদ্দীপক । এটি মানুষের যৌন তাড়না বৃদ্ধি করে । তাই বন্ধ্যাত্ব দূরীকরণে এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে 'ওভিউলেশন'-এ সাহায্য করে । প্রসবোত্তর মহিলাদের জরায়ু পরিষ্কার রাখতেও এটি উপকারী ।

ডাঃ কল্পেশের মতে, "আয়ুর্বেদে হিংয়ের নানা রকম ব্যবহারের উল্লেখ আছে । ভালো উদ্দীপক ছাড়াও এটি শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে এবং শরীর থেকে নানা ধরনের ক্ষরণের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ।" তবে যদিও, হিংয়ের গুণের কোনও শেষ নেই, তবু অতিরিক্ত হিং সেবনে হিতে বিপরীত হতে পারে । তাই হয় স্বল্প পরিমাণে হিং সেবন করা উচিত অথবা কোনও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে হিং গ্রহণ করা উচিত ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.