রায়গঞ্জ, 6 নভেম্বর : পা দিয়েই চন্দন বাটা ৷ পা দিয়েই ভাইদের জন্য মঙ্গল প্রদীপ জ্বালানো ৷ বছরের পর বছর ধরে এভাবেই ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার আয়োজন সারেন উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের রাহাপুকুরের বাসিন্দা শোভা মজুমদার ৷ পেশায় শিক্ষিকা শোভার দু’টি হাতই অকেজো ৷ এই প্রতিবন্ধকতা নিয়েই জন্ম হয়েছে তাঁর ৷ তবে তা শোভাকে তাঁর লক্ষ্যপূরণ থেকে আটকাতে পারেনি ৷ রোজের জীবনের সমস্ত চ্যালেঞ্জই তিনি পার করেছেন অনায়াস দক্ষতায় ৷ তাই ভাইদের দীর্ঘায়ু কামনা করে ভাইফোঁটার আচার পালনও শোভার কাছে কোনও সমস্যা নয় ৷
আরও পড়ুন : Bhai Phonta Special Misti : ডাব মালাই থেকে কাজুবাবু, ভাইফোঁটা উপলক্ষ্যে চাহিদা বিশেষ মিষ্টির
শনিবার যাবতীয় রীতিনীতি মেনেই ভাইদের কপালে ফোঁটা দিলেন শোভা ৷ বাঁ হাতের কড়ে আঙুলটি নাড়াতে কষ্ট হয় তাঁর ৷ তবে শোভার মনের জোরের কাছে সেই কষ্ট তুচ্ছ ৷ তাই ভাইফোঁটার যাবতীয় জোগাড় সেরে আর পাঁচজন দিদি বা বোনের মতোই একে একে ভাইদের কপালে চন্দনের মঙ্গলফোঁটা এঁকে দিলেন তিনি ৷ একমাত্র দিদির হাতে ফোঁটা নিতে পেরে খুশি ভাইয়েরাও ৷
আরও পড়ুন : Bhai Phonta Special Treat : ভাইফোঁটায় বাড়িতেই বানান কমলার ক্ষীর, রইল রেসিপি
শোভা ও তাঁর পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ছোট্ট বয়সেই নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করতে শিখে গিয়েছিলেন শোভা ৷ দুই হাত অকেজো হওয়ায় দুই পা দিয়েই যাবতীয় কাজ করতেন তিনি ৷ পড়াশোনায় হাতে খড়ি (বলা ভালো পায়ে খড়ি) থেকে অন্যান্য দৈনন্দিন কাজ, সবই নিজের মতো করে সামলেছেন শোভা ৷ সেই লড়াই আজও জারি আছে ৷ স্নাতক হওয়ার পর নিজের গ্রামের রাঙাপুকুর প্রাথমিক স্কুলেই শিক্ষিকার চাকরি পান শোভা ৷ আজ তিনি স্বাবলম্বী ৷ কর্মব্যস্ত একজন মানুষ ৷ তারই মধ্যে একটা দিন কাটল উৎসবের আমেজে ৷