রায়গঞ্জ, 14 জুন : বৃদ্ধা মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে । বাড়ি থেকে বেরিয়ে মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিলেন বৃদ্ধা । পরে প্রতিবেশী এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ছেলেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে । রায়গঞ্জের কমলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ঘটনা । বৃদ্ধা মা ছেলের অত্যাচারের ভয়ে বাড়িতে ফিরতে চাইছেন না ।
রায়গঞ্জের কাছে কর্ণজোড়ায় বৃদ্ধা প্রিয়বালা দাস তাঁঁর ছেলে হরিপদ দাস এবং বউমার সঙ্গে বসবাস করেন । স্থানীয়দের অভিযোগ বৃদ্ধার নামে রাজ্য সরকারের প্রকল্পে ঘর তৈরি করে দেওয়া হয় । সেই ঘর ভেঙে বৃদ্ধার ছেলে নতুনভাবে বাড়ি তৈরি করেছেন । কিন্তু মায়ের জন্য আলাদা করে থাকার ব্যবস্থা করেননি । বরং বাড়ির পিছনে মাকে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ হরিপদ দাসের বিরুদ্ধে । পাশাপাশি ওই মহিলার বার্ধক্য ভাতা কেড়ে নিতেন বলে ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ । স্থানীয় সূত্রে খবর, গত বৃহস্পতিবার ছেলে, বউমা এবং নাতি ওই বৃদ্ধাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় । পাশে মেয়ে পুতুল রায়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন বৃদ্ধা । গত শনিবার ছেলের বিরুদ্ধে কর্ণজোড়া ফাঁড়িতে অভিযোগ জানান তিনি । অভিযোগ পেয়ে আজ হরিপদ দাসকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ । তবে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান, স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবারের বাকি সদস্যদের দাবি, বিষয়টি মিটিয়ে নিয়ে আবার আগের মতো ওই বৃদ্ধাকে বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক ।
এই বিষয়ে বৃদ্ধা প্রিয়বালা দাস বলেন, “আমার ছেলে, নাতি, বউমা আমার উপর অত্যাচার করে । আমাকে ঘরে থাকতে দেয়নি । প্রায় জঙ্গলে পরিণত হওয়া জায়গায় একটি টিনের ঘর তৈরি করে দিয়েছে । যেখানে একটি শৌচালয় নেই । আমার বার্ধক্য ভাতার টাকা পর্যন্ত ছেলে কেড়ে নেয় । আমাকে ঠিকমতো খেতে দেয় না ছেলে । আমি আর না পেরে শেষ পর্যন্ত মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছি । আমি আর বাড়ি ফিরে যেতে চাই না ।”
যদিও ছেলে হরিপদ দাসের দাবি, “আমি আমার মাকে যথেষ্ট দেখাশোনা করি । কিন্তু আমার মা নতুন ঘরে থাকতে চায় না । পুরনো ঘরে তিনি থাকতে পছন্দ করেন । খাবার আমরা যা খাই তাই তাঁঁকে দেওয়া হয় । আমার আত্মীয়রা আমার সঙ্গে শত্রুতা করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে ।” কমলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান প্রশান্ত কুমার দাস বলেন, “আমরা জানি এই বাড়িতে ছেলে তাঁঁর মাকে অত্যাচার করে । বাড়ি থেকে বার করে দিয়েছিল । আমরা এই বিষয়ে দু'পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করছি ।”