রায়গঞ্জ, 7 সেপ্টেম্বর: ফের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের (Swasthya Sathi Card) পরিষেবা নিয়ে টাল বাহানার অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়াল নার্সিংহোম চত্বরে । কাঠগড়ায় রায়গঞ্জ শহরের উত্তর কলেজপাড়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোম । রোগীকে ওটিতে বসিয়ে অস্ত্রোপচারের আগের মুহূর্তে অসহায়তার সুযোগ নিয়ে টাকার জন্য চাপ সৃষ্টির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন পরিবারের লোকেরা । যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে পালটা স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের পরিষেবাগত পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ (Nursing Home) ।
জানা গিয়েছে, রায়গঞ্জ থানার ভাতঘড়া এলাকার বাসিন্দা মুক্তিবালা দাসের গলব্লাডারে সম্প্রতি পাথর ধরা পরে । তাঁর চিকিৎসা করছিলেন ডা. কালিশঙ্কর ভট্টাচার্য । ডাক্তারের নির্দেশে মঙ্গলবার সকালে ওই নার্সিংহোমে মাকে ভর্তি করেন গোপাল দাস । তিনি জানান, শুরুতেই ডাক্তারের সঙ্গে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সহায়তায় অস্ত্রোপচারের কথা বলেছিলেন । ডাক্তার কালিশঙ্কর তাঁকে এ বিষয়ে আশ্বস্তও করেছিলেন বলে দাবি তাঁর । গোপাল আরও দাবি করেন, এরই মধ্যে হঠাৎই এদিন সন্ধ্যায় তাঁর মাকে অস্ত্রোপচারের জন্য ওটিতে নিয়ে যাওয়া হয় । এরপরই শুরু হয় টালবাহানা । অভিযোগ, অস্ত্রোপচারের প্রাকমুহূর্তে ওটিতে রোগীকে বসিয়ে রেখে স্বাস্থ্যসাথী পরিষেবা বাতিল করে 20 হাজার টাকা চায় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ।
গোপালের অভিযোগ, তাঁর কাছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে প্রায় 17 হাজার টাকা কেটে নেওয়ার মেসেজ আসলেও তা মানতে নারাজ নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্যসাথীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী । এ দিকে টাকা দিতে না-পারায় অসহায় বয়স্ক ওই রোগীকে ওটি থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ । এরপর শুরু হয় বাগবিতণ্ডা । চূড়ান্ত হেনস্থার অভিযোগ তুলে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন রোগীর ছেলে ।
এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ক্রমশই বাড়তে থাকে । পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ছুটে আসে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ । অন্যদিকে এ বিষয়ে নার্সিংহোমের সহকারী ম্যানেজার বাবলু সিং অবশ্য হেনস্থার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন । তাঁর পালটা দাবি, এই রোগীর স্বাস্থ্যসাথী পরিষেবার অনুমতি না-মেলায় অস্ত্রোপচার করা যায়নি। এর জন্য অবশ্যই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাঁধেই দায় চাপিয়েছেন বাবলু (Nursing home accused of pressuring patients family for money despite having Swasthya Sathi Card) ।
আরও পড়ুন: মেলেনি স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের পরিষেবা, চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুমুখী নাবালক
প্রসঙ্গত, রাজ্যের মানুষকে বিনে পয়সায় চটজলদি স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় । কিন্তু এক্ষেত্রে একাধিকবার এ বিষয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে বিভিন্ন বেসরকারি নার্সিংহোম । যা নিয়ে অবশ্যই সরব হয়েছেন সর্বস্তরের সাধারণ মানুষজন ।