রায়গঞ্জ, 20 জুলাই: পাখিদের কিচিরমিচির থাকলেও, পাখিদের আকাল। বর্ষা দেরিতে আসায় পাখিরাও আসতে সময় নিচ্ছে। রায়গঞ্জের কুলিক পাখিরালয় তাই সময় পেরোলেও পাখিদের অপেক্ষায়। প্রতি বছরই মে-জুন মাসেই কুলিক বনাঞ্চল পাখিতে ভরে যায়। সেখানে জুলাই প্রায় শেষের পথে, অথচ সেভাবে ভিড় জমায়নি পাখিরা । যা চিন্তার কারণ বলেই মনে করছেন পরিবেশপ্রমীরা । রায়গঞ্জের পরিবেশ ও পাখিপ্রেমী গৌতম তান্তিয়া জানাচ্ছেন, বর্ষা দেরিতে আসায় পাখিদের ভিড় কমেছে । আশঙ্কা, এ বছর কুলিক পাখিরালয় পাখির সমাবেশ কম হবে । যদিও পাখির আগমন বেশি না কম তা বোঝা যাবে পাখি গণনার পরই বলে জানাচ্ছে বন দফতর।
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ শহরের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কুলিক পাখিরালয়। প্রতিবছর হাজার হাজার কিলোমিটার থেকে পরিযায়ী পাখিরা এসে ভিড় জমায় কুলিক পাখিরালয়ে । রঙিন পাখিতে ঢেকে থাকে কুলিক বনাঞ্চল ৷ বৃহৎ এই বনাদি রায়গঞ্জ থেকে প্রায় 3 কিলোমিটার দূরে 34 নং জাতীয় সড়কের উপর অবস্থিত ৷ সোহারই, ভট্টদিঘি ও আব্দুলঘাটা- এই তিনটি মৌজার প্রায় 130 হেক্টর জায়গা জুড়ে গড়ে উঠেছে কুলিক পক্ষীনিবাসটি। উত্তর-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে জুন মাসের শেষ থেকে মূলত ইগ্রেট, কর্মোর্যান্ট, নাইট হেরন ও ওপেন বিল স্টর্ক প্রজাতির পাখিরা কুলিকে ভিড় জমায় ৷ তথ্য বলছে, কুলিক পাখিরালয় পরিযায়ী পাখি আগমনের নিরিখে এশিয়ার মধ্যে অন্যতম ৷
এছাড়াও লিমকা বুক অফ রেকর্ডসেও প্রথমে জায়গা করে নিয়েছে এই পক্ষীনিবাস। এবার সেই পাখিরালয়ে পাখির আকাল ঘিরে আশঙ্কা থাকছে ৷ তবে, বনবিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, পাখি কম এলেও তাদের পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ বনবিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, গত বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই পক্ষীনিবাসে প্রায় 99,393 পাখি এসেছিল। বিভাগীয় বনাধিকারিক দাওয়া এস. শেরপা জানিয়েছেন, এ বছর বৃষ্টি দেরিতে শুরু হওয়ায় পাখি আসতে একটু দেরি হয়েছে। তবে পাখিদের যাতে কোনরকম অসুবিধা না হয় তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অগস্টে পাখি গণনার কাজ শুরু হবে। তারপরই বোঝা যাবে এ-বছর কত পাখি এসেছে।
আরও পড়ুন:শুভেন্দুর রক্ষাকবচে চিড় ! হাইকোর্টের নির্দেশে এফআইয়ার করে ব্যবস্থা নিতে পারবে পুলিশ
বর্ষা শুরু হতেই কুলিক পাখিরালয়ে পর্যটকদের ভিড় চোখে পড়ার মতো । সবুজ বনাদির মাঝে পাখির কোলাহল উপভোগ করছেন পর্যটকরা । দেশি-বিদেশি পাখি ঘেরা কুলিক । পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে সেখানে দেশি ও বিদেশি মাছের 2টি পৃথক অ্যাকোরিয়ামও আছে । এছাড়াও পক্ষীনিবাসকে আকর্ষণীয় করতে সেখানে রয়েছে অ্যাভিয়ারি বা মাইক্রো বনাঞ্চল । যেখানে প্রজনন প্রক্রিয়ায় ফিন্স, ককটেল, জাভা সহ নানান প্রজাতির পাখি। তাই, কুলিক পাখিরালয় ঘিরে নানা ভাবনায় বনবিভাগ । তার মধ্যেই, কাঁটা পাখির সংখ্যা কমে যাওয়ার আশঙ্কা ।