রায়গঞ্জ, 12 এপ্রিল : কোরোনা ভাইরাস মোকাবিলায় একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার ৷ রায়গঞ্জে রাজ্যের একমাত্র সরকারি মূক ও বধির চিলড্রেন হোম সূর্যোদয় । সেখানের ছেলে-মেয়েদের জন্য সরকারি নিয়ম অনুযায়ী মাক্স, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহারের পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতার উপর পুরোপুরি জোর দেওয়া হয়েছে । জীবাণুমুক্ত করতে প্রত্যেকটি জায়গাকে বারবার জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে । পাশাপাশি ছেলেমেয়েদের বিছানাপত্র রোদে শুকিয়ে জীবাণুমুক্ত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ । কোনওভাবেই যাতে ওই শিশুদের উপর কোরোনার প্রভাব না পড়ে, প্রচেষ্টায় তৎপর কর্তৃপক্ষ ।
রায়গঞ্জে কর্ণজোড়ায় জেলাশাসকের ভবনের ঠিক পাশেই রয়েছে সূর্যোদয় মূক ও বধির শিশুদের হোম । ছেলে-মেয়ে উভয়েরই থাকার ব্যবস্থা রয়েছে এই হোমে । বর্তমানে মোট 61 জন রয়েছে এখানে । যার মধ্যে 49 জন ছেলে 12 জন মেয়ে । ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথক পৃথক থাকার বন্দোবস্তও রয়েছে । শিশু কল্যাণ সমিতির তরফে এই হোমকে লাগাতার নজরে রাখা হয় । কোনওভাবে হারিয়ে যাওয়া শিশুদের আদালতের নির্দেশ মাফিক এই হোমে রাখার বন্দোবস্ত করা হয় । হোমে যাওয়া-আসার উপরও রয়েছে নানা নিষেধাজ্ঞা । বাইরের কয়েকজন কেয়ারটেকারের সাহায্যে পুরো হোমের কাজ চলে ।
কোরোনা ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়তেই হোমের প্রত্যেকটি জায়গাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হচ্ছে । এক ঘণ্টা পর হাত ধোয়ার জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত স্যানিটাইজ়ার । প্রত্যেকটি আবাসিককে দেওয়া হয়েছে মাস্ক। শুধুমাত্র তাই নয় প্রতিদিন এই হোমের আবাসিক ছেলে ও মেয়েদের জামা কাপড় ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে । ব্যবহৃত বিছানাপত্র , মশারি . চাদর ও অন্যান্য সামগ্রী প্রতিদিনই রোদে রেখে জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে । মাক্সও ধুয়ে রোদে শুকিয়ে জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে ।
এছাড়াও যে কেয়ারটেকারা বাইরে থেকে হোমে আসছেন, তাদের জন্য রয়েছে একাধিক নিষেধাজ্ঞা । বাইরে থেকে পরে আসা জামাকাপড় ফেলে নতুন জামাকাপড় পরে হোমে প্রবেশ করতে হয় । নিজেকেও পুরোপুরিভাবে জীবাণুমুক্ত করতে হয় ৷ ছেলে-মেয়েদের থেকেও নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখার নির্দেশ পালন করে তারা । প্রতিটি মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের একে অপরের থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতেও লাগাতার নির্দেশ দিচ্ছেন কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা । সম্প্রতি দমকল বাহিনী দিয়ে হোমের সম্পূর্ণ এলাকাকে স্যানিটাইজ় করার কাজ সেরেছেন হোম কর্তৃপক্ষ ।
এবিষয়ে সূর্যোদয় হোমের প্রিন্সিপাল পার্থসারথি দাস বলেন, " আমরা সরকারি নির্দেশ মাফিক সমস্ত ধরনের সর্তকতা অবলম্বন করছি ৷ মাক্স, স্যানিটাইজ়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । এছাড়াও তাদের বিছানাগুলোও সূর্যালোকের নিচে রেখে জীবাণুমুক্ত করার প্রয়াস চলছে । " এবিষয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলা শিশু কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান অসীম রায় বলেন, " সরকারি নির্দেশ মাফিক আমরা সূর্যোদয় চিলড্রেন হোমে ছেলেমেয়েদের সুরক্ষিত রাখার সমস্ত ধরনের ব্যবস্থা করেছি । বাইরে থেকে যাঁরা কাজ করতে হোমে আসেন ৷ তাঁদেরকেও একাধিক সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে । "