রায়গঞ্জ, 16 সেপ্টেম্বর: শারদোৎসবে (Durga Puja 2022) প্রতিমা শিল্পীদের কাছে যত বেশি বায়না আসে, ততই লাভ ৷ কিন্তু, এই লাভের পাশাপাশি একটা বড় ক্ষতিও হচ্ছে প্রতিমা শিল্পীদের ৷ আর তা শুধু শারদোৎসবে সময় নয় ৷ সারা বছর ধরেই ৷ তা হল শারীরিক ক্ষতি ৷ বিভিন্ন কেমিক্যাল ও ধাতব পদার্থ দিয়ে তৈরি রঙের ব্যবহারে শারীরিক ক্ষতি হচ্ছে প্রতিমা শিল্পীদের (Paints Used in Idols Cause Health Issues) ৷ এমনটাই জানালেন রায়গঞ্জ কুমোরটুলির মৃৎশিল্পী ভানু পাল ৷
শিল্পী ভানু পাল জানান, বর্তমানে প্রতিমা তৈরির জন্য যে সব রং ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলি সবই ক্ষতিকারক কেমিক্যাল ও ধাতব পদার্থ দিয়ে তৈরি ৷ রং করার সময় সেই রং প্রশ্বাসের সঙ্গে শরীরের ভিতরে প্রবেশ করছে ৷ সঙ্গে প্রবেশ করছে সেই সব কেমিক্যাল ও ধাতব পদার্থ ৷ যা ফুসফুসের ক্ষতি করছে প্রতিমা শিল্পীদের ৷ এই পরিস্থিতিতে আগেকার ভেষজ রং সবচেয়ে ভালো ছিল বলে জানাচ্ছেন ভানু পাল ৷
কিন্তু, কীভাবে সেগুলি শ্বাসনালি দিয়ে শরীরে যাচ্ছে ? ভানু পাল জানান, বড় বড় প্রতিমা তৈরির ক্ষেত্রে, বিশেষ করে দুর্গা প্রতিমা তৈরির ক্ষেত্রে রং স্প্রে করতে হয় ৷ তা না-হলে দ্রুত প্রতিমা তৈরি করা সম্ভব নয় ৷ কারণ, বর্তমানে পুজোর সংখ্যা বেড়েছে আর সেই সঙ্গে বেড়েছে প্রতিমার বায়না ৷ তাই দ্রুত কাজ করতে রং স্প্রে করতে হয় ৷ আর তখনই নাক-মুখ দিয়ে রং শিল্পীদের শরীরের ঢুকে যাচ্ছে ৷
আরও পড়ুন: বঙ্গভঙ্গের যন্ত্রণার স্মৃতি নিয়ে পালিত হয় উদগ্রাম দুর্গা মন্দিরের পুজো
এই পরিস্থিতিতে কীভাবে বাঁচবেন শিল্পীরা ? এই প্রশ্নে ভানু পাল জানাচ্ছেন, একমাত্র বাঁচার উপায় রং করার সময় মাস্ক পরে নেওয়া ৷ সেক্ষেত্রে শ্বাসনালি ও মুখ দিয়ে রংয়ের বিষাক্ত কেমিক্যাল ও ধাতব পদার্থ শরীরে প্রবেশ করবে না ৷ তবে, শুধু মানব শরীরের নয় ৷ এই রং ক্ষতি করছে পরিবেশ (Environmental Pollution) তথা জলজ জীবকূলেরও ৷ প্রতিমা ভাসানের পর জলে সেই রং মিশে জলের বাস্তুর ক্ষতি করছে ৷
পাশাপাশি, ক্ষতি করছে জলে বসবাসকারী মাছ ও অন্যান্য জীবদের ৷ শিল্পী ভানু পাল জানাচ্ছেন, এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচার একমাত্র পথ, আগের ভেষজ রং ৷ যা ফুলের পাপড়ি ও গাছের পাতা থেকে তৈরি করা হত ৷ সেই রং যেমন মানুষের শরীরে কোনও ক্ষতি করে না ৷ তেমনি পরিবেশ রক্ষার সাহায্য করে ৷