রায়গঞ্জ, 16 জুলাই : পেট্রলের দাম আকাশ ছুঁতেই কপাল ফিরছে সাইকেল বিক্রেতাদের ৷ নতুন বাহন কিনতে সাইকেলের দোকানে ভিড় বাড়াচ্ছেন ক্রেতারা ৷ ভিড় বাড়ছে সাইকেল সারাইয়ের গুমটিগুলিতেও ৷ উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ শহরের সর্বত্রই ধরা পড়েছে এই ছবি ৷ ক্রেতাদের প্রায় সকলেই মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত ৷ সকলের বক্তব্যও মোটামুটি এক ৷ পেট্রলের দাম যে হারে বাড়ছে তাতে ব্য়ক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করে রোজের যাতায়াত সারা এক প্রকার অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ গণপরিবহণের অবস্থাও তথৈবচ ৷ তাই সাইকেলই সেরা বিকল্প বলে মনে করছেন তাঁরা ৷
আরও পড়ুন : Oil price : 38 কিমি সাইকেল চালিয়ে বিধানসভায় প্রতিবাদী বেচারাম
ইতিমধ্যেই লিটারে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে পেট্রলের দর ৷ ডিজেলের দামও একশো ছুঁই ছুঁই ৷ এদিকে, মধ্যবিত্ত বাঙালির কাছে মোটরবাইক সবথেকে সহজ বাহন ৷ চারচাকার তুলনায় জ্বালানির খরচ অনেক কম ৷ বহরে ছোট হওয়ায় গতিতেও দুরন্ত ৷ অথচ পেট্রলের দাম বৃদ্ধির চোটে ছবিটা বদলে গিয়েছে এক ঝটকায় ৷ বাইকের খোরাক জোটাতে গিয়ে টান পড়ছে ঘরের হেঁসেলে ৷ এমন পরিস্থিতিতে বাইক ছেড়ে সাইকেলে ফিরছেন অনেকেই ৷
সমস্য়া আরও আছে ৷ ডিজেলের দাম বাড়লেও বাড়েনি বাসের ভাড়া ৷ ফলে সরকারি অনুমতি মিললেও কোভিড আবহে বসে গিয়েছে গণপরিবহণের একটা বড় অংশ ৷ ফলে যাঁরা এতদিন বাসে যাতায়াত করতেন, বিপাকে পড়েছেন তাঁরাও ৷ অগত্যা সমাধানের খোঁজে সাইকেলের দোকানে ছুটে এসেছেন তাঁরাও ৷ কেউ আবার দীর্ঘদিন অনাদরে ফেলে রাখা দু’চাকার যানটিকে হাঁটিয়ে এনেছেন গুমটিতে সারাই করাতে ৷
আরও পড়ুন : বর্ধমানে সেঞ্চুরি পেট্রলের, মাথায় হাত শহরবাসীর
এই পরিস্থিতিতে হাসি ফিরেছে সাইকেল বিক্রেতা ও সারাইকর্মীদের মুখে ৷ তাঁরা বলছেন, সাইকেল চালানো এমনিতেই স্বাস্থ্যকর ৷ কিন্তু বাইকের দাপটে পরিবেশবান্ধব এই যানের কদর কমেছে ৷ তবে করোনা আবহে পেট্রলের দাম বৃদ্ধিতে শাপে বর হয়েছে সাইকেলের ৷ যাতায়াতের কোনও খরচ নেই, অন্যের ছোঁয়াচ বাঁচানোও সহজ ৷ তাই প্রতিদিনই বাড়ছে সাইকেলের বিক্রি ৷
কথায় বলে, কারও পৌষমাস, তো কারও সর্বনাশ ৷ টানা লকডাউনে সাইকেল বিক্রেতাদেরও অনেক ক্ষতি হয়েছে ৷ এমনকি, এখনও প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ তাঁদের রুজি হারাচ্ছেন ৷ আর ঠিক তখনই নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন রায়গঞ্জের সাইকেল বিক্রেতারা ৷ তাঁদের আশা, এবার হয়তো পুষিয়ে যাবে দীর্ঘদিনের লোকসান ৷ আশায় বুক বাঁধছেন ব্যবসায়ীরা ৷