রায়গঞ্জ, 24 মে: আবহমানকাল থেকে দেখা যাচ্ছে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত হয়ে আসছে সব কিছু থেকে । জামাইদের মঙ্গল কামনার জন্য জামাইষষ্ঠী করা হয় কিন্তু মেয়েদেরও তো মঙ্গল চাওয়া দরকার । মেয়েদের কথা কেউ ভাবে না ৷ প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে ষষ্ঠী দেবীর পুজো করা হয় । বিবাহিত মেয়ে এবং জামাইদের আমন্ত্রণ করে খাওয়ানোই এই পার্বণের অন্যতম বিধি ।
জামাইয়ের কপালে ষষ্ঠীর ফোঁটা এবং হাতে হলুদ মাখানো সুতো বেঁধে মঙ্গল কামনা করেন শাশুড়ি মায়েরা । এক্ষেত্রে শ্বশুরবাড়িতে জামাইদের ভিআইপি আপ্যায়নের কোনও খামতি থাকে না । ফলাহার থেকে ষোড়শ ব্যাঞ্জনে পরিপাটি ভূরিভোজে তৃপ্ত হন জামাইবাবাজিরা । কিন্তু বউমারাই বা বাদ যায় কেন । তাই জামাইদের সঙ্গে সঙ্গে মেয়েরাও যাতে ভালো থাকে সেই কারণে জামাইষষ্ঠীর আগেই মঙ্গলবার বউমাদের নিয়ে ষষ্ঠী আয়োজন করলেন শাশুড়ি ও বউমারা ।
আধুনিকতার যুগে নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিয়ে আমরা সুর চড়াই বটে । কিন্তু অনেক রীতিনীতিতে আজও নারীরা বঞ্চিত । তাই সেই নিয়ম ভেঙে এবারে জামাইষষ্ঠীর একদিন আগে বুধবার বউমাষষ্ঠী পালিত হল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে । রায়গঞ্জ শহরের একটি জনপ্রিয় রেস্তোরাঁয় বউমা ষষ্ঠী পালিত হল সাড়ম্বরে । জামাইষষ্ঠীর রীতি মেনেই পুজোর পর বউমাদের কপালে হলুদের টিপ পরিয়ে হাতে হলুদ সুতো বেঁধে দেন শাশুড়িরা । দিলেন পাখার হাওয়াও । এই মাঙ্গলিক উপাচারের পাশাপাশি স্পেশাল থালির মাধ্যমে চলল ভূরিভোজ ।
অনুষ্ঠানে বউমা হিসেবে অংশগ্রহণকারী মৌসুমী দা বলেন, "নারী-পুরুষের সমান অধিকার খাতায় কলমে সীমাবদ্ধ থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয় না অনেকক্ষেত্রেই । তাই সেই প্রথা ভেঙে নিজের জন্য বাঁচতে ও অন্যকে ভালে রাখতেই এই মহা আয়োজন আজকের সমাজে যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক । অরণ্যষষ্ঠী ব্রত পালনের মাধ্যমে এদিন সকলের হাতে তুলে দেওয়া হয় গাছও ।" অন্যদিকে এক শাশুড়ি রানি সেন বলেন, "আবহমান কাল ধরে নারীরা সমাজে বঞ্চিত । তাই জামাইদের মঙ্গল কামনার পাশাপাশি মেয়েদের ভালো রাখতে এই বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে ।"
আরও পড়ুন : শাশুড়ির কোলে বসলেন গৌরব ! ডায়েট ভুললেন রুদ্রজিৎ ; দেখুন টলিউডের জামাই-আদর