রায়গঞ্জ, 17 ফেব্রুয়ারি: পাঁচ বছর আগে 13 মে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছিল ৷ সেদিন উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার ব্লকের সোনাপুর এফপি স্কুলের ভোটকেন্দ্র থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন প্রিসাইডিং অফিসার তথা স্কুল শিক্ষক রাজকুমার রায় ৷ পরবর্তী সময়ে একদিন পর সোনাডাঙি এলাকায় রেললাইনের উপর থেকে তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয় (5 Years of Presiding Officer Rajkumar Roy Death) ৷ সেই ঘটনায় 5 বছর পরেও রাজকুমার রায়ের মৃত্যুরহস্যের কিনারা করতে পারেননি তদন্তের দায়িত্বে থাকা সিআইডি ৷ 5 বছর পর নিহত রাজকুমার রায়ের পরিবারের সঙ্গে কথা বলল ইটিভি ভারত ৷
5 বছর পরেও স্কুল শিক্ষক স্বামীর রহস্যমত্যুর সত্যিটা জানতে পারনেনি অর্পিতা বর্মন রায় ৷ আবারও পঞ্চায়েত ভোট এসে হাজির হয়েছে ৷ তাই আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁর । প্রসঙ্গত, রাজকুমার রায়ের মৃত্যুর বিচারের দাবিতে 5 বছর আগে যে মঞ্চ গঠিত হয়েছিল ৷ সেই ‘রাজকুমার রায় হত্যা বিচারমঞ্চ’ আজ সুবিচারের দাবিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ৷ তবে, তাঁদের সেই আন্দোলন সত্ত্বেও তদন্ত কতটা এগিয়েছে, তা নিয়ে কোনও সদুত্তর সিআইডি দিতে পারেনি বলে অভিযোগ ৷
2018’র পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ইটাহার ব্লকের সোনাপুর এফপি স্কুলে প্রিসাইডিং অফিসারের ডিউটি পড়েছিল, উত্তর দিনাজপুর জেলার করণদিঘি ব্লকের দোমহনা হাইমাদ্রাসা স্কুলের সহ শিক্ষক রাজকুমার রায়ের ৷ ভোটের দিন সকালে একদল দুষ্কৃতী বুথে ঢুকে ভোটলুঠের চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ ৷ রাজকুমার রায় তাদের বাধা দিয়েছিলেন ৷ এর কয়েকঘণ্টার মধ্যে রাজকুমার রায় বুথ থেকে নিখোঁজ হয়ে যান ৷ আর তার কিছুক্ষণের মধ্যে অন্য একজন প্রিসাডিং অফিসার সেখানে পৌঁছে যান ৷
অভিযোগ ওঠে একজন প্রিসাইডিং অফিসার নিখোঁজ হওয়ার পরেও রাজ্য নির্বাচন কমিশন নির্বিকার ছিল ৷ তাঁকে খোঁজার জন্য যে তৎপরতা প্রয়োজন ছিল ৷ তা নজরে আসেনি বলে অভিযোগ করে ভোট কর্মীদের সংগঠন ৷ এনিয়ে রায়গঞ্জ ঘড়ি মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ করেন নির্বাচন কর্মীরা ৷ সেখানে মহকুমা শাসক উপস্থিত হলে, তাঁকে ঘিরে আন্দোলন শুরু হয় ৷ মহকুমা শাসককে হেনস্থার অভিযোগে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয় ৷
আরও পড়ুন: "রাজকুমার রায় হতে চাই না", ভোটকর্মীদের বিক্ষোভ আসানসোলেও
নির্বাচনের পরেরদিন সোনাডাঙি এলাকায় রেললাইনের উপরে রাজকুমায় রায়ের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ৷ এই ঘটনায় রাজকুমার রায়কে হত্যার অভিযোগ করেন তাঁর পরিবার ৷ ঘটনায় তদন্তভার সিআইডি-কে দেওয়া হয় ৷ কিন্তু, সিআইডি'র সেই তদন্ত কতদূর এগিয়েছে ? তার কোনও হদিশ এখনও পর্যন্ত নেই ৷ এরই মাঝে জেলাশাসকের দফতরে নিহত রাজকুমার রায়ের স্ত্রী অর্পিতা বর্মন রায়কে চাকরি দিয়েছে রাজ্য সরকার ৷ 3 বছর আগে আর্থিক সাহায্য হিসেবে 10 লক্ষ টাকাও দেওয়া হয়েছে ৷ যা নিয়ে ‘রাজকুমার রায় হত্যা বিচারমঞ্চ’ এর তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, পুরো বিষয়টিকে ধাপাচাপা দিতেই এই সাহায্য করেছে রাজ্য সরকার ৷
তবে, বাস্তবটা হল 5 বছর কেটে গেলেও রাজকুমার রায়ের নিখোঁজ হওয়া থেকে মৃত্যু এবং 1 দিন পরে রেললাইন থেকে ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার ৷ এসব রহস্যের কোনও কিনারাই সিআইডি করতে পারেনি ৷ যা নিয়ে ‘রাজকুমার রায় হত্যা বিচারমঞ্চ’ এর সভাপতি ভাস্কর ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, তাঁরা সুবিচারের দাবিতে নিজেদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন ৷