অশোকনগর, 7 এপ্রিল: শেওড়াফুলিতে গঙ্গার ঘাটে বানের জলে তলিয়ে মৃত্যু হয়েছে সুমিত চক্রবর্তী নামে এক যুবকের । অশোকনগর পৌরসভার 2 নম্বর ওয়ার্ডের দেবীনগর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন ওই যুবক ৷ তারকেশ্বরে বাবার মাথায় জল ঢালতে গিয়েই এই বিপত্তি বলে জানা গিয়েছে ৷
জানা গিয়েছে, সুমিতের বাড়ি অশোকনগর পৌরসভার 2 নম্বর ওয়ার্ডের দেবীনগর এলাকায়। তিনজনের সংসারে সেই-ই ছিল একমাত্র উপার্জনকারী । বয়সের কারণে বাবা সেভাবে আর কাজ করতে পারেন না। তাঁর সামান্য রোজগারে কোনওমতে সংসার চলে পরিবারের। পরিবার সূত্রে খবর,তারকেশ্বরে বাবার মাথায় জল ঢালার নাম করে বুধবার রাতে অশোকনগরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন ওই যুবক। প্রথমে তিনি যান হাবড়ার নগরথুবাতে। সেখানে সুমিতের মাসি বাড়ি। পরেরদিন সকালে মাসির ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে দল বেঁধে রওনা হন শেওড়াফুলির দিকে। সেখানে গঙ্গার ঘাট থেকে জল তুলে তারকেশ্বরে বাবার মাথায় জল ঢালাই মূল উদ্দেশ্যে ছিল সকলের। সেই মতো জল আনতে সন্ধ্যায় গঙ্গায় নামেন তিনি। আচমকাই বানের তোড়ে তলিয়ে যান সুমিত। চেষ্টা করেও সেই সময় খোঁজ মেলেনি তাঁর। শেষে ডুবুরি নামিয়ে খোঁজাখুঁজির পর উদ্ধার হয় যুবকের নিথর দেহ। তীর্থ করতে গিয়ে যুবকের এভাবে অকাল মৃত্যু কিছুতেই যেন মেনে নিতে পারছেন না পরিবারের লোকেরা । দুঃসংবাদ মেলার পর থেকেই কার্যত শোকে ভেঙে পড়েছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: বহাল কুড়মি সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ, রবিবার পর্যন্ত বাতিল একাধিক ট্রেন
এই বিষয়ে নিহতের মা খুশি চক্রবর্তী বলেন,"দিদির ছেলে যাচ্ছে বলেই ওকে পাঠিয়ে ছিলাম। বৃহস্পতিবার রাতে জামাইবাবু এসে বলেছে ওর শরীর নাকি খুব খারাপ। তখনও জানানো হয়নি বিষয়টি। পরে,শুনলাম ছেলে শেওড়াফুলিতে গঙ্গার ঘাটে নেমে তলিয়ে গিয়েছে। ও সাঁতার জানত না। কীভাবে যে কি হয়ে গেল বুঝতে পারছি না।" এদিকে,শুক্রবার দুপুরে নিহতের বাড়িতে গিয়ে পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন অশোকনগর পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকার। সেখান থেকে বেরিয়ে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন,"ঘটনাটি খুবই বেদনাদায়ক। মৃত্যু কখনও বলে কয়ে আসেনা। তা সাঁতার জানা থাকুক কিংবা না জানা থাকুক। পরিবারের সঙ্গে রয়েছি। যেভাবে সহযোগিতা করার দরকার সেভাবে পাশে দাঁড়াবো আমরা। এটুকু বলতে পারি"। ময়নাতদন্তের পর যুবকের দেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে অশোকনগরের বাড়িতে।