বারাসত, 10 এপ্রিল : "উই ওয়ান্ট জাস্টিস" স্লোগান উঠল বারাসত কোর্ট চত্বরে। অনুপম হত্যা মামলায় মনুয়া ও তার প্রেমিক অজিতের ফাঁসির দাবিও উঠল। অনুপম হত্যা মামলার শুনানি চলাকালীন গতকাল বারাসত আদালতের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভে সামিল হন অনুপমের বন্ধু ও পরিজনরা। কিছুদিন আগে এই মামলার সরকারি আইনজীবী বিপ্লব রায়কে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনুপমের মা কল্পনা সিংহ অভিযোগ করেন, আইনজীবী বিপ্লবকে চক্রান্ত করে এই মামলা থেকে সরানো হয়েছে। এরপর এই মামলার সুবিচার চেয়ে গতকাল রাস্তায় নেমে আন্দোলন করল অনুপমের পরিজনরা। অনুপমের মা কল্পনা সিংহও এই আন্দোলনে সামিল হন।
গতকাল বারাসত আদালত চত্বর থেকে অনুপমের বন্ধুরা মিছিল করেন। মিছিলের পর আদালত চত্বরে বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ দেখানো হয়। তাঁরা মনুয়া ও অজিতের ফাঁসির দাবি তোলেন। তাঁদের অভিযোগ, মনুয়া ও অজিতকে বাঁচানোর চক্রান্ত করা হচ্ছে। অনুপমের বান্ধবী নন্দিনী ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, "অনুপম হত্যা মামলায় অভিযুক্ত মনুয়া যদি ছাড়া পেয়ে যায় তাহলে সমাজের পক্ষে তা ক্ষতিকর। এমন ঘটলে অনেক মহিলাই ভাবতে শুরু করবে, এই ধরনের জঘন্য অপরাধ করে ছাড়া পাওয়া যেতে পারে। ক্ষমতা ও অর্থবল কখনই অপরাধের ক্ষেত্রে শেষ কথা হতে পারে না। এই যে বলা হচ্ছে মনুয়ারা হাইকোর্টে গেলে জামিন পেয়ে যেতে পারে। এটা কেন হঠাৎ বলা হচ্ছে? এর পিছনে কাদের মদত রয়েছে? বদ্ধ ঘরে কেন এই মামলার সওয়াল জবাব চলবে? পুরুষতান্ত্রিক সমাজে আজও পুরুষদের জন্য আলাদা করে কোনও আইন নেই। যা আছে সবই মহিলাদের জন্য। দোষীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। নাহলে আগামীদিনে ঘরে ঘরে মনুয়া তৈরি হবে। রাষ্ট্র কি তাই চায়?"
অনুপমের মা কল্পনা সিংহ বলেন, "সরকারের কাছে আমার একটাই আবেদন, আমার ছেলের হত্যাকারীর যেন ফাঁসি হয়। আমরা যেন সুবিচার পাই। আমার মতো আর কোনও মায়ের কোল যেন খালি না হয়। ছেলের খুনের মামলার সঠিক বিচার একমাত্র আইনজীবী বিপ্লব রায়কে ফিরিয়ে আনলে সম্ভব। আমরা চাই তিনি আবার এই মামলায় সরকারি আইনজীবী হিসেবে লড়ুক।" তাঁর অভিযোগ, মনুয়ারা চক্রান্ত করেই বিপ্লব রায়কে সরিয়ে দিয়েছে।
LR বিভাগের তরফে অনুপম হত্যা মামলায় সরকারি আইনজীবী বিপ্লব রায়কে কয়েকদিন আগেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে আইনজীবী মহলেও জলঘোলা হয়। তাঁকে সরানোয় নিহত অনুপমের মা কল্পনা সিংহ ক্ষুদ্ধ হন। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে গিয়ে বিপ্লব রায়কে পুনরায় ফেরানোর আবেদন করেন। গতকালের এই আন্দোলন বিপ্লব রায়কে ফেরানোর দাবিতে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করার কৌশল বলেই অনেকে মনে করছেন।