বারাসত, 27 অগাস্ট : দেগঙ্গার পর এবার বারাসত । ফের রাস্তার উপর পড়ে রইল PPE কিট, গ্লাভস ও মাস্ক । তাও আবার বারাসত হাসপাতালের জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তরের ঢোকার ঠিক মুখে । বুধবার যশোর রোডের পাশে দপ্তরে ঢোকার মুখেই নিকাশি নালায় উন্মুক্তভাবে পড়েছিল PPE কিট ও গ্লাভস । আর মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তরের একবারে সামনেই রাস্তার উপর ছিল ব্যবহৃত মাস্ক । কোরোনা পরিস্থিতিতে এভাবে প্রকাশ্যে PPE কিট সহ আনুষঙ্গিক জিনিস পড়ে থাকায় বারাসত হাসপাতাল চত্বরে শোরগোল পড়ে যায় । এর কিছুক্ষণ পর দেখা যায়, কোনওরকম সুরক্ষা না নিয়ে এক সাফাই কর্মী ওই PPE কিটসহ আনুষঙ্গিক জিনিস তুলে নিয়ে যান । যা দেখে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন । গোটা ঘটনার জন্য হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের দিকেই আঙুল তুলেছেন এলাকাবাসী । জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকও মনে করছেন এক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সজাগ হওয়া উচিত ছিল ।
বারাসত জেলা হাসপাতালের ভিতরে রয়েছে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তর । এই হাসপাতালেই কোরোনার আইসোলেশন ওয়ার্ড গড়ে তোলা হয়েছে । এছাড়া, ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন পদ্ধতিতে কোরোনার পরীক্ষা হচ্ছে বারাসত হাসপাতালে । কোরোনার মধ্যে জরুরি বিভাগে বিভিন্ন জায়গা থেকে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের ভিড় লেগে থাকে এই হাসপাতালে । সেক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বারাসত হাসপাতাল । সেখানেই মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তরের ঢোকার ঠিক মুখে এভাবে দীর্ঘক্ষণ PPE কিট, গ্লাভস রাস্তার উপর পড়ে থাকায় স্বাথ্য সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । দপ্তরের ঢোকার রাস্তা দিয়ে বহু মানুষের যাতায়াত । অনেকে আবার তার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন । বাবু নামে যে সাফাই কর্মী সুরক্ষা ছাড়া পড়ে থাকা PPE কিট, গ্লাভস, মাস্ক তুলে নিয়ে যান তিনি বলেন,"আমাকে একজন কাজের নাম করে ডেকে নিয়ে আসে এখানে । এরপর তাঁর কথাতেই নিকাশি নালা থেকে সেই সমস্ত বর্জ পদার্থ তুলে ফেলি ।"
এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা অসিত বোস বলেন,"যারা এই কাজ করেছে তাঁদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত ছিল । আমরা কোনও কিছু বললেও কাজ হয় না । কাকে বলব ? এখানে যারা রয়েছে তাঁরাই যদি কিছু না করে তাহলে বলে কি লাভ ? এরা দেখেও কিছু করেনা । এর থেকে তো সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে ।" অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন,"বাইরের কোনও অ্যাম্বুলেন্স চালক ওই বর্জ পদার্থ ফেলে গেছেন ।আমরা বিষয়টি দেখছি । ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে সেই বিষয়ে হাসপাতাল সুপারের সঙ্গে কথা বলা হবে ।এক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনও গাফিলতি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছি আমরা ।" সুরক্ষা ছাড়াই PPE কিট তোলার বিষয়ে তিনি বলেন,"এভাবে PPE কিট তোলা ঠিক হয়নি । পর্যাপ্ত সুরক্ষা ছাড়া ব্যবহৃত PPE কিট তোলা যায়না । এই বিষয়েও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হবে । যাতে পুনরায় এমন ঘটনা না ঘটে ।" গোটা ঘটনায় কোথাও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে বলে মনে করছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক । অপরদিকে, বিষয়টি নিয়ে বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় । কিন্তু তাঁর কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি ।