দেগঙ্গা, 9জুন : বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে গুরুতর জখন তিনজন। এদের মধ্যে দু'জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনাটি উত্তর 24 পরগনার দেগঙ্গার বেঁড়াচাপা এক নম্বর পঞ্চায়েতের মির্জানগরে। পুলিশ ঘটনাস্থান থেকে কয়েকটি তাজা বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বেঁড়াচাপা এক নম্বর পঞ্চায়েতের মির্জানগর বাজারের পাশে একটি নবনির্মিত বাড়ির মধ্যে আজ সকালে বোমা বাঁধছিল কয়েকজন। সকাল প্রায় এগারোটা নাগাদ বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। আতঙ্কে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় বাজারে আসা লোকজনের মধ্যে। স্থানীয়রা লক্ষ্য করেন, ওই নবনির্মিত বাড়িতে আহত অবস্থায় পড়ে রয়েছে তিনজন। দেরি না করে বিষয়টি জানানো হয় দেগঙ্গা থানায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে আসে দেগঙ্গা থানার পুলিশ।
স্থানীয়দের সহযোগিতায় জখম ওই তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে আহতদের ভরতি করা হয় দেগঙ্গার বিশ্বনাথ পুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। কিন্তু,পরে দু-জনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের স্থানান্তরিত করা হয় বারাসত জেলা হাসপাতালে। ঘটনাস্থান থেকে পুলিশ কয়েকটি তাজা বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করেছে।
এদিকে,কোরোনা আবহের মধ্যেই বোমা বিস্ফোরনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দেগঙ্গার মির্জানগরে। ঘটনাটি ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। BJP-র বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শংকর চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, "তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা সেখানে জড়ো হয়ে বোমা বাঁধার কাজ করছিল। গোটা রাজ্যই এখন বোমা বারুদের স্তূপের উপর দাঁড়িয়ে। প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও জায়গা থেকে বোমা ও গুলি উদ্ধার হচ্ছে। বোমাবাজি, গুলিও চলছে প্রায় প্রতিদিনই। একদিন আগেই তৃনমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে বোমাবাজি ও গুলিতে উত্তপ্ত হয়েছিল পাশ্ববর্তী শাসন অঞ্চল। দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে দেগঙ্গা, শাসন সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা। মানুষের জীবন এঁরা দুর্বিসহ করে তুলেছে"।
পাশাপাশি তিনি বলেন,"শাসকদলের মধ্যে এখন এত খেয়োখেয়ি,দলাদলি চলছে যে দুষ্কৃতীদের জড়ো করে খুন করতেও পিছুপা হচ্ছে না। দেগঙ্গার মির্জানগরের ঘটনাতেও তদন্ত করলে দেখা যাবে, তৃণমূলের কোনও পক্ষই দুষ্কৃতীদের সেখানে জড়ো করে বোমা বাঁধার কাজ করছিল। আমরা এই ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি করছি। তদন্ত হলেই সব সত্য সামনে চলে আসবে"।
যদিও, BJP-এর অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা এ কে এম ফারহাদ বলেন, "কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। তদন্তের আগেই যে কোনও বিষয়ে রাজনীতি খোঁজা BJP-এর এখন স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে।ওঁদের ঠুনকো রাজনীতির জবাব মানুষ সঠিক সময়ে দেবে।''
অন্যদিকে,দেগঙ্গা থানার পুলিশ জানিয়েছে "কি উদ্দেশ্যে ওই নবনির্মিত বাড়িতে বোমা বাঁধার কাজ চলছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উদ্ধার হওয়া বোমা নিষ্ক্রিয় করার কাজ শুরু হয়েছে। আহতরা সুস্থ হলে তাঁদের প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করা হবে"।
পুলিশ সূত্রে খবর,আহতরা সম্ভবত বাইরের কোথাও থেকে এসে ওই নবনির্মিত বাড়িতে বোমা বাঁধার কাজ করছিল। তাঁদের সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছে দেগঙ্গা থানার পুলিশ।