শাসন (উত্তর 24 পরগনা), 26 জানুয়ারি: তৃণমূল নেতার বাড়ি ভাঙচুরকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল উত্তর ২৪ পরগনার শাসন। উঠেছে বোমাবাজির অভিযোগও। দলীয় কোন্দলের অভিযোগ উঠলেও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এই ঘটনার পিছনে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। জনরোষের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে মত তাঁদের। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
শাসনের দাদপুর পঞ্চায়েতে বাড়ি তৃণমূল নেতা আসের আলি মল্লিকের। বারাসত ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত ও পরিবহণ কর্মাধ্যক্ষের পদে রয়েছেন তিনি। আমফানের ক্ষতিপূরণের টাকা বণ্টন ঘিরে তাঁর বিরুদ্ধে আগেই স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষকে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগও। এই নিয়ে তৃণমূলের একপক্ষ ও গ্রামবাসীদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। সোমবার রাতে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে বলে মনে করা হচ্ছে। রাতের অন্ধকারে আসের আলির বিপক্ষ গোষ্ঠীর লোকজন আচমকাই হামলা চালায় তাঁর বাড়িতে। বাড়ির আসবাবপত্র ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। বোমাবাজি করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। টানা বোমবাজিতে কেঁপে ওঠে এলাকা। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার লোকজন। খবর পেয়ে শাসন থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
এই বিষয়ে স্থানীয় গ্রামবাসী ইয়াকুব আলি বলেন,"আমফান ক্ষতিপূরণের টাকা গ্রামের গরিব মানুষের কেউই পায়নি। সেই টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ ও পরিবারের লোকজনকে। এই নিয়ে তৃণমূলের দু'পক্ষের মধ্যে বিবাদ চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। সেই বিবাদের জেরেই সম্ভবত এই ঘটনা ঘটেছে। কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে শুনতে পাই বোমাবাজি হচ্ছে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে"।
আরও পড়ুন: রাজনীতির অপরাধীকরণ করেছে তৃণমূল, অভিযোগ দিলীপের
যদিও, শাসন অঞ্চলের তৃণমূল নেতা মহম্মদ ইন্তাজুলের দবি, "কী কারণে এমন ঘটনা তা আমার জানা নেই। আমরা দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে সংগঠনের কাজ করে থাকি। সেখানে কিছু নেতা দলকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করছে। ওই তৃণমূল নেতার কাজকর্ম দল বিরোধী। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগও রয়েছে। সেই অভিযোগের কারণেই গ্রামবাসীদের একাংশ সম্ভবত এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।দলের কেউ এর সঙ্গে জড়িত নন। দলীয় কোন্দলের বিষয় নিয়ে যা বলা হচ্ছে তা ঠিক নয়।"।
মঙ্গলবার সকালেও গোটা এলাকা থমথমে রয়েছে। এলাকায় রয়েছে পুলিশি পিকেট। তবে, এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।