স্বরূপনগর, 21 জুন : ভোট পরবর্তী হিংসা অব্যাহত উত্তর 24 পরগনায় ৷ রাতের অন্ধকারে তৃণমূল নেতার উপর সশস্ত্র হামলার অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে । মারধরের পাশাপাশি আলমগীর সর্দার নামে ওই তৃণমূল নেতার হাত, পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ । ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে উত্তর 24 পরগনার স্বরূপনগরে । আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই তৃণমূল নেতাকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৷ বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৷ কী কারণে তাঁর উপর এই হামলা তা নিয়ে ধন্দে পড়েছেন পরিজনরা ৷ তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।
আক্রান্ত আলমগীর সর্দারের বাড়ি স্বরূপনগরের গোবিন্দপুর পঞ্চায়েত এলাকায় । দলের তরফে দাবি, তাঁর নেতৃত্বে এলাকায় তৃণমূলের সংগঠন ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে ৷ বিধানসভা ভোটের সময়ও দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন আলগমীর । রবিবার রাতে দত্তপাড়ার বাজার থেকে বাড়ির দিকে ফিরছিলেন তিনি ৷ তখনই বাইকে করে এসে জনাকয়েক দুষ্কৃতী তাঁর পথ আটকায় ৷ কিছু বুঝে ওঠার আগেই লাঠি, রড নিয়ে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে দুষ্কৃতীরা । ব্যাপক মারধর করা হয় তাঁকে । সেই সঙ্গে লোহার রড দিয়ে ওই তৃণমূল নেতার হাত, পা ভেঙে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ । রক্তাক্ত অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ রাস্তার ধারে পড়ে থাকেন আলমগীর ৷ এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে সারাফুল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান । কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে পরে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে । হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, আহতের শারীরিক অবস্থা যথেষ্ট সঙ্কটজনক । হাত, পা এবং মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে ৷ তৃণমূল নেতার উপর এমন হামলার ঘটনায় এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে ৷
এই বিষয়ে আক্রান্তের দাদা জাহাঙ্গির সর্দার বলেন, "দুষ্কৃতীরা বেধড়ক মারধরের পর হয়তো ভেবেছিল আলমগীর মারা গিয়েছে । সেই কারণে রাস্তার ধারে ফেলে রেখে চম্পট দেয় তারা ৷ ঘটনার পিছনে ঠিক কী কারণে রয়েছে তা আমাদের জানা নেই ৷ এর কারণ ভাই-ই সঠিকভাবে বলতে পারবে । আমরা দোষীদের কঠোর সাজা চাই ৷"
ঘটনার পিছনে কাদের হাত রয়েছে, তা নিয়ে ধন্দে পড়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বও । এবিষয়ে তৃণমূলের স্বরূপনগর ব্লকের সভাপতি রমেন সর্দার বলেন, "কেন ওই তৃণমূল নেতার উপর হামলা হল, তা আমরা বুঝে উঠতে পারছি না । শান্ত স্বরূপনগরকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে দুষ্কৃতীরা । এনিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত আমরা । ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নিক, সেটাই আমরা চাই ৷"
এদিকে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার সকালে স্বরূপনগর থানায় খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয় । অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ । তবে এখনও দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত কিংবা গ্রেফতার কোনওটাই করে উঠতে পারেনি স্বরূপনগর থানার পুলিশ ।
অন্যদিকে হামলার পিছনে পুরানো শত্রুতা কিংবা রাজনৈতিক কোনও কারণ রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে স্বরূপনগর থানার পুলিশ ।
আরও পড়ুন : ভাটপাড়ায় বোমাবাজি, জখম এক পুলিশ আধিকারিকসহ 5