দেগঙ্গা, 27 জুন: পঞ্চায়েতে লাখ লাখ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ, তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে ৷ যার কারণে অনাস্থা আনলেন দলেরই 14 জন পঞ্চায়েত সদস্য (TMC Inner Clash in Deganga)। দেগঙ্গায় দলীয় কোন্দলে বিড়ম্বনা বাড়ল শাসকদলের।
সূত্রের খবর, পঞ্চায়েতের 14 জন সদস্য একসঙ্গে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনায় শীঘ্রই মুলতবি সভা ডাকা হতে পারে। সেই সভাতেই নির্ধারণ হবে পঞ্চায়েত প্রধানের ভাগ্য। যদিও দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে অনাস্থা আনার পিছনে দলেরই একাংশের ষড়যন্ত্র দেখছেন চাকলা পঞ্চায়েতের প্রধান মৌমিতা দাস কাহার।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে চাকলা গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট 22টি আসনের মধ্যে তৃণমূল একাই পেয়েছিল 21টি আসন। বাকি 1টি দখল করেন নির্দল প্রার্থী। পরবর্তী সময়ে তিনিও যোগ দেন তৃণমূলে। ফলে, বিরোধী শূন্য এই পঞ্চায়েতের প্রধানের দায়িত্ব পান তপশিলি জাতির মৌমিতা দাস কাহার। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই পঞ্চায়েতের অধিকাংশ সদস্যের সঙ্গে বনিবনা না-হওয়ায় শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বারবার প্রকাশ পেয়েছে। শুধু তাই নয়, স্বজনপোষণ এবং আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সম্প্রতি পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ি পর্যন্ত ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তৃণমূলেরই একাংশ।
আরও পড়ুন : শুভেন্দুকে গ্রেফতারের দাবিতে সিজিও-র সামনে বিক্ষোভ তৃণমূল ছাত্র-যুবদের
শেষমেশ বিক্ষোভ ঠেকাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছন দেগঙ্গা থানার পুলিশ। পুলিশি নিরাপত্তায় দীর্ঘক্ষণ পর ঘেরাও মুক্ত হন চাকলা পঞ্চায়েতের প্রধান মৌমিতা দাস কাহার। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না-কাটতে এবার ওই পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন দলেরই 14 জন সদস্য। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত প্রধান মৌমিতা দাস কাহার দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা মফিদুল হক সাহাজির ঘনিষ্ঠ। তাঁর বিরুদ্ধে গোষ্ঠীর নেতা দেগঙ্গা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি আনিসুর রহমান(বিদেশ)-এর অনুগত পঞ্চায়েত সদস্যরাই অনাস্থা এনেছেন পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। শাসকদলের এই দুই নেতার কাজিয়া দীর্ঘদিনের।
রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ে মতভেদের কারণে বারবার তা সামনে এসেছে। যা বাদ গেল না অনাস্থা আনার ক্ষেত্রেও। যার জেরে শাসকদলের বিড়ম্বনা বাড়ল বলেই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। অন্যদিকে, অনাস্থা আনার পিছনে বিক্ষুদ্ধ পঞ্চায়েত সদস্যদের যুক্তি, চাকলা পঞ্চায়েতের প্রধান মৌমিতা দাস কাহার আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িত। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা হাতিয়ে নেওয়া থেকে শুরু করে কাটমানি খাওয়া সবেতেই সিদ্ধহস্ত তিনি। বিভিন্ন প্রকল্প থেকে পঞ্চায়েত প্রধান প্রায় দশ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাই পঞ্চায়েত প্রধানের পদ থেকে তাঁকে সরাতে অনাস্থা আনা হয়েছে।"
আরও পড়ুন : রাত পোহালেই ঝালদায় উপনির্বাচন, তপনের শূন্যস্থান পূরণে মরিয়া মিঠুন
তবে,যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান মৌমিতা দাস কাহার। এ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,"ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে। বিষয়টি দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছি। তাঁরা যা সিদ্ধান্ত নেবে,তা মাথা পেতে নেব।"