বারাসত, 5 জানুয়ারি : স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা করাতে গিয়ে কখনও হয়রানি,আবার কখনও পর্যাপ্ত টাকা না থাকার অভিযোগ সামনে এসেছে । কিন্তু এবার এক ব্যতিক্রমী ঘটনার সাক্ষী থাকল বারাসত । পথ দুর্ঘটনায় আহত যুবকের চিকিৎসার সমস্যা মেটাতে এগিয়ে এলেন পৌরসভার প্রাক্তন উপ পৌরপ্রধান ও প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য অশনি মুখোপাধ্যায় ।তড়িঘড়ি স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড তুলে দেওয়া হল আহত যুবকের পরিবারের হাতে । স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড হাতে পেয়ে এখন অনেকটাই স্বস্তিতে পরিবারের লোকেরা । যুবকের পায়ের অস্ত্রোপচার সহ দীর্ঘকালীন চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই কার্ড নিঃসন্দেহে তাঁদের ভরসা যোগাবে বলেই মনে করছেন তাঁরা ।
আহত যুবক কুণাল পাঁজার বাড়ি বারাসত পৌরসভার 25 নম্বর ওয়ার্ডের নয়ন কাননে । শনিবার সকালে বারাসত-ব্যারাকপুর রোডে বাইক দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন তিনি । একটি ইট বোঝাই গাড়ি কুণালের পায়ের উপর দিয়ে চলে যায় । রক্তাক্ত অবস্থায় প্রথমে তাঁকে বারাসত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর আহত যুবককে বারাসত রথতলার কাছে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করেন পরিবারের লোকেরা । আহত যুবকের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয় । পরিবারের গৃহকর্তা প্রদীপ পাঁজার গৃহ শিক্ষকতার সামান্য আয়ে সংসার চলে । এই অবস্থায় একদিকে চিকিৎসার ব্যয় বহুল খরচ । অন্যদিকে,স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আবেদন করার পরও তা হাতে না পাওয়া । এই দু’য়ের জেরে রীতিমতো রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল তাদের । এই পরিস্থিতিতে পরিত্রাতার ভূমিকায় এগিয়ে এলেন আহত যুবকের প্রতিবেশী ও স্থানীয় তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অশনি মুখোপাধ্যায় । সমস্যার কথা জানার পরই পরিবারের পাশে দাঁড়ান তিনি । পরিবারের হাতে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড তুলে দিতে উদ্যোগ নেন । গতকালই তাঁর হাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তুলে দেওয়া হয় । অশনিবাবু এদিন নিজেই স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড নিয়ে ওই বেসরকারি হাসপাতালে পৌঁছে যান । এরপর সেই কার্ড তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে । কার্ড হাতে পেয়ে অনেকটাই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন পরিবারের লোকেরা ।
আরও পড়ুন, লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড সংগ্রহ মুখ্যমন্ত্রীর
আহত যুবকের মা ইতু পাঁজা বলেন, "যেভাবে উনি(অশনি মুখোপাধ্যায়)ছেলের চিকিৎসার বিষয়ে পাশে দাঁড়ালেন,তার জন্য ওঁর কাছে কৃতজ্ঞ । স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতে পেয়ে এখন অনেকটাই স্বস্তি লাগছে । ফলে ছেলের চিকিৎসায় উপকৃত হব আমরা ।"
এই প্রসঙ্গে অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, "ওঁর(কুণাল পাঁজা)পরিবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আবেদন করেছিল । অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনও করিয়েছিল । কিন্তু শনিবার কুণালের দুর্ঘটনার কারণে ছবি তোলা আর সম্ভব হয়নি । ছেলের ব্যয়বহুল চিকিৎসা নিয়ে কুণালের বাবা ও মা চিন্তায় ছিল । সমস্যার কথা জানতে পেরে পৌরসভার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের দায়িত্বে থাকা লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করি । তাঁদের দ্রুততার সঙ্গে ওঁর পরিবারের স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড তৈরি করে দিতে বলি । এই বিষয়ে বেসরকারি হাসপাতালও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় ।আশা করছি স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে কুণালের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার সমস্যা মিটবে । "