হাবরা, 2 ডিসেম্বর: জন্মের পর মৃত্যু হয়েছে মায়ের । ছোট্ট শিশুকন্যার দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছিলেন পিসি-পিসেমশাই । চঞ্চল প্রকৃতির বছর তিনের সুমি সিং (বুড়ি) হয়ে উঠেছিল সকলের প্রিয় । কিন্তু তা সহ্য করতে পারেনি পিসতুতো বউদি । আক্রোশে দুধের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে একরত্তিকে হত্যা করল সে। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর 24 পরগনার হাবরার পৃথিবা এলাকায় । অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । ধৃতের নাম সাথী সরদার (18) ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মায়ের মৃত্যুর পর সুমি বড় হয়ে উঠছিল পিসি-পিশেমশাই ও তাঁদের ছেলে রঞ্জিত সরদারের কাছে । বৃহস্পতিবার সকালে শিশুটিকে বাড়িতে চা বিস্কুট খাইয়ে রঞ্জিত-সহ পরিবারের সদস্যরা মাঠে কাজে যায়। সুমি তখন রঞ্জিতের স্ত্রী সাথীর সঙ্গেই ছিল । কিছুক্ষণ পর সাথী প্রতিবেশীদের ডেকে জানায়, সুমি অসুস্থ হয়ে পড়েছে । এলাকার বাসিন্দারা খুদেকে দ্রুত হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় । সেখানে চিকিৎসক সুমিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । চিকিৎসকরা অনুমান করেন, শিশুটি কোনওভাবে বিষ খেয়েছে । সে কথা কানাঘুষো শুনতে পায় পরিবারের সদস্যরা । তাদের সন্দেহ হয় সাথীকেই।
শুক্রবার বিকেলে সাথীকে পরিবারের সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করে । যদিও তখন সমস্ত কিছু অস্বীকার করে সাথী । পরবর্তীতে এলাকার এক ব্যক্তি কিছু চাল নিয়ে এসে বলে যে শিশুটির ক্ষতি করেছে সে এই চাল খেলে রক্ত বমি উঠে মারা যাবে । যা শুনে সাথী সেই চাল খেতে অস্বীকার করে । এরপর তাকে একটু চেপে ধরতেই সে তার অপরাধ স্বীকার করে ৷ জানায়, শিশুটিকে দুধের সঙ্গে বাড়িতে থাকা বিষ মিশিয়ে সে নিজে হাতে খাইয়ে দিয়েছে । শুক্রবার বিকেলে সাথীকে গ্রেফতার করে হাবড়া থানার পুলিশ ।
পুলিশ জানতে পেরেছে, কয়েক মাস আগে রঞ্জিতের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে সাথী সরদারের । পরিবারের সদস্যরা সাথীর থেকেও ছোট্ট সুমিকে বেশি ভালোবাসত । যা সহ্য হচ্ছিল না সাথীর । পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, সেই আক্রোশ থেকে সুমিকে দুধের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে দিয়েছিল সে । এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে সরদার পরিবার-সহ এলাকাবাসীরা । তারা সাথীর কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে । অভিযোগ পেয়ে সমস্ত ঘটনার তদন্তে শুরু করেছে হাবরা থানার পুলিশ । সাথীর স্বামী রঞ্জিত জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর তিনি বিবাহবিচ্ছেদ করবেন ৷
আরও পড়ুন: