ETV Bharat / state

মনুয়া কাণ্ডের ছায়া শাসনে, ব্যক্তিকে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ, গ্রেপ্তার বিবি

author img

By

Published : Mar 11, 2020, 6:19 PM IST

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় শওহরকে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ উঠল বিবির বিরুদ্ধে । শাসনের গোলাবাড়ির পুটুরিয়া পূর্ব পাড়ার ঘটনা । গ্রামবাসীদের অভিযোগ, শাসন থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে পুলিশ তা নিতে অস্বীকার করে । পরে জনরোষের চাপে পুলিশ অভিযোগ নিতে বাধ্য হয় । গ্রেপ্তার করা হয় সিরাজুলের বিবি রোজিনাকে ।

Rozina Bibi
রোজিনা বিবি

শাসন, 11 মার্চ : মনুয়া কাণ্ডের ছায়া এবার শাসনে । বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় শওহরকে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ উঠল বিবির বিরুদ্ধে । শাসনের গোলাবাড়ির পুটুরিয়া পূর্ব পাড়ার ঘটনা । পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সিরাজুল হক (35) । ঘটনার পর সিরাজুলের পরিবার শাসন থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে পুলিশ তা নিতে অস্বীকার করে বলে অভিযোগ । পরে জনরোষের চাপে পুলিশ অভিযোগ নিতে বাধ্য হয় । গ্রেপ্তার করা হয় সিরাজুলের বিবি রোজিনাকে । তার বাপের বাড়ির লোকজন ও প্রেমিককে পুলিশ গ্রেপ্তার না করায় তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে মৃতের পরিবারের সদস্যরা । ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ।

পরিবার ও পুলিশ সূত্রে খবর, দত্তপুকুরের যুবক এনসান মোল্লার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল রোজিনার । এনসান পুটুরিয়ার পশ্চিম পাড়ায় একটি সাইকেলের দোকানে কাজ করত । সেখানেই সিরাজুলের শ্বশুরবাড়ি । সেখানে একটি মুদির রয়েছে তাঁর ৷ সেই দোকানে প্রায়ই বসত রোজিনা । পাশাপাশি দোকান হওয়ায় এনসানের সঙ্গে রোজিনার সম্পর্ক তৈরি হয় ৷ তাদের সেই সম্পর্কের কথা জানতে পারে সিরাজুল । এনিয়ে ওই দম্পতির মধ্যে অশান্তি চরমে ওঠে । অভিযোগ, রোজিনার বাপের বাড়ির লোকজনকে জানানো হলেও তারা বিষয়টি মেটানোর পরিবর্তে প্রশ্রয় দেয় । এরপরই গ্রামবাসীদের বিষয়টি জানাতে বাধ্য হয় সিরাজুলের পরিবার ।

man set on fire by his wife
সিরাজুল হক, রোজিনার শওহর

মাসখানেক আগে স্থানীয় একটি ক্লাবঘরে দুই পরিবারকে নিয়ে সালিশি সভা ডাকা হয় । সেখানে এনসানের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদের প্রতিশ্রুতি দেয় রোজিনা । কিন্তু অভিযোগ তারপরও তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল এনসানের ৷ প্রতিবাদ করায় দোকানের সামনেই সিরাজুলকে ব্যাপক মারধর করে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা । মারধরের চোটে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি । অভিযোগ অসুস্থ হওয়ায় তাঁকে ওষুধ খাওয়ানোর নামে বেশ কয়েকটি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয় রোজিনা । ফলে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন সিরাজুল । সেই সুযোগে তাঁর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় রোজিনা । ঘরের মধ্যেই দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে সিরাজুল । অভিযোগ, তাঁকে ওই অবস্থায় ফেলে রেখে ছোটো ছেলে রোহণকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় রোজিনা । এরপর, এলাকার লোকজন কোনওরকমে আগুন নিভিয়ে দগ্ধ সিরাজুলকে নিয়ে যায় বারাসত হাসপাতালে । সেখানে একদিন ভরতি থাকার পর তাঁর অবস্থার অবনতি হয় ৷ তাঁকে কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় । সেখানে প্রায় 26 দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর মঙ্গলবার গভীর রাতে মারা যান তিনি ।

তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়াতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে স্থানীয়রা ৷ প্রত্যেকেই দোষীদের ফাঁসির দাবিতে সরব হয়েছে । এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ,"14 ফেব্রুয়ারি ঘটনা ঘটার পরের দিনই রোজিনা, তার আব্বা জহিরুল হক, ভাই ওহিনুর ও আরিফ, প্রেমিক এনসানসহ বেশ কয়েকজন আত্মীয়ের বিরুদ্ধে শাসন থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যাওয়া হয় । কিন্তু পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে ৷ এরপর জনরোষের চাপে পড়ে দু-দিন বাদে শুধুমাত্র রোজিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিতে বাধ্য হয় পুলিশ । পুলিশ বলেছে, রোজিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি সে শাসন থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে । বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব ৷ "

এদিকে ছেলের মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পরই শোকে ভেঙে পড়েছেন মসলেমা বিবি । বলেন,"আমার ছেলেকে যেভাবে কষ্ট দিয়ে ওরা মেরেছে, তাদেরও আমি একই কষ্ট দেখতে চাই । জহিরুল, রাজু, আরিফ ও বউমা রোজিনার ফাঁসি চাই ৷ " একই সুর শোনা গেছে সিরাজুলের বড় ছেলে সোহেলের গলাতেও । বলে,"আব্বার গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় আম্মা। সুপরিকল্পিত ভাবে আব্বাকে হত্যা করা হয়েছে । "

অন্যদিকে প্রথমে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হলেও এখন তা খুনের অভিযোগে পরিবর্তিত হবে বলে জানিয়েছে শাসন থানার পুলিশ । জানিয়েছে,"পরিবারের তরফে বাকিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । অভিযোগ না নেওয়ার বিষয়টি ঠিক নয় । ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে ৷ "

শাসন, 11 মার্চ : মনুয়া কাণ্ডের ছায়া এবার শাসনে । বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় শওহরকে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ উঠল বিবির বিরুদ্ধে । শাসনের গোলাবাড়ির পুটুরিয়া পূর্ব পাড়ার ঘটনা । পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সিরাজুল হক (35) । ঘটনার পর সিরাজুলের পরিবার শাসন থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে পুলিশ তা নিতে অস্বীকার করে বলে অভিযোগ । পরে জনরোষের চাপে পুলিশ অভিযোগ নিতে বাধ্য হয় । গ্রেপ্তার করা হয় সিরাজুলের বিবি রোজিনাকে । তার বাপের বাড়ির লোকজন ও প্রেমিককে পুলিশ গ্রেপ্তার না করায় তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে মৃতের পরিবারের সদস্যরা । ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ।

পরিবার ও পুলিশ সূত্রে খবর, দত্তপুকুরের যুবক এনসান মোল্লার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল রোজিনার । এনসান পুটুরিয়ার পশ্চিম পাড়ায় একটি সাইকেলের দোকানে কাজ করত । সেখানেই সিরাজুলের শ্বশুরবাড়ি । সেখানে একটি মুদির রয়েছে তাঁর ৷ সেই দোকানে প্রায়ই বসত রোজিনা । পাশাপাশি দোকান হওয়ায় এনসানের সঙ্গে রোজিনার সম্পর্ক তৈরি হয় ৷ তাদের সেই সম্পর্কের কথা জানতে পারে সিরাজুল । এনিয়ে ওই দম্পতির মধ্যে অশান্তি চরমে ওঠে । অভিযোগ, রোজিনার বাপের বাড়ির লোকজনকে জানানো হলেও তারা বিষয়টি মেটানোর পরিবর্তে প্রশ্রয় দেয় । এরপরই গ্রামবাসীদের বিষয়টি জানাতে বাধ্য হয় সিরাজুলের পরিবার ।

man set on fire by his wife
সিরাজুল হক, রোজিনার শওহর

মাসখানেক আগে স্থানীয় একটি ক্লাবঘরে দুই পরিবারকে নিয়ে সালিশি সভা ডাকা হয় । সেখানে এনসানের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদের প্রতিশ্রুতি দেয় রোজিনা । কিন্তু অভিযোগ তারপরও তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল এনসানের ৷ প্রতিবাদ করায় দোকানের সামনেই সিরাজুলকে ব্যাপক মারধর করে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা । মারধরের চোটে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি । অভিযোগ অসুস্থ হওয়ায় তাঁকে ওষুধ খাওয়ানোর নামে বেশ কয়েকটি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয় রোজিনা । ফলে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন সিরাজুল । সেই সুযোগে তাঁর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় রোজিনা । ঘরের মধ্যেই দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে সিরাজুল । অভিযোগ, তাঁকে ওই অবস্থায় ফেলে রেখে ছোটো ছেলে রোহণকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় রোজিনা । এরপর, এলাকার লোকজন কোনওরকমে আগুন নিভিয়ে দগ্ধ সিরাজুলকে নিয়ে যায় বারাসত হাসপাতালে । সেখানে একদিন ভরতি থাকার পর তাঁর অবস্থার অবনতি হয় ৷ তাঁকে কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় । সেখানে প্রায় 26 দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর মঙ্গলবার গভীর রাতে মারা যান তিনি ।

তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়াতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে স্থানীয়রা ৷ প্রত্যেকেই দোষীদের ফাঁসির দাবিতে সরব হয়েছে । এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ,"14 ফেব্রুয়ারি ঘটনা ঘটার পরের দিনই রোজিনা, তার আব্বা জহিরুল হক, ভাই ওহিনুর ও আরিফ, প্রেমিক এনসানসহ বেশ কয়েকজন আত্মীয়ের বিরুদ্ধে শাসন থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যাওয়া হয় । কিন্তু পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে ৷ এরপর জনরোষের চাপে পড়ে দু-দিন বাদে শুধুমাত্র রোজিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিতে বাধ্য হয় পুলিশ । পুলিশ বলেছে, রোজিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি সে শাসন থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে । বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব ৷ "

এদিকে ছেলের মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পরই শোকে ভেঙে পড়েছেন মসলেমা বিবি । বলেন,"আমার ছেলেকে যেভাবে কষ্ট দিয়ে ওরা মেরেছে, তাদেরও আমি একই কষ্ট দেখতে চাই । জহিরুল, রাজু, আরিফ ও বউমা রোজিনার ফাঁসি চাই ৷ " একই সুর শোনা গেছে সিরাজুলের বড় ছেলে সোহেলের গলাতেও । বলে,"আব্বার গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় আম্মা। সুপরিকল্পিত ভাবে আব্বাকে হত্যা করা হয়েছে । "

অন্যদিকে প্রথমে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হলেও এখন তা খুনের অভিযোগে পরিবর্তিত হবে বলে জানিয়েছে শাসন থানার পুলিশ । জানিয়েছে,"পরিবারের তরফে বাকিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । অভিযোগ না নেওয়ার বিষয়টি ঠিক নয় । ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে ৷ "

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.