মধ্যমগ্রাম, 15 মে: রাস্তা নির্মাণের ক্ষেত্রেও এবার আমরা-ওরার ভেদাভেদ। এলাকায় বামপন্থী পরিবারের বসবাস! তাই, ভোট বেশি পেয়েছেন সিপিএম প্রার্থী। সেই কারণেই নাকি দীর্ঘ 28 বছর ধরে উন্নয়ন হয়নি নির্দিষ্ট একটি পাড়ার রাস্তার ৷ উত্তর 24 পরগনার মধ্যমগ্রাম পৌরসভার 10 নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ বঙ্কিমপল্লী এলাকার বাসিন্দাদের এমনই অভিযোগ ৷ যদিও অভিযোগ মানতে নারাজ পৌরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যান ৷
মধ্যমগ্রাম পৌরসভার 10 নম্বর ওয়ার্ড দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের দখলে। দলেরই প্রবীণ নেতা অরবিন্দ মিত্র বেশ কয়েক বছর ধরে এই ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের প্রতীকে জিতে আসছেন। গত পৌর নির্বাচনে তাঁর বিপরীতে লড়াইয়ে নেমে কড়া টক্কর দেন সিপিএমের এরিয়া কমিটির সদস্য সুদীপ্ত চন্দ্র।সামান্য মার্জিনে তৃণমূল প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন তিনি। অভিযোগ, তারপর থেকেই সেখানে উন্নয়নের কাজ থমকে গিয়েছে ৷ সেই বুথেরই 2 নম্বর ফ্রি প্রাইমারি স্কুলের ঠিক পাশেই রয়েছে একটি কাঁচা রাস্তা। আদতে রাস্তার পুরোটাই জঙ্গল ও আগাছায় ভরা ৷ সাপ, পোকামাকড়ের হাত থেকে বাঁচতে বাধ্য হয়ে পাশের কালভার্টের ওপর দিয়েই পারাপার করছেন সেখানকার বাসিন্দারা ৷
এলাকার বাসিন্দা কুন্তলা রায় চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, "30 বছর ধরে এখানে পরিবার নিয়ে বসবাস করছি। তখন থেকেই দেখে আসছি রাস্তা আর পাকা হচ্ছে না। যেহেতু এখানে বামপন্থী পরিবারের বসবাস। সেহেতু পরিকল্পিতভাবে এই রাস্তা পাকা করা হচ্ছে না। বলতে পারেন রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার আমরা। রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে রাস্তা হোক, সেটাই আমরা চাই।"
এলাকার সিপিএম নেতা সুদীপ্ত চন্দ্র অভিযোগ করে বলেন, "পঞ্চায়েত আমলে অনেক লড়াই করে এই রাস্তাটি বের করা হয়েছে। তখন ইটও পড়েছিল। কিন্তু, এখন আর সেসব কিছুই নেই। আমরা মনে করি, রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় থাক। উন্নয়ন উন্নয়নের জায়গায়। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্যই রাস্তাটি পাকা করছেন না তৃণমূল কাউন্সিলর। পাশের প্রায় সমস্ত রাস্তায় কংক্রিট দিয়ে ঢালাই করে দেওয়া হয়েছে।কেবল ব্যতিক্রম এই রাস্তাটি। 28 বছর ধরে পড়ে রয়েছে এই কাঁচা রাস্তাটি ।"
আরও পড়ুন: প্রতিশ্রুতি আর বৃষ্টির প্লাবনে উধাও উন্নয়ন, পাকা রাস্তার অভাবে বিপাকে গ্রামবাসীরা
স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অরবিন্দ মিত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি 'এখনই কিছু বলতে চান না' স্পষ্ট জানিয়ে দেন ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে। তবে পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান প্রকাশ রাহা জানিয়েছেন, তিনি এই বিষয়টি নিয়ে অবগত। শুধুমাত্র কাউন্সিলরের জেদাজেদির জন্য কোনও ওয়ার্ডের মানুষ ভোগান্তিতে পড়ুক, এটা কাঙ্খিত নয়। ফান্ডে টাকা নেই বলে রাস্তার কাজ আটকে থাকবে, এটা হতে পারে না। চেয়ারম্যানকেও বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।
অন্যদিকে, মধ্যমগ্রাম পৌরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ৷ তিনি বলেন,"বামপন্থীরা অভিযোগ করতেই পারে। তবে এইটুকু বলতে পারি, পৌরসভার 28টি ওয়ার্ডেই আমরা ধারাবাহিক ভাবে উন্নয়নের কাজ করে চলেছি । সেখানে কোনও ভেদাভেদ নেই। তা সত্ত্বেও যেহেতু অভিযোগ এসেছে। সেই অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখব আমরা। যদি কাউন্সিলর রাস্তা না করে থাকে, তাহলে পৌরসভা উদ্যোগ নেবে রাস্তা তৈরি করতে।"