বারাসত, 25 মে: ইটিভি ভারতের খবরের জের । অবশেষে ঘুম ভাঙল পুলিশ প্রশাসনের। বারাসতের টালিখোলা এলাকায় বেআইনি বাজি কারবার বন্ধ করতে বুধবার দিনভর ম্যারাথন তল্লাশি অভিযান চালাল পুলিশ। ফলও মিলল হাতেনাতে। তল্লাশি অভিযান চলাকালীন আস্ত একটি বাজি কারখানার হদিশ পেলেন তাঁরা। পুলিশ সূত্রে খবর, সেই কারখানা থেকে 12 টন বাজি ও বাজি তৈরির সামগ্রী মিলেছে। মালিকের খোঁজ অবশ্য মেলেনি। আপাতত বাজির কারখানাটি সিল করে দেওয়া হয়েছে।
গত কয়েকদিনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে একের পর এক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে! প্রাণহানির পরও উত্তর 24 পরগনার বহু জায়গায় এখনও যে রমরমিয়ে বেআইনি বাজি কারবার চলছে তা তুলে ধরেছিল ইটিভি ভারত। নীলগঞ্জের নারায়ণপুর অথবা বারাসতের টালিখোলা থেকে শুরু করে আরিফবাড়ি-সর্বত্র যে অবৈধ বাজির কারবার চলছে সেটা ধরা পড়ছে ইটিভি ভারতের ক্য়ামেরায়। মঙ্গলবারই সেই খবর প্রকাশিত হয়েছে । এর 24 ঘন্টাও কাটার আগেই বারাসত থানার আইসি শুভ্র সান্যালের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী পৌঁছে গিয়েছিল টালিখোলা এলাকায়।
সেখানকার একটি মাঠের ভিতর থেকেই হদিশ মিলল এই আস্ত বাজির কারখানার। তার মালিক নুরুল ইসলাম। স্থানীয় সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি এই বেআইনি কারবারের সঙ্গে জড়িত। এলাকার মানুষ সবকিছু জেনেও এতদিন বিপদের ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি। তবে এবার ভয় কাটিয়ে অনেকেই এনিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। পুলিশ এবং তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের দিকে আঙুল তুলে সরব হয়েছেন তাঁরা। যদিও এনিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি শাসকদলের।
এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা প্রতীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "ইটিভি ভারতকে প্রথমেই ধন্যবাদ জানাব। তারা বেআইনি বাজি কারবার নিয়ে খবর করেছিল বলেই হয়ত চাপে পড়ে পুলিশ এই তৎপরতা দেখাচ্ছে। নইলে বেআইনি বাজি কারবার বন্ধ করার উদ্যোগ নিত না পুলিশ প্রশাসন। টালিখোলাতে যে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ বাজি কারবার চলছে তা আমরা আগেই জানতাম। কিন্তু,আমরা অসহায় ছিলাম। পুলিশ এবং তৃণমূলের যোগসাজশেই এই ধরণের বেআইনি ব্যবসার বাড়বাড়ন্ত। আমরা চাই,নারায়ণপুর এবং টালিখোলা অঞ্চলে বেআইনি বাজি কারবার পুরোপুরি বন্ধ হোক। নইলে কখন কি অঘটন ঘটবে তা কেউ বলতে পারবে না।"
আরও পড়ুন: বজবজে বিস্ফোরণের পর বৈধ বাজি কারখানাগুলির উপর নজরদারির নির্দেশ নবান্নের
পুলিশ সূত্রে খবর, টিনের ছাউনি দেওয়া ওই কারখানার ভিতর বস্তায় থরে থরে সাজানো ছিল বিভিন্ন ধরনের নিষিদ্ধ শব্দবাজি। তা দেখে রীতিমতো চক্ষু চড়কগাছ পুলিশ আধিকারিকদের। সেগুলো পরে বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যাওয়া হয় নিষ্ক্রিয় করার জন্য। বিষয়টি নিয়ে বারাসত জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, "গত কয়েকদিন ধরেই বারাসত জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বেআইনি বাজির বিরুদ্ধে তল্লাশি অভিযান চলেছে। এদিনও বারাসতের টালিখোলাতে নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়েছে। সেখান একটি বাজির গুদামের হদিস মিলেছে ।সেখান থেকে প্রায় 12 টন অর্থাৎ 120 কুইন্ট্যাল বিভিন্ন ধরনের নিষিদ্ধ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সচেতনতার প্রচারেও জোর দেওয়া হয়েছে"।