দেগঙ্গা, 8 মার্চ : দেগঙ্গার যুবক খুনে 24 ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশের জালে দুই অভিযুক্ত (Police Arrest Two People in Deganga Murder Case) । ধৃত সাইফুদ্দিন মোল্লা ও রাকিবুল জমাদারকে জেরা করে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য । ধৃত দু‘জনই মৃত রাহুল মণ্ডলের বন্ধু ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজিবুল মণ্ডল ওরফে রাহুলের খুনের পিছনে পরকীয়ার সম্পর্ক জড়িয়ে রয়েছে । তার জেরেই এই খুন । ধৃত দু'জনের সঙ্গে রাজিবুলের বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল । পরকীয়ার সম্পর্ক মেনে নিতে না পারার কারণেই তারা বন্ধুকে ডেকে এনে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ (Deganga Murder case)।
পুলিশ সূত্রে খবর, রাজিবুল,সাইফুদ্দিন ও রাকিবুল সকলেই দেগঙ্গার কাউকে পাড়ার বাসিন্দা । একই এলাকায় থাকার সুবাদে তিনজনের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল অটুট । কিন্তু সম্প্রতি সেই সম্পর্কে চিড় ধরে। এর পিছনে রয়েছে রাজিবুলের পরকীয়ার সম্পর্ক । দুই বন্ধুর কোনও একজনের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন রাজিবুল । সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার কথা বলা হলেও দুই বন্ধুর কথায় কর্ণপাত করেননি রাহুল।
তখন থেকেই মনে মনে রাগ পুষে রেখেছিল সাইফুদ্দিন এবং রাকিবুল । তারা ঠিক করে রাজিবুলকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে হবে । যেমন ভাবা তেমনই কাজ । রবিবার রাতে মদের টোপ দিয়ে ফোন করে স্থানীয় কলেজের পিছনের মাঠে রাহুলকে ডেকে আনে দু'জনে । সেখানে তিনজনে মদ্যপান করে । মদে বেহুঁশ হয়ে পড়লে ধারালো অস্ত্র দিয়ে রাজিবুলের গলা কেটে দেওয়া হয় । কোপানো হয় তাঁর মুখ এবং ঘাড়েও ।
কাজ হাসিল হয়ে যাওয়ার পর সেখান থেকে সাইফুদ্দিন ও রাকিবুল ফিরে যায় বাড়িতে । পরের দিন অর্থাৎ সোমবার পরিস্থিতি বুঝতে রাকিবুল যায় ঘটনাস্থলে । সবার সঙ্গে কথাও বলে খুনের বিষয়ে । তবে এতকিছুর পরও শেষ রক্ষা হল না । সাইফুদ্দিন এবং রাকিবুলের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় প্রথমে তাদের আটক করে দেগঙ্গা থানায় নিয়ে আসে পুলিশ । সেখানে জেরা করতেই ভেঙে পড়ে দু'জনে । স্বীকার করে নেয় খুনের কথা ।
তারপরই গ্রেফতার করা হয় ওই দু'জনকে । এদিকে ধৃত সাইফুদ্দিন ও রাকিবুলকে মঙ্গলবার দুপুরে বারাসত আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: Minor Girl Rape in Sagar : সাগরে নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার অভিযুক্ত
প্রসঙ্গত,সোমবার সকালে দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা শহিদুল্লাহ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের পিছন থেকে রাজিবুল মণ্ডল( 21)ওরফে রাহুলের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয় । পরিকল্পনা করে খুনের অভিযোগ তুলে সরব হন পরিবারের লোকেরা । কেউ ভাবেননি হত্যাকাণ্ডের পিছনে পরকীয়ার সম্পর্ক লুকিয়ে রয়েছে । দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করতেই সামনে এল আসল তথ্য ।