বারাসত, 31 ডিসেম্বর : আধার কার্ড হোক, কিংবা ভোটার কার্ড ৷ অথবা স্কুল, কলেজ, সরকারি দফতরের প্রয়োজনীয় নথি ৷ দাবি মতো টাকা দিলেই এসবের জাল বা ভুয়ো সংস্করণ তৈরি করে তা তুলে দেওয়া হত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের হাতে ৷ ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে পাকড়াও করল উত্তর 24 পরগনার বারাসত থানার পুলিশ (Barasat Fake Documents Arrest) ৷ ধৃতের নাম সাগর দেব ৷ শুক্রবার দুপুরে বারাসতের বনমালীপুর এলাকা থেকে তাঁকে পাকড়াও করা হয় ৷ সেইসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে জাল নথিও বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ ৷
আরও পড়ুন : Fake Pharmacist : জাল নথি জমা দিয়ে বারাসতে গ্রেফতার চার ভুয়ো ফার্মাসিস্ট
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই জাল নথি ও ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরির কারবার চালাচ্ছেন সাগর ৷ মাস তিনেক আগে এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সমরেশ বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয় ৷ জেরায় পুলিশকে সমরেশ জানান, এই চক্রের পান্ডা সাগর দেব ৷ সমরেশ নিজেকে তাঁর সহকারী বলেও দাবি করেন ৷ এরপরই সাগরের খোঁজে নানা জায়গায় তল্লাশি শুরু করে দেয় পুলিশ ৷ কিন্তু, বিপদ বুঝে আগেই গা-ঢাকা দেন তিনি ৷
এই পরিস্থিতিতে পুলিশের কাছে খবর আসে বারাসতের বনমালীপুরে ঘর ভাড়া নিয়েছেন সাগর ৷ সেখানেই সস্ত্রীক বসবাস করছেন তিনি ৷ শুক্রবার দুপুরে সেই ভাড়া বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ ৷ হাতেনাতে পাকড়াও করা হয় সাগরকে ৷ বাজেয়াপ্ত করা হয় অসংখ্য ভুয়ো পরিচয়পত্র ও জাল নথি ৷ সেইসঙ্গে, বেশ কিছু জাল স্ট্যাম্প পেপারও উদ্ধার করা হয় ৷ পুলিশের দাবি, বেআইনিভাবে সীমান্ত পেরিয়ে যে বাংলাদেশিরা ভারতে ঢুকতেন, তাঁরাই সাগরের আসল গ্রাহক ৷ এই অনুপ্রবেশকারীদের ভুয়ো নথি তৈরি করে দিতেন তিনি ৷ যাতে তাঁরা পরিচয় ভাঁড়িয়ে ভারতেই থাকতে পারেন ৷ এর বিনিময়ে অনুপ্রবেশকারীদের কাছ থেকে মোটা টাকা আদায় করতেন সাগর ৷
আরও পড়ুন : নিউটাউনে জাল নথি তৈরির চক্রের হদিশ, গ্রেপ্তার ২
গোটা ঘটনায় হতবাক সাগরের বাড়িওয়ালা তারকনাথ দে ৷ তাঁর দাবি, সাগর যে এত কাণ্ড করে বেড়াচ্ছেন, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি তিনি ৷ তাঁকে সাগর বলেছিলেন, তিনি কাপড়ের ব্যবসায়ী ৷ সঙ্গে সাগরের স্ত্রীও থাকতেন ওই বাড়িতে ৷ বাড়িওয়ালার দাবি, ভাড়াটিয়া দম্পতির আচরণে কখনও কোনও সন্দেহ হয়নি তাঁর ৷ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বারাসত থানার পুলিশ ৷ খতিয়ে দেখা হচ্ছে সাগরের স্ত্রীর ভূমিকাও ৷