বারাসত, 2 মে : কোরোনা সংক্রমণের নিরিখে উত্তর 24 পরগনাকে রেড জ়োন হিসেবে চিহ্নিত করেছে রাজ্য সরকার । কেন্দ্রের তালিকাতেও রেড জ়োনে এই জেলা । তাই নির্দিষ্ট নিয়মবিধি মেনে চলার নির্দেশিকা জারি হয়েছে । কিন্তু সেসবের তোয়াক্কা না করেই গতকাল উত্তর 24 পরগনার জেলা সদর বারাসতের মাছের আড়তে ভিড় করতে দেখা গেল হাজার হাজার মানুষকে । মাছের আড়তের এই ছবি দেখে রীতিমতো আঁতকে উঠেছেন অনেকেই ।
চাঁপাডালি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এই আড়ত থেকে বারাসতের বিভিন্ন বাজারে পাইকারি মাছের সরবরাহ হয় । অনেকে খুচরো মাছও কেনে এখান থেকে । ভিড় থেকে সংক্রমণের আশঙ্কায় কয়েকদিন বন্ধ রাখা হয়েছিল মাছের এই আড়ত । কিন্তু গতকাল ফের খুলে দেওয়া হয় মাছের আড়ত । ফলে মাছ কিনতে রীতিমতো হিড়িক পড়ে যায় সেখানে । সামাজিক দূরত্ব দূরের কথা । অনেকের মুখে মাস্কও দেখা যায়নি । অথচ আড়তেই ক্যাসেট বাজিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সতর্কতামূলক বার্তা প্রচার করা হয় । কিন্তু তাতেও হুঁশ ফেরেনি মানুষের । শেষে, আড়ত খোলার দু'ঘণ্টা পর তা বন্ধ করে দেওয়া হয় । তবে, এই ঘটনায় ইতিমধ্যে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । প্রশ্ন উঠছে, নিয়ম লঙ্ঘন করে কী করে মাছের আড়ত খোলা হল ? সেইসময় প্রশাসনই বা ছিল কোথায় ? যদিও প্রশাসনের তরফে কোনও প্রশ্নেরই উত্তর পাওয়া যায়নি ।
এই বিষয়ে সাফাই দিতে গিয়ে বিভিন্ন বাজারে মাছের আকাল দেখা দেওয়ার কারণকেই তুলে ধরেন বারাসত মৎস্য আড়তদার সমিতির সম্পাদক সুশান্ত চক্রবর্তী । তিনি বলেন, "এত মানুষের সমাগম হওয়ায় প্রশাসনের অনুরোধে আমরা কয়েকদিন মাছের আড়ত বন্ধ রেখেছিলাম । তার ফলে বারাসতের বিভিন্ন ছোটো-বড় মাছের বাজারে আকাল দেখা দিয়েছিল । অনেকেই মাছের আড়ত খোলার আবেদন জানাচ্ছিলেন । সেই জন্যই কয়েক ঘণ্টার জন্য আড়ত খোলা হয়েছিল । ভিড় এড়ানোর জন্য মাইকে ক্যাসেট বাজিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কোরোনা সতর্কতামূলক বার্তা প্রচার করা হয় । কিন্তু মানুষ সচেতন না হওয়ায় আমরা আড়ত বন্ধ করে দিই ।"
বিষয়টি নিয়ে বারাসত পৌরপ্রধান সুনীল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "মাছের আড়ত খোলা হয়েছে কি না তা আমার জানা নেই । সেই জন্য বিষয়টি নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না ।"
উত্তর 24 পরগনাকে রেড জ়োন থেকে অরেঞ্জ জোনে নিয়ে আসার জন্য জেলা প্রশাসনকে 14 দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । কিন্তু তারপরও সংক্রমণ বাড়ছে জেলায় । তার মধ্যে মাছের আড়তে এত মানুষের ভিড় । ফলে উত্তর 24 পরগনাকে অরেঞ্জ জ়োনে আনার প্রক্রিয়া ধাক্কা খেতে পারে বলে মনে করছে অনেকে ।