দেগঙ্গা, 8 এপ্রিল : ধার নেওয়া 20 হাজার টাকা শোধ না দেওয়ার কারণেই মাটিয়ার যৌনকর্মীকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে (deganga Sex worker murder)। ঘটনার মূল অভিযুক্ত জোহর আলি মণ্ডলকে জেরা করে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের হাতে । পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাটিয়ার নিষিদ্ধ পল্লিতে দীর্ঘদিন ধরে যৌনকর্মীর কাজ করতেন ওই মহিলা । সেখানে যাতায়াতের সুবাদে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে দেগঙ্গার জোহর আলির । অভিযুক্তের দাবি, তার কাছ থেকে 20 হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন ওই যৌনকর্মী । ধারের টাকা বারবার চাওয়া সত্ত্বেও কিছুতেই দিচ্ছিলেন না ৷ এরপরই খুনের ছক কষা হয় বলে পুলিশি জেরায় কবুল করেছে ধৃত ।
ধৃতকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ঘটনার দিন অর্থাৎ 27 মার্চ রাতে টোপ দিয়ে ওই যৌনকর্মীকে নিয়ে আসা হয় দেগঙ্গার নন্দীপাড়া কুচেমোড়া এলাকায় । সেখানে আগে থেকেই তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিল জোহর । এরপর দু'জনে মিলে চলে যায় কুচেমোড়ার একটি পটল ক্ষেতে । সেখানেই একসঙ্গে মদ্যপান করেন তারা । নেশার ঘোরে ওই যৌনকর্মীকে ধর্ষণ করে বলেও জানিয়েছে ধৃত । পরে, পরিকল্পনা মাফিক শ্বাসরোধ করে খুন করে ওই যৌনকর্মীকে ৷ খুনের পর সেখান থেকে চম্পট দেয় জোহর । পরের দিন অর্থাৎ 28 মার্চ ওই পটল ক্ষেত থেকেই পুলিশ মহিলার দেহ উদ্ধার করে ।
দেহের পাশ থেকে মেলে মদের বোতল, গ্লাস এবং রক্তমাখা বেশকিছু জিনিসপত্র । প্রথমে ওই মহিলার পরিচয় জানতে পারছিল না পুলিশ । অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবেই খুনের তদন্ত শুরু হয় । এরপর ধীরে ধীরে পুলিশি তদন্তে উঠে আসে একের পর এক তথ্য। জানা যায়, অজ্ঞাত পরিচয় মহিলার নাম ও পরিচয় । ওই মহিলার আসল বাড়ি নদিয়ার ধানতলায় । মাটিয়ার নিষিদ্ধ পল্লিতে যৌনকর্মীর কাজ করতেন তিনি । তবে, সেখানে না থেকে বারাসতের ভাড়া বাড়িতে থাকতেন ওই মহিলা ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মহিলার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এবং ফোনের কললিস্ট দেখে জোহর আলির নাম জানতে পারেন তদন্তকারীরা। খুনের দিন যে নম্বর থেকে ওই যৌনকর্মীর কাছে ফোন এসেছিল সেটিও ছিল জোহর আলির। এই দুয়ে দুয়ে এক করে তদন্তকারীরা নিশ্চিত হন যে নৃশংস এই খুনের সঙ্গে জড়িত তিনিই। এরপরই হন্যে হয়ে শুরু হয় তার খোঁজ। কিন্তু, কিছুতেই জোহরের হদিশ মিলছিল না। শেষে দশ দিনের মাথায় বুধবার রাতে দেগঙ্গার বাড়ি থেকে পুলিশ পাকড়াও করে খুনের মূল আসামি জোহরকে। এদিকে খুনের ঘটনার সঙ্গে আর কারও যোগ আছে কিনা, তা ধৃতকে জেরা করে জানার চেষ্টা করছে তদন্তকারীরা।