বেলঘরিয়া, 16 মে : পেশির বিরল রোগে আক্রান্ত ছেলে সপ্তাংশু। যত দিন যাচ্ছে পেশি তত দুর্বল হয়ে যাচ্ছে তার। বেঁকে যাচ্ছে ডানদিকের শিরদাঁড়া। যার প্রভাবে আঘাত পড়ছে ফুসফুসের ওপর। দ্রুত অস্ত্রোপচার না হলে যে কোনও সময় ফুসফুসের স্বাভাবিক ক্রিয়াকর্ম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যে কোনও মুহুর্তে ঘটতে পারে অঘটনও। তাই ছেলেকে বিরল এই রোগ থেকে বাঁচাতে কাতর আর্জি জানাচ্ছেন মা (mother request to save her son from rare muscle disease) ৷
চোখের সামনে এভাবে ছেলেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে যেতে দেখেও কিছুই করে উঠতে পারছেন না সপ্তাংশু-র মা সোমা ঘোষ। কারণ, চিকিৎসার ব্যয়বহুল খরচ জোগাড় করার অর্থ কিংবা সামর্থ্য কোনওটায় নেই পরিবারের। তাই, একমাত্র ছেলেকে বাঁচাতে সমাজের কাছে করুণ আর্তি বিপাকে পড়া মায়ের। কোনও সহৃদয় ব্যাক্তি এগিয়ে এলে তবেই বাঁচানো সম্ভব বিরল রোগে আক্রান্ত সপ্তাংশু-কে। সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঘোষ পরিবার।
আরও পড়ুন : সাগর দত্ত হাসপাতালে বাড়ল শয্যা সংখ্যা
এই রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ঠিকমতো হাঁটা-চলা পর্যন্ত করতে পারে না সপ্তাংশু। বেশিক্ষণ বসে-ও থাকতে পারে না। দু'ঘণ্টার বেশি কখনও বসে থাকলে পিঠে অসহ্য যন্ত্রণা হয় তার। বসতে কিংবা উঠতে গেলে তারজন্য-ও প্রয়োজন হয় অন্যের সহযোগিতা। নিজে থেকে কোনও কাজ করতে পারে না সে। এই রোগের জেরে শুধু সপ্তাংশু-র শারীরিক গঠনেই মারাত্মক প্রভাব পড়েছে এমনটা নয়, প্রভাব পড়েছে তার পড়াশোনার ক্ষেত্রেও। পিঠের যন্ত্রণায় মাঝপথেই স্কুলের পঠনপাঠন ছেড়ে চলে আসতে হয় তাকে। কোনওদিনও স্কুলের পুরো ক্লাস করতে পারেনি সে।
পরিবার সূত্রে খবর, সপ্তাংশু-র বাবা বেঁচে থাকাকালীন তাঁর চিকিৎসা চলত সাধ্যমতো। কিন্তু, হঠাৎই তার বাবার মৃত্যুতে বিপাকে পড়েছে পরিবার। অর্থের অভাবে এখন বন্ধ হতে বসেছে এই কিশোরের চিকিৎসা। যেভাবে দিনদিন তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে, তাতে এই মুহুর্তে অস্ত্রোপচার করা ছাড়া আর কোনও গতি নেই। চিকিৎসারা সেই কথাই বলে দিয়েছে পরিবারের লোকজনকে। তারজন্য দরকার বিপুল টাকা। সেই টাকা জোগাড় হবে কীভাবে তা ভেবেই কূল-কিনারা পাচ্ছেন না তারা। তাই, বিপদের সময়ে যে কাউকেই পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানিয়েছেন সপ্তাংশু-র মা সোমা ঘোষ।
আরও পড়ুন : আইআইএম জোকার ক্যাম্পাসে করোনার হানা, আক্রান্ত 28 পড়ুয়া
তিনি বলেন,"ওর যখন ছ'মাস বয়স, তখন থেকেই শারীরিক গঠনের পরিবর্তন হতে শুরু করে। এখন তো শিরদাঁড়া ক্রমশ বেঁকে যাচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালের এক নামী চিকিৎসক পরামর্শ দিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব সপ্তাংশু-র অস্ত্রোপচার করা দরকার। অপারেশন এবং আনুষাঙ্গিক মিলিয়ে প্রায় 17 লক্ষ টাকা খরচ হবে তাতে। কিন্তু, কোথা থেকে জোগাড় করব বিপুল এই টাকা? সামর্থ্য নেই যে আমাদের। যদি কোনও সহৃদয় ব্যাক্তি এই বিপদের সময় পাশে এসে দাঁড়ায়, তাহলে খুব উপকার হয়। অন্যের আর্থিক সহযোগিতা ছাড়া আমার ছেলেকে বাঁচানো সম্ভব নয় ৷ তাই, আমার করুণ আর্তি আমার ছেলেকে বিরল এই রোগ থেকে বাঁচান ৷"