দেগঙ্গা, 4 সেপ্টেম্বর: ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে ফের মৃত্যু হল বাংলার এক পরিযায়ী শ্রমিকের (Migrant Worker Death)। নিহতের নাম ইমরান হোসেন (21)। কর্মরত অবস্থায় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে ওই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ শনিবার সন্ধ্যায় এই খবর দেগঙ্গার ফাজিলপুর গ্রামে পৌঁছাতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতের পরিবারের লোকেরা ।
উত্তর 24 পরগনার দেগঙ্গার যুবক ইমরান হোসেন কাজের তাগিদে পাড়ি দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রে ৷ রত্নাগিরিতে একটি বরফের কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি । সেখানেই কাজ করতে গিয়ে কোনওভাবে বিদ্যুৎপৃষ্ট হন ইমরান । বিদ্যুতের শক খেয়ে সংজ্ঞা হারায় সে । তড়িঘড়ি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি তাঁকে । ইমরানকে মৃত বলে তৎক্ষণাৎ ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা ।
আরও পড়ুন: জয়পুর থেকে বাড়ি ফেরার পথে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ পরিযায়ী শ্রমিক ! দুশ্চিন্তায় পরিবার
জানা গিয়েছে, দেগঙ্গার ফাজিলপুর গ্রামে এক চিলতে মাটির বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে বসবাস ইমরানের । বয়সের কারণে বাবা আবু বাশার সেভাবে আর কাজ করতে পারেন না । কোনও রকমে সংসার চলত পরিবারের । পরিবারে আর্থিক কষ্ট দূর করতেই কয়েক মাস আগে মহারাষ্ট্রের ওই বরফ কারখানায় শ্রমিকের কাজে যোগ দেন ৷ রোজগারের আয় থেকে কিছু টাকা দেগঙ্গার গ্রামের বাড়িতে পাঠাচ্ছিলেন ইমরান । আশা ছিল, মাটির বাড়ি পাকা করার । কিন্তু তার আগেই এক লহমায় সবকিছু শেষ । তাঁর দেহ মহারাষ্ট্রে থেকে এই রাজ্যে নিয়ে আসতে ইতিমধ্যে তৎপর হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ।
এই বিষয়ে নিহত যুবকের বাবা আবু বাশার বলেন, "গত বৃহস্পতিবার কারখানার দোতলায় উঠে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয় ইমরান । তারপর আর জ্ঞান ফেরেনি ছেলের । শনিবার সন্ধ্যার দিকে কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়, ইমরান বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছে । একথা শুনে আমাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার জোগাড় । এখন কীভাবে সংসার চলবে সেটাই ভাবছি ৷"
আরও পড়ুন: প্রত্যাখ্যাত স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ! বিনা চিকিৎসায় পঙ্গুত্বের মুখে মালদার পরিযায়ী শ্রমিক
এদিকে মর্মান্তিক এই ঘটনার খবর পেয়ে শনিবার রাতে নিহতের বাড়িতে ছুটে যান উত্তর 24 পরগনা জেলাপরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা একেএম ফারহাদ । নিহতের পরিবারকে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি পরিবারের পাশে সবরকমভাবে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি । অন্যদিকে, নিহতের পরিবারকে এগারো লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে আর্থিকভাবে সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ ।