বারাসত , 28 মার্চ : কোরোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে চলছে লকডাউন । তার জেরে বাড়ি ফিরতে না পেরে শাসনের সন্ডালিয়া গ্রামেই আটকে রয়েছেন বিহারের ৬০ জন শ্রমিক। এখানেই কম্পিউটার চালিত এমব্রয়ডারি কারখানায় কাজ করেন ভিন রাজ্যের ওই শ্রমিকরা । লকডাউন জারি হওয়ায় আপাতত সেই কারখানা এখন বন্ধ । বাড়ি ফিরতে চাইলেও যানচলাচল বন্ধ থাকার কারণে সে রাস্তাও বন্ধ । ফলে,একপ্রকার ঘরবন্দী হয়েই দিন যাপন করতে হচ্ছে তাঁদের । একদিকে কোরোনা আতঙ্ক ও অন্যদিকে পরিবারের চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে বিহার থেকে কাজে আসা ওই সমস্ত শ্রমিকদের । তাঁরা চাইছেন প্রশাসন তাঁদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করুক ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,বিহারের পশ্চিম চম্পারণ জেলায় এই শ্রমিকদের বাড়ি । প্রায় পাঁচ বছর ধরে এরা শাসনের সন্ডালিয়া গ্রামে কম্পিউটার চালিত এমব্রয়ডারি কারখানায় কাজ করছেন । তবে,সেই কারখানা আপাতত বন্ধ রাখতে হয়েছে লকডাউনের জারি হওয়ার কারণে । কারখানা বন্ধ থাকায় কাজও এখন নেই তাঁদের । হাতে থাকা টাকাপয়সাও ফুরিয়ে এসেছে । তবে,তাঁদের এই দুঃসময়ে এগিয়ে এসেছেন কারখানার মালিক মহম্মদ নিজামুদ্দিন । শ্রমিকদের থাকা ও খাওয়ার সবরকমের ব্যবস্থা করেছেন তিনি । আটকে থাকা রামন যাদব,পিন্টু মুখিয়ারা বলেন,"কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা আমাদের জানা নেই । কিন্তু,বাড়ি ফিরতে না পারায় পরিবারও উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে । আমরাও পরিবার কথা ভেবে যথেষ্ট চিন্তায় রয়েছি । পরিবার বলছে দ্রুত বাড়ি ফিরে আসার জন্য ।" ওই শ্রমিকরা আরও বলেন,"রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়া শ্রমিকদের ফেরাতে ইতিমধ্যে প্রশাসন উদ্যোগী হয়েছে । তাই স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন,আমাদের ঘরে ফেরার ব্যবস্থা করা হোক ।"
এদিকে,বিষয়টি নিয়ে বারাসত ২ নম্বর ব্লকের BDO অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,"ওই শ্রমিকদের কীভাবে বাড়িতে ফেরত পাঠানো যায়,সে বিষয়ে জেলাশাসককে অবগত করা হয়েছে । এখনও পর্যন্ত তাঁর কাছ থেকে কোনও নির্দেশ আসেনি । নির্দেশ এলেই সেইমতো কাজ করা হবে ৷"
অন্যদিকে,স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ও তৃণমূল নেতা ইফতিকারউদ্দিন বলেন,"ওই শ্রমিকদের আটকে থাকার খবর আমার জানা নেই । খোঁজ নিয়ে দেখব । তাঁরা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারে,তার চেষ্টা করা হবে ৷" সবমিলিয়ে,এই রাজ্যে আটকে পড়া বিহারের ৬০ জন শ্রমিককে বাড়ি ফেরাতে প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয় কি না,এখন সেটাই দেখার।