বারাসত, 13 জুন: অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের বার্তাই সার! বিরোধীদের মনোনয়নে ফের বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসকদলের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় ! তৃণমূলের হাতে আইএসএফের এক মহিলা প্রার্থীও আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ। হুমকি এবং দফায় দফায় অশান্তির জেরে শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন না তুলেই বিডিও অফিস থেকে ফিরে যেতে হয় পাপিয়া বিবি নামে ওই আইএসএফ প্রার্থীকে। ঘটনা ঘিরে মঙ্গলবার রীতিমতো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে উত্তর 24 পরগনার বারাসত 2 নম্বর ব্লক বিডিও অফিস চত্বর।
ঘটনার পরই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন আক্রান্ত ওই আইএসএফ প্রার্থী। তাঁর অভিযোগ, "পুলিশের সামনেই এই ঘটনা ঘটলেও তাঁরা এগিয়ে আসেননি সাহায্যের জন্য। উলটে, আইএসএফ সমর্থকরা সহযোগিতার জন্য এগিয়ে এলে তাঁদেরই সরিয়ে দেওয়া হয় বিডিও অফিস চত্বর থেকে।" এই ঘটনার মধ্য দিয়ে অভিষেকের সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়ার দাবি ঘিরে আবারও বড়সড় প্রশ্ন উঠে গেল !
24 ঘন্টা আগেই উত্তর 24 পরগনা জেলা সফরে এসে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে জেলার মন্ত্রী, বিধায়ক এবং সাংসদদের কড়াবার্তা দিয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। দলের গোপন বৈঠকে জেলা নেতাদের স্পষ্ট বার্তা দিয়ে তিনি বলেছেন, "বিরোধীদের মনোনয়নে কোনও রকম বাঁধা সৃষ্টি কিংবা জুলুমবাজি করা যাবে না। তাঁদের মনোনয়নের ব্যবস্থা করতে হবে দলীয় নেতাদেরই। কারোর বিরুদ্ধে কোনও জুলুমবাজির অভিযোগ এলেই দল থেকে বহিষ্কার করা হবে তাঁকে।"
কিন্তু, অভিষেকের সেই বার্তার 24 ঘন্টাও কাটল না! ভোট প্রক্রিয়ার চতুর্থ দিনে বিরোধীদের মনোনয়নে সেই বাঁধা, অশান্তির অভিযোগ এল বারাসত 2 নম্বর ব্লকের বাগবান্দা সাইবেড়িয়া এলাকা থেকে। জানা গিয়েছে, এদিন দুপুর বারোটা নাগাদ সিপিএম এবং আইএসএফ প্রার্থীদের একাংশ জোটবদ্ধ হয়ে মনোনয়ন তুলতে যান বারাসত 2 নম্বর ব্লক বিডিও অফিসে। গণ্ডগোল এড়াতে এদিনও বিডিও অফিস এবং তার আশপাশে কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করেছিল প্রশাসন। তা সত্ত্বেও রোখা যায়নি অশান্তি। বিরোধীদের মনোনয়নে বাঁধা, হুমকি, মারধর কিছুই বাদ গেল না। যা ঘিরে সরগরম হয়ে ওঠে বিডিও অফিস চত্বর।
আরও পড়ুন: রণক্ষেত্র ভাঙড়ে আরাবুলের ছেলের গাড়ি থেকে উদ্ধার বোমা
এদিকে, তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন আইএসএফ প্রার্থী পাপিয়া বিবি। তিনি বলেন, "আমার বাড়ি শাসনের কীর্তিপুর দু'নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। এবারে আইএসএফের তরফে পঞ্চায়েত সমিতির আসনে প্রার্থী করা হয়েছে। সেই কারণে বিডিও অফিসে এসেছিলাম মনোনয়নপত্র তুলতে। কিন্তু, তৃণমূল নেতা রবিউল ইসলাম ও তাঁর দলবল ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় মাটিতে। বাঁধা দেওয়া হয় মনোনয়ন তুলতেও। ওরা তো পুলিশের সামনেই জমায়েত করে রয়েছে! কি করল পুলিশ? দেখলেন না।" যদিও ঘটনায় শাসকদলের কারোর প্রতিক্রিয়া মেলেনি ৷