স্বরূপনগর, 6 জুন : স্রেফ কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়া এবং গায়ের রং কালো হওয়ার অপরাধে যুবতীকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে । মৃত বধূর নাম বনানী দাস (27) । ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর 24 পরগনার স্বরূপনগরে । স্বামী গৌতম দাস, শাশুড়ি আরতি দাস-সহ শ্বশুরবাড়ির বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে স্বরূপনগর থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার বাবা মোহন দাস । ঘটনার পর থেকেই পলাতক শ্বশুরবাড়ির সকলে । অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ ।
বনানীর বাপের বাড়ি গোবরডাঙার নতুনপাড়ায় । আট বছর আগে স্বরূপনগরের দামহাটি বকুলতলার গৌতম দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর । গায়ের রং কালো হওয়ায় বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির চক্ষুশূল হন বনানী । শুরু হয় অত্যাচার । মাঝে মাঝেই বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার দাবি করা হত তাঁর শ্বশুরবাড়ির তরফে ৷ তা না হলেই জুটত মারধর । এসবের মধ্যেই আবার পরপর দু'টি মেয়ে হয়ে যাওয়ায় অত্যাচার আরও বাড়ে । শিশুকন্যাদের একজনের বয়স 5 এবং অন্যজনের বয়স 2 বছর ৷ শনিবার রাতেও এসব নিয়ে অশান্তি শুরু হয় ৷ বনানী তার প্রতিবাদে করায় স্বামী, শাশুড়ি, ভাসুর, দেওর এবং জা মিলে তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করে ৷ তারপর শ্বাসরোধ করে খুন করে ঘরের সিলিংয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় দেহ ৷ পরে বনানীর বাপেরবাড়িতে খবর দিয়ে জানানো হয় তাঁদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছে ।
খবর পেয়ে ছুটে আসেন বনানীর বাপেরবাড়ির লোকজন ৷ দেখেন, তাঁদের মেয়ের শরীরে মারধরের চিহ্ন স্পষ্ট । গলায় কালশিটে দাগও রয়েছে । এতেই সন্দেহ বাড়ে পরিবারের । রাতেই বিষয়টি জানানো হয় স্বরূপনগর থানায় । পুলিশ দেহ উদ্ধার করে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠায় ময়নাতদন্তের জন্য ।
বনানীর মামা অসীম সরকার বলেন, "গায়ের রং কালো হওয়ায় বাপেরবাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য প্রায়ই মারধর করা হত ভাগ্নিকে । দুই সন্তান এবং সংসারের কথা ভেবে তখন আমরা থানায় অভিযোগ জানাইনি ৷ শুধু গায়ের রং কালো হওয়ার জন্য স্বামী, শাশুড়ি, দেওর, ভাসুর সকলে মিলে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে । আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি ৷ দোষীদের যেন কঠোর শাস্তি হয় ৷" রবিবার সকালে মৃতার পরিবার স্বরূপনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ৷ তদন্তে নেমেছে পুলিশ ।
আরও পড়ুন : অপহৃতাকে প্রেমিকের বাড়ি থেকে উদ্ধারে চলল গুলি, জখম তিন পুলিশকর্মী