ETV Bharat / state

Duttapukur Blast: দত্তপুকুরে বাজি কারবারের বাম আমলে বীজ রোপন, তৃণমূল জামানায় বাড়বাড়ন্ত, দাবি স্থানীয়দের - বাজি কারবারের বাম আমলে বীজ রোপন

বাম আমলে অবৈধ বাজি কারবারের বীজ রোপন হয়েছিল দত্তপুকুরের ইছাপুর-নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের একাধিক এলাকায় । তৃণমূল আমলে তা মহীরূপে পরিণত হয়েছে । এমনটা বলছেন স্থানীয়রাই ।

crackers business in Duttapukur
নারায়ণপুরে বাজি কারবার
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 4, 2023, 7:04 PM IST

দত্তপুকুরে বাজি কারবারের ইতিহাস

দত্তপুকুর, 4 সেপ্টেম্বর: দত্তপুকুরের নারায়ণপুর, নামটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাজি কারবারের পুরনো ইতিহাস ৷ বাম আমলে এখান থেকেই বীজ রোপন হয়েছিল বাজির কারবারের । সেই সময় একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বাজি তৈরি এবং বিক্রি সীমাবদ্ধ থাকলেও পরবর্তীতে তা ছড়িয়ে পড়ে অন্যত্র । বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর বেরুনান পুকুরিয়া, মোচপোল, কাঠুরিয়ার মতো যে সমস্ত এলাকাগুলি নিয়ে এখন চর্চা চলছে, তার পিছনেও রয়েছে নানান তথ্য । অভিযোগ, ওই সমস্ত এলাকায় বাজি কারবার মহীরূপে পরিণত হয়েছে তৃণমূল আমলেই ।

তবে একদিনে নয়, পুলিশ প্রশাসন এবং শাসকদলের একাংশের মদতে তার বিস্তার ঘটেছে ধীরে ধীরে । বিস্ফোরণের পর এমনই অভিযোগ উঠে এসেছিল স্থানীয়দের তরফ থেকে । স্থানীয়রাই বলছেন, নারায়ণপুর-সহ ওই সমস্ত এলাকার যাবতীয় বাজি কারবারই বেআইনি । কোনও বৈধ অনুমতিই নেই, তা সত্ত্বেও দিনের পর দিন মাসোয়ারা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের একাংশ বৈধতার লাইসেন্স দিয়ে গিয়েছে অবৈধ বাজি কারবারে । যার ফলস্বরূপ এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ । পরিণতি, ন'জন মানুষের প্রাণহানি । ক্ষতিগ্রস্ত হল একাধিক বসতবাড়ি ।

এ নিয়ে একে অপরের ঘাড়ে দায় ঠেলাঠেলিতে ব‍্যস্ত শাসক ও বিরোধী উভয়ই । কিন্তু,মোচপোল গ্রামে এত বড় বিস্ফোরণের পর আদৌও কি অবৈধ বাজি কারবার বন্ধ হবে? নাকি পুলিশের ধরপাকড়ের হাত থেকে বাঁচতে বাজি কারবারিরা কিছুদিনের জন্য নিজেদের ব‍্যবসা গুটিয়ে রাখবে? অথবা পরিস্থিতি থিতিয়ে গেলে আবারও নতুন উদ‍্যমে চালু হয়ে যাবে বেআইনি বাজি কারবার? বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর এমনই সব প্রশ্ন উঁকি মারতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে ।

আরও পড়ুন: মোচপোল যেন জতুগৃহ! কেরামতের আরও একটি রাসায়নিক ভর্তি গুদামের হদিশ মিলল

বিস্ফোরণের অতীত ইতিহাসও তাই বলছে । নারায়ণপুরে বাজি গুদামে বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর পুলিশের তৎপরতা । বেআইনি বাজি গুদামে হানা দিয়ে প্রচুর বাজি বাজেয়াপ্ত, ধরপাকড় সবই দেখেছিল সেখানকার মানুষ । কিন্তু,পরিস্থিতি থিতিয়ে যেতে না যেতেই ফের সেখানে চালু হয়ে যায় অবৈধ বাজি কারবার । শুধু কী নারায়ণপুর ! তার পাশে বেরুনান পুকুরিয়া,মোচপোল-সহ বেশকিছু এলাকাতেও রমরমিয়ে শুরু হয়ে যায় বেআইনি বাজির কারবার । তার প্রকৃষ্ট উদাহরণই হল মোচপোল গ্রামে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ।

নারায়ণপুর,বেরুনান পুকুরিয়া,মোচপোল,কাঠুরিয়া । এই সমস্ত অঞ্চলগুলি ইছাপুর-নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত । দীর্ঘ 15 বছরেরও বেশি সময় ধরে এই পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল । সম্প্রতি যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়ে গেল তাতেও কিন্তু এই পঞ্চায়েতে একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে শাসকদলেরই । যদিও,মোচপোল গ্রামে যে জায়গায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে সেই 21 নম্বর বুথে এবার জয়ী হয়েছেন আইএসএফ প্রার্থী । ফলে বিস্ফোরণ কাণ্ডের দায় নিয়ে তরজায় জড়িয়েছে আইএসএফ-তৃণমূল, এই দুই রাজনৈতিক দলই ।

প্রথম থেকেই তৃণমূল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট(আইএসএফ)-এর ঘাড়ে দোষ চাপাতে কোনও কসুর রাখেনি । যদিও পালটা আইএসএফ নেতৃত্ব বিস্ফোরণের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব শাসকের ঘাড়েই ঠেলেছে । তবে যাই হোক না কেন ইছাপুর-নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় থাকা তৃণমূল কিন্তু নিজেদের দায় এড়াতে পারে না । এমনটাই বলছেন স্থানীয়দের একাংশ । কারণ, যে নারায়ণপুর থেকে অবৈধ বাজি কারবারের হাতেখড়ি হয়েছিল সেখানেও বছর চারেক আগে বিস্ফোরণ ঘটেছিল । সেবার বেআইনি বাজি গুদামে বিস্ফোরণে ঝলসে মৃত্যু হয়েছিল দু'জনের । তারও আগে মজুত বাজিতে আগুন লেগে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল এই নারায়ণপুরেই । ফলে বাজি বিস্ফোরণেরও পুরনো ইতিহাস রয়েছে সেখানে ।

আরও পড়ুন: বিস্ফোরণস্থলে এনআইএ, আইএসএফের ঘাড়েও দোষ চাপালেন পুলিশ সুপার

সূত্রের খবর, নারায়ণপুরে প্রথমে যখন বাজি কারবার শুরু হয়েছিল তখন এই কারবারের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন হাতে গোনা কয়েকজন । তখন কিন্তু ঘরে ঘরে কুটির শিল্পের মতো এই বাজি কারবারও হত না । অর্থাৎ নিয়ন্ত্রিত ছিল এই কারবার । কিন্তু পরবর্তী সময়ে সেই কারবারকেই কার্যত পেশা হিসেবে বেছে নেন কয়েকশো মানুষ । যা এখন কুটির শিল্পের আকার নিয়েছে । মোচপোলের ক্ষেত্রেও তাই দেখা গিয়েছিল । গ্রামের লোকজন বাড়ি এবং গুদাম ঘর ভাড়া নিয়ে রীতিমতো এই কারবার ফেদে বসেছিলেন । পিছনে অবশ্যই ছিলেন এই কারবারের মাথারা । সেই মাথাদের অনেকের সঙ্গেই আবার শাসকদলের দহরম মহরম রয়েছে বলে অভিযোগ । যার ফলেই এই অবৈধ কারবার সেখানে ফুলে ফেঁপে উঠেছিল বলে অভিযোগ করছেন বিরোধীরা ।

এই বিষয়ে সিপিএমের জেলা নেতা আহমেদ আলি খান বলেন,"আমাদের সময়ে ওখানকার বাজি কারবার নিয়ন্ত্রিত ছিল । যখনই অনিয়ন্ত্রিত হয়েছে তখনই পুলিশ অভিযান চালিয়েছে সেখানে । তৃণমূল আমলে এটাই এখন অবৈধ কারবারে পরিণত হয়েছে । মন্ত্রী রথীন ঘোষের প্রশয়েই এত বাড়বাড়ন্ত । তিনি সবকিছু জানেন । এখন না জানার ভান করছেন । মোচপোল গ্রামের অবৈধ বাজি কারবার নিয়ে বারবার স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে । উলটে তাদেরকেই হয়রানির মুখে পড়তে হয়েছে । বাম আমলে এত বিস্ফোরণ হয়েছে কোথায়? এখন তো মাসে মাসে রাজ‍্যে বিস্ফোরণ । এত বিস্ফোরক, রাসায়নিক আসছে কোথা থেকে? পুলিশ প্রশাসন ও রাজ‍্য সরকার তার দায় এড়াতে পারে না । আমাদের ধারণা,মোচপোল গ্রামে বাজি কারবারের আড়ালে বোমা বানানো হচ্ছিল । তা না হলে এত ভয়াবহ বিস্ফোরণ হতে পারে না ৷"

আরও পড়ুন: দত্তপুকুরে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, এদিক ওদিক ছিটকে দেহাংশ! এখনও পর্যন্ত 7 জনের মৃত্যু

যদিও সেই অভিযোগ মানতে নারাজ স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক ও রাজ‍্যের খাদ‍্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ । তাঁর কথায়,"বাম আমলে যদি বেআইনি বাজি কারবার চলেই থাকে,সেটা আবার নিয়ন্ত্রিত ছিল । এই যুক্তির কোনও মানে হয় না । তার মানে তো ওনাদের সময়ে অবৈধ বাজি কারবার চলত, সেটা তো পরোক্ষভাবে তারা স্বীকার করে নিচ্ছেন । আমি যতদূর জানি নারায়ণপুরে অবৈধ বাজির কারবার চলত । সেটা আমি বন্ধ করে দিয়েছি । এখন শুনছি তার আশপাশেও এই কারবার গজিয়ে উঠেছে । বাজি কীভাবে তৈরি হয় সেটা আমি নিজে কখনও দেখেনি । ইচ্ছাও নেই দেখার । এখন একটা বিস্ফোরণ হয়েছে সেটা রাজনীতি করতে ব‍্যস্ত বিরোধীরা । সিপিএম নেতারা এগুলো ভালো বলতে পারবে কোথায় কীভাবে বাজি তৈরি ও নিয়ন্ত্রিত হয় । কারণ ওরা 34 বছর ধরে এ রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল । এ নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যথা নেই ৷"

দত্তপুকুরে বাজি কারবারের ইতিহাস

দত্তপুকুর, 4 সেপ্টেম্বর: দত্তপুকুরের নারায়ণপুর, নামটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাজি কারবারের পুরনো ইতিহাস ৷ বাম আমলে এখান থেকেই বীজ রোপন হয়েছিল বাজির কারবারের । সেই সময় একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বাজি তৈরি এবং বিক্রি সীমাবদ্ধ থাকলেও পরবর্তীতে তা ছড়িয়ে পড়ে অন্যত্র । বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর বেরুনান পুকুরিয়া, মোচপোল, কাঠুরিয়ার মতো যে সমস্ত এলাকাগুলি নিয়ে এখন চর্চা চলছে, তার পিছনেও রয়েছে নানান তথ্য । অভিযোগ, ওই সমস্ত এলাকায় বাজি কারবার মহীরূপে পরিণত হয়েছে তৃণমূল আমলেই ।

তবে একদিনে নয়, পুলিশ প্রশাসন এবং শাসকদলের একাংশের মদতে তার বিস্তার ঘটেছে ধীরে ধীরে । বিস্ফোরণের পর এমনই অভিযোগ উঠে এসেছিল স্থানীয়দের তরফ থেকে । স্থানীয়রাই বলছেন, নারায়ণপুর-সহ ওই সমস্ত এলাকার যাবতীয় বাজি কারবারই বেআইনি । কোনও বৈধ অনুমতিই নেই, তা সত্ত্বেও দিনের পর দিন মাসোয়ারা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের একাংশ বৈধতার লাইসেন্স দিয়ে গিয়েছে অবৈধ বাজি কারবারে । যার ফলস্বরূপ এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ । পরিণতি, ন'জন মানুষের প্রাণহানি । ক্ষতিগ্রস্ত হল একাধিক বসতবাড়ি ।

এ নিয়ে একে অপরের ঘাড়ে দায় ঠেলাঠেলিতে ব‍্যস্ত শাসক ও বিরোধী উভয়ই । কিন্তু,মোচপোল গ্রামে এত বড় বিস্ফোরণের পর আদৌও কি অবৈধ বাজি কারবার বন্ধ হবে? নাকি পুলিশের ধরপাকড়ের হাত থেকে বাঁচতে বাজি কারবারিরা কিছুদিনের জন্য নিজেদের ব‍্যবসা গুটিয়ে রাখবে? অথবা পরিস্থিতি থিতিয়ে গেলে আবারও নতুন উদ‍্যমে চালু হয়ে যাবে বেআইনি বাজি কারবার? বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর এমনই সব প্রশ্ন উঁকি মারতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে ।

আরও পড়ুন: মোচপোল যেন জতুগৃহ! কেরামতের আরও একটি রাসায়নিক ভর্তি গুদামের হদিশ মিলল

বিস্ফোরণের অতীত ইতিহাসও তাই বলছে । নারায়ণপুরে বাজি গুদামে বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর পুলিশের তৎপরতা । বেআইনি বাজি গুদামে হানা দিয়ে প্রচুর বাজি বাজেয়াপ্ত, ধরপাকড় সবই দেখেছিল সেখানকার মানুষ । কিন্তু,পরিস্থিতি থিতিয়ে যেতে না যেতেই ফের সেখানে চালু হয়ে যায় অবৈধ বাজি কারবার । শুধু কী নারায়ণপুর ! তার পাশে বেরুনান পুকুরিয়া,মোচপোল-সহ বেশকিছু এলাকাতেও রমরমিয়ে শুরু হয়ে যায় বেআইনি বাজির কারবার । তার প্রকৃষ্ট উদাহরণই হল মোচপোল গ্রামে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ।

নারায়ণপুর,বেরুনান পুকুরিয়া,মোচপোল,কাঠুরিয়া । এই সমস্ত অঞ্চলগুলি ইছাপুর-নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত । দীর্ঘ 15 বছরেরও বেশি সময় ধরে এই পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল । সম্প্রতি যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়ে গেল তাতেও কিন্তু এই পঞ্চায়েতে একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে শাসকদলেরই । যদিও,মোচপোল গ্রামে যে জায়গায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে সেই 21 নম্বর বুথে এবার জয়ী হয়েছেন আইএসএফ প্রার্থী । ফলে বিস্ফোরণ কাণ্ডের দায় নিয়ে তরজায় জড়িয়েছে আইএসএফ-তৃণমূল, এই দুই রাজনৈতিক দলই ।

প্রথম থেকেই তৃণমূল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট(আইএসএফ)-এর ঘাড়ে দোষ চাপাতে কোনও কসুর রাখেনি । যদিও পালটা আইএসএফ নেতৃত্ব বিস্ফোরণের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব শাসকের ঘাড়েই ঠেলেছে । তবে যাই হোক না কেন ইছাপুর-নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় থাকা তৃণমূল কিন্তু নিজেদের দায় এড়াতে পারে না । এমনটাই বলছেন স্থানীয়দের একাংশ । কারণ, যে নারায়ণপুর থেকে অবৈধ বাজি কারবারের হাতেখড়ি হয়েছিল সেখানেও বছর চারেক আগে বিস্ফোরণ ঘটেছিল । সেবার বেআইনি বাজি গুদামে বিস্ফোরণে ঝলসে মৃত্যু হয়েছিল দু'জনের । তারও আগে মজুত বাজিতে আগুন লেগে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল এই নারায়ণপুরেই । ফলে বাজি বিস্ফোরণেরও পুরনো ইতিহাস রয়েছে সেখানে ।

আরও পড়ুন: বিস্ফোরণস্থলে এনআইএ, আইএসএফের ঘাড়েও দোষ চাপালেন পুলিশ সুপার

সূত্রের খবর, নারায়ণপুরে প্রথমে যখন বাজি কারবার শুরু হয়েছিল তখন এই কারবারের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন হাতে গোনা কয়েকজন । তখন কিন্তু ঘরে ঘরে কুটির শিল্পের মতো এই বাজি কারবারও হত না । অর্থাৎ নিয়ন্ত্রিত ছিল এই কারবার । কিন্তু পরবর্তী সময়ে সেই কারবারকেই কার্যত পেশা হিসেবে বেছে নেন কয়েকশো মানুষ । যা এখন কুটির শিল্পের আকার নিয়েছে । মোচপোলের ক্ষেত্রেও তাই দেখা গিয়েছিল । গ্রামের লোকজন বাড়ি এবং গুদাম ঘর ভাড়া নিয়ে রীতিমতো এই কারবার ফেদে বসেছিলেন । পিছনে অবশ্যই ছিলেন এই কারবারের মাথারা । সেই মাথাদের অনেকের সঙ্গেই আবার শাসকদলের দহরম মহরম রয়েছে বলে অভিযোগ । যার ফলেই এই অবৈধ কারবার সেখানে ফুলে ফেঁপে উঠেছিল বলে অভিযোগ করছেন বিরোধীরা ।

এই বিষয়ে সিপিএমের জেলা নেতা আহমেদ আলি খান বলেন,"আমাদের সময়ে ওখানকার বাজি কারবার নিয়ন্ত্রিত ছিল । যখনই অনিয়ন্ত্রিত হয়েছে তখনই পুলিশ অভিযান চালিয়েছে সেখানে । তৃণমূল আমলে এটাই এখন অবৈধ কারবারে পরিণত হয়েছে । মন্ত্রী রথীন ঘোষের প্রশয়েই এত বাড়বাড়ন্ত । তিনি সবকিছু জানেন । এখন না জানার ভান করছেন । মোচপোল গ্রামের অবৈধ বাজি কারবার নিয়ে বারবার স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে । উলটে তাদেরকেই হয়রানির মুখে পড়তে হয়েছে । বাম আমলে এত বিস্ফোরণ হয়েছে কোথায়? এখন তো মাসে মাসে রাজ‍্যে বিস্ফোরণ । এত বিস্ফোরক, রাসায়নিক আসছে কোথা থেকে? পুলিশ প্রশাসন ও রাজ‍্য সরকার তার দায় এড়াতে পারে না । আমাদের ধারণা,মোচপোল গ্রামে বাজি কারবারের আড়ালে বোমা বানানো হচ্ছিল । তা না হলে এত ভয়াবহ বিস্ফোরণ হতে পারে না ৷"

আরও পড়ুন: দত্তপুকুরে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, এদিক ওদিক ছিটকে দেহাংশ! এখনও পর্যন্ত 7 জনের মৃত্যু

যদিও সেই অভিযোগ মানতে নারাজ স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক ও রাজ‍্যের খাদ‍্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ । তাঁর কথায়,"বাম আমলে যদি বেআইনি বাজি কারবার চলেই থাকে,সেটা আবার নিয়ন্ত্রিত ছিল । এই যুক্তির কোনও মানে হয় না । তার মানে তো ওনাদের সময়ে অবৈধ বাজি কারবার চলত, সেটা তো পরোক্ষভাবে তারা স্বীকার করে নিচ্ছেন । আমি যতদূর জানি নারায়ণপুরে অবৈধ বাজির কারবার চলত । সেটা আমি বন্ধ করে দিয়েছি । এখন শুনছি তার আশপাশেও এই কারবার গজিয়ে উঠেছে । বাজি কীভাবে তৈরি হয় সেটা আমি নিজে কখনও দেখেনি । ইচ্ছাও নেই দেখার । এখন একটা বিস্ফোরণ হয়েছে সেটা রাজনীতি করতে ব‍্যস্ত বিরোধীরা । সিপিএম নেতারা এগুলো ভালো বলতে পারবে কোথায় কীভাবে বাজি তৈরি ও নিয়ন্ত্রিত হয় । কারণ ওরা 34 বছর ধরে এ রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল । এ নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যথা নেই ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.