দমদম, 29 সেপ্টেম্বর: বাঙালির প্রিয় দুর্গোৎসবের আর খুব বেশি দিন বাকি নেই ৷ তার আগে ডেঙ্গি যেন মানুষের মনে আতঙ্কের বীজ বপন করে দিয়েছে ৷ এই অবস্থায় সন্তানদের জীবনকে আনন্দময় করে তুলতে কৈলাশ থেকে দমদমের রাস্তায় এলেন মা, তাঁর সন্তানরা ৷ সঙ্গে আছেন মায়ের অসুরও ৷
তাঁদের হাতে মশা মারার তেল, ব্লিচিং পাউডার ৷ শুক্রবার দক্ষিণ দমদম পৌরসভায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে মা, তাঁর ছেলেপিলেরা সেইসব উপহার তুলে দিলেন ৷ এই এলাকায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৷ এর জন্য দক্ষিণ দমদম পৌরসভার চেয়ারপার্সনকেই দায়ী করেছেন এলাকার কাউন্সিলর দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাই বিধায়ক তথা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, সাংসদ সৌগত রায় এই কর্মসূচির কথা জানিয়েছেন ৷ ডেঙ্গি রুখতে এই উপায় ৷
15 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "দক্ষিণ দমদম পৌরসভা ডেঙ্গি মোকাবিলায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ ৷ এর জন্য দায়ী চেয়ারপার্সনের গাফলতি ৷ এর জন্য কোনও সিআইসি, কাউন্সিলর বা অন্য কেউ দায়ী নয় ৷ 2015 সাল থেকে 2021 সাল পর্যন্ত আমি নিজে জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বে ছিলাম ৷ এই এক কাউন্সিলর, কর্মী, আধিকারিকদের নিয়ে আমরা বোর্ড চালিয়েছি এবং ডেঙ্গি দমন করেছি ৷" সেই সময় জেলাশাসকের হাত থেকে এই পৌরসভা পুরস্কার পেয়েছে বলেও জানান তিনি ৷
আরও পড়ুন: ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত, মশা সেজে রাস্তায় সচেতনতার বার্তা যুবকের
ডেঙ্গি মোকাবিলায় ব্যর্থতার অন্যতম কারণ কর্মীদের বেতন ৷ এই প্রসঙ্গে কাউন্সিলর দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আজ ডেঙ্গি প্রতিরোধে নিযুক্ত কর্মীরা নর্দমায় নেমে কাজ করছেন ৷ মানুষের ছাদ ঝাঁট দিচ্ছেন ৷ তাঁদের বেতন 4-5 হাজার টাকা ৷ তাঁরা কারও মা, বোন, স্ত্রী, ভাই ৷ মুখ্যমন্ত্রীর বলেছেন সমকাজে সমবেতন ৷ তাহলে তাঁদের কেন এমন বেতন হবে ? চেয়ারপার্সন এই দোষ চাপিয়ে দিচ্ছে কাউন্সিলর-সহ ওয়ার্ডের অন্য কর্মীদের উপর ৷"
কাউন্সিলরের আরও অভিযোগ, চেয়ারপার্সন ফান্ড নেই বলে দায় এড়াতে চাইছেন ৷ তাঁর কথায়, "এত বড় বড় আবাসন, বাড়ি হচ্ছে ৷ তার মিউটেশন, সিসি, বিল্ডিং প্ল্যানের টাকা জমা পড়ছে পৌরসভায় ৷" দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি পৌরসভার কাছে কোটি কোটি টাকা থাকলেও তা ডেঙ্গি মোকাবিলায় খরচ করা হচ্ছে না ৷ তিনি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর মুখটা পোড়াচ্ছে চেয়ারপার্সন ৷ বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস বিক্ষোভ করছে ৷ তালা ঝুলিয়ে দিতে চাইছে পৌরসভায় ৷ 'ফর সেল' লাগিয়ে দিতে চাইছে বিরোধী দলগুলি ৷"
তিনি আরও জানান, তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই বিষয়টি তুলে ধরার পর কিছুটা নড়েচড়ে বসছে দক্ষিণ দমদম পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ৷ তবে সেটা সম্পূর্ণ লোক দেখানো ৷ হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত এই পৌরসভায় ৷ ইতিমধ্যেই পৌর এলাকায় ডেঙ্গি উপসর্গ থাকাকালীন 6 নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে ৷ এদিন সকালে দক্ষিণ দমদম পৌর এলাকার 15 নং ওয়ার্ডের হরকালী, দাগা কলোনি-সহ বিভিন্ন অঞ্চলে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে মশা মারার তেল ও ব্লিচিং পৌঁছে দেওয়া হয় ৷
আরও পড়ুন: ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে হটস্পট চিহ্নিত করে ড্রোন দিয়ে নজরদারি প্রশাসনের