গাইঘাটা, 29 অক্টোবর : খুনের পর স্বামীর দেহ প্রেমিকের খাটের তলায় রেখেছিল স্বপ্না । সেই খাটেই সারারাত প্রেমিক সুজিতের সঙ্গে ঘুমিয়েছিল । এমনকী সে রাতেই দু'বার সহবাসও করে তারা । পুলিশি জেরায় উঠে এল এমনই তথ্য । রীতিমতো চমকাচ্ছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা । গতকাল গাইঘাটায় খাটের নিচে মেঝে খুঁড়ে রামকৃষ্ণ সরকারের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ । রামকৃষ্ণ স্বপ্নার স্বামী ।
আজ স্বপ্না ও সুজিতকে বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হয় । বিচারক তাদের 10 দিনের পুলিশি হেপাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ।
কীভাবে খুন করা হয়েছিল রামকৃষ্ণকে ? সোমবার রাতে রামকৃষ্ণর মাথায় পরপর তিনটি বাড়ি মারে সুজিত । মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রামকৃষ্ণ । তাঁর দেহ বাঁশবাগানে ফেলে রেখে বাড়িতে চলে যায় সুজিত । মাঝরাতে স্বপ্নাকে নিয়ে ফের বাঁশবাগানে আসে । সেখান থেকে রামকৃষ্ণর দেহ নিয়ে আসে তার ঘরে । দেহ টুকরো টুকরো করে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়ার ছক ছিল তাদের । কিন্তু সে পথে আর এগোয়নি তারা ।
সেদিন সারারাত সুজিতের খাটের নিচে পড়ে ছিল রামকৃষ্ণর দেহ । আর ওই খাটের উপরেই শুয়েছিল সুজিত ও স্বপ্না । সহবাসও করে । রাত পোহাতেই স্বপ্না বনগাঁর বাড়িতে চলে যায় । মঙ্গলবার রক্ত দেখে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ালে সুজিত বিপদের গন্ধ পায় । তখন সে খাটের নিচে মাটি খুঁড়ে রামকৃষ্ণের দেহ পুঁতে দেয় । আপ্রাণ প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা চালালেও শেষ রক্ষা হয়নি ।
বুধবার সকালেই গ্রামে পৌঁছে যান গাইঘাটা থানার OC বলাই ঘোষ । পৌঁছান বনগাঁর SDPO অশেষবিক্রম দস্তিদার । পুলিশ মাটি খুঁড়ে রামকৃষ্ণর দেহ উদ্ধার করে । পুলিশ বাড়িতে ঢুকেছে খবর পেয়েই পালানোর ছক কষেছিল সুজিত । রাস্তা থেকেই পুলিশ তাকে পাকড়াও করে ।
এই সংক্রান্ত খবর : প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুন ? মেঝে খুঁড়ে উদ্ধার দেহ
ঘটনাস্থান থেকে পুলিশ শাবল, কোদাল, রক্তমাখা দুটি জামা, একটি নাইটি, লোহার হাতলযুক্ত ধারালো অস্ত্র ও কাঠের টুকরো উদ্ধার করেছে ।
পুলিশি জেরায় সুজিত জানিয়েছে, সাত মাস আগে সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে স্বপ্নার সঙ্গে সুজিতের আলাপ হয় । তারপর তাদের সম্পর্ক গাঢ় হয় । স্বপ্নাই স্বামী রামকৃষ্ণর সঙ্গে সুজিতের পরিচয় করিয়ে দেয় । সুজিত রামকৃষ্ণকে দাদা বলে ডাকত । সোমবার স্বপ্না ও তার স্বামী রামকৃষ্ণ গাইঘাটায় সুজিতের বাড়িতে আসে । সেখানে তিনজন একসঙ্গে মদ খায় । তারপর রাতে তারা ঘুরতেও বের হয় । সেখান থেকে ফেরার সময়েই বিপত্তি বাধে ।
ফেরার সময় তিনজন বাড়ির কাছে একটি বাঁশবাগানে যায় । রামকৃষ্ণর সঙ্গে সুজিতের গোলমাল বাধে । সুজিত রামকৃষ্ণর মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে । মারা যান রামকৃষ্ণ । ওই বাঁশবাগানে দেহ রেখেই সুজিত ও স্বপ্না চলে যায় । ফিরে আসে গভীর রাতে । রামকৃষ্ণর দেহ তুলে নিয়ে যায় । সুজিতের খাটের নিচে প্লাস্টিকে মুড়ে সেই দেহ রাখা ছিল ।