বারাসত, 28 এপ্রিল : প্রথমে ধর্ষণের ঘটনা মীমাংস করার প্রস্তাব এবং পরে অপমানিত নির্যাতিতা নাবালিকার আত্মহত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা । বারাসত থানার আইসি-র বিরুদ্ধে এমনই গুরুতর অভিযোগ তুলে বুধবার জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হলেন মৃত ওই নাবালিকার পরিবার ও তাদের আইনজীবী । গোটা ঘটনাটি লিখিত আকারে পুলিশ সুপার এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে জমা দিয়েছেন তাঁরা । রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বিষয়টি জানাবে নির্যাতিতার পরিবার । ন্যায়বিচার চেয়ে এখন প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন মৃত নাবালিকার মা ও অন্যরা (Barasat Minor Rape Death case) ।
পরিবার সূত্রে খবর, ওই নাবালিকা (14) বারসতে একটি স্কুলের নবম শ্রেণিতে পড়ত ৷ সে বারাসতে মামাবাড়িতে মায়ের সঙ্গে থাকত । গত বছরের মে মাসে তাকে অপহরণ করে জোরজবরদস্তি ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় যুবকের বিরুদ্ধে । এই ঘটনায় আইনি সহায়তা চেয়ে বারাসত থানায় যায় নাবালিকার পরিবার ।
অভিযোগ, সেই সময় আইসি স্থানীয় এক মাতব্বরের সহযোগিতায় ঘটনাটির মীমাংসা করে নেওয়ার প্রস্তাব দেয় পরিবারকে । পরিবারের দাবি, এই প্রস্তাবে নারাজ হলেও পরে বাধ্য হয়ে অভিযুক্তের পরিবারের সঙ্গে মীমাংসা করে নেন তাঁরা । পুলিশি চাপের মুখে সেই সময় পরিবারকে দিয়ে জোরপূর্বক লিখিয়ে নেওয়া হয়, মেয়েটি সাবালিকা হলে একমাত্র ধর্ষকের সঙ্গেই তাকে বিয়ে দিতে হবে । অন্য কারও সঙ্গে বিয়ে দেওয়া যাবে না । কিন্তু পরে ধর্ষকের পরিবার এবং ধর্ষক ফোনে নির্যাতিতাকে বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে ৷
আরও পড়ুন : Maynaguri Minor Rape : কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় ময়নাগুড়িতে সম্পন্ন নির্যাতিতার শেষকৃত্য
স্বাভাবিকভাবেই সবসময় মনমরা থাকত নির্যাতিতা নাবালিকা । এবছর 3 এপ্রিল রামজানের প্রথম দিনে ঘরের মধ্যে থেকে নির্যাতিতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় । পরের দিন 4 এপ্রিল বারাসত থানায় অভিযোগ দায়ের করেন পরিবারের লোকেরা । তাঁদের অভিযোগ, নামকাওয়াস্তে তদন্ত শুরু হলেও আজ পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি ।
বিষয়টি নিয়ে পরিবারের পক্ষে বারাসত আদালতের আইনজীবী জানান, বারাসত থানার আইসির ভূমিকা একপেশে । তিনি নাবালিকার পরিবারকে আইনি সহায়তা দেওয়ার পরিবর্তে অভিযুক্তদের আড়াল করার চেষ্টা করছেন । অভিযুক্তদের পাশাপাশি নাবালিকার মৃত্যুর জন্য সমানভাবে দায়ী আইসি-ও । তার তদন্তে ন্যায় বিচার পাওয়া সম্ভব নয় । এদিকে, বারাসত থানার আইসি দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি । তবে, জেলার পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন ।
আরও পড়ুন : Attempt to rape of minor in Siliguri : নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টা শিলিগুড়িতে, গ্রেফতার বাড়ির মালিক