দত্তপুকুর, 27 অগস্ট: এগরার পর উত্তর 24 পরগনার দত্তপুকুর ৷ ইছাপুর-নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের মোচপোল এলাকায় বেআইনি বাজি কারখানা বিস্ফোরণে একাধিক মৃত্যু ৷ পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বিস্ফোরণে কমপক্ষে 7 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ এর মধ্যে দুইজন মহিলা, একজন শিশু ৷ বারাসত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন,"হাসপাতালে নিয়ে আসার পর একজন মারা যান। যার শরীরের একশো শতাংশই পুড়ে গিয়েছিল। বাকি ছ'জনের মৃতদেহ ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। হাসপাতালে এখনও 8 জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।তার মধ্যে তিনজনই শিশু। " বিস্ফোরণের এতটাই তীব্রতা ছিল যে ওই বেআইনি বাজি কারখানা থেকে মৃতদেহের অংশ ছিটকে আশেপাশের বাড়ির ছাদে, গাছে গিয়ে পড়ে ৷ মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে অনুমান ৷
ওই ঘটনায় আশপাশের একাধিক বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে পুলিশ বা প্রশাসনের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। আপাতত উদ্ধারকাজ চলছে। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, বারবার পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। রমরমিয়ে চলছিল বেআইনি বাজি কারখানা। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এই বেআইনি বাজি কারখানার বন্ধ করার দাবি জানানো হয়েছিল পুলিশের কাছে ৷ কিন্তু কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি ৷
ভিন জেলা মুর্শিদাবাদ থেকে অধিকাংশ লোকজন এই বাজি কারখানায় কাজ করতে আসতেন ৷ বাজি তৈরির আড়ালে এখানে বোমা তৈরির মশলা মজুত করা হয়েছিল । তার জেরেই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা ৷ স্থানীয়দের তরফে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, তৃণমূল ও পুলিশ প্রশাসনের একাংশের মদতে এই বেআইনি বাজি কারখানা রমরমিয়ে চলত ৷ এর আগে, গত 16 মে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল গ্রামের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটেছিল। মৃত্যু হয়েছিল অন্তত 9 জনের।
সেই ঘটনার রেশ কাটতে না-কাটতেই পাঁচ দিনের মাথায়, 21 মে রবিবার কলকাতার অদূরে বজবজের একটি বাড়িতে বাজি বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। পর পর দু'জায়গায় বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছিল প্রশাসন। বেআইনি বাজি কারখানার বিস্ফোরণের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের জেলায় জেলায় তল্লাশি অভিযান চালাতে বলেছিলেন ৷ সেই কাজ শুরুও হয়েছিল ৷ কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে ওই তল্লাশি অভিযান বন্ধ হয়ে যায় ৷ এরপর ফের রমরমিয়ে চলতে থাকে বেআইনি বাজি কারখানা ৷
আরও পড়ুন: পিংলায় বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ-মামলায় 3 দোষীর 15 বছরের কারাদণ্ড