বারাসত, 10 অগস্ট : দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার হচ্ছে না বাজারের আবর্জনা ও বর্জ্য পদার্থ ৷ আবর্জনা জমতে জমতে স্তূপাকারে পরিণত হয়েছে ৷ অভিযোগ, হেলদোল নেই পৌরসভার ৷ বারবার আবর্জনা পরিষ্কারের জন্য বলা হলেও কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি ৷ যার ফলে কোরোনা আবহে বাড়ছে রোগ সংক্রমণের সম্ভাবনা ৷ ঘটনাটি বারাসত পৌরসভার 16 নম্বর ওয়ার্ডের বিধান মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় ৷ আবর্জনা পরিষ্কারের জন্য পৌরসভায় নিয়মিত টাকা জমা দেওয়া হলেও পরিষেবা না মেলায় পৌর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা ৷ এই নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে বাসিন্দাদের মধ্যেও ৷ যদিও আবর্জনা পরিষ্কার না হওয়ার জন্য পালটা ব্যবসায়ীদের ঘাড়েই দোষ চাপিয়েছেন পৌরসভার প্রশাসক ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, টাকি রোড়ের পাশেই অবস্থিত বিধান মার্কেট ৷ মার্কেটের ভিতরে রাস্তা বরাবর রয়েছে সবজি ও ফলের বাজার ৷ রাস্তার দু'ধারে বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফলের পসরা সাজিয়ে ব্যবসা করে থাকেন কয়েকশো ব্যবসায়ী ৷ দিনের শেষে ব্যবসার যাবতীয় আবর্জনা ও বর্জ্য পদার্থ ফেলা হয় রাস্তার পাশেই পৌরসভার ভ্যাটে ৷ পরের দিন পৌরসভার ভ্যাটের গাড়ি এসে সেই আবর্জনা ও বর্জ্য পদার্থ তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা ৷ কিন্তু প্রায় আটমাস ধরে সেই ভ্যাট ঠিকমতো পরিষ্কার হচ্ছে না বলে অভিযোগ ৷ যার ফলে আবর্জনা জমতে জমতে স্তূপাকারে পরিণত হয়েছে ৷ কোরোনা আবহে যখন এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে বারবার জোর দিতে বলা হচ্ছে তখন এই অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে বাড়ছে রোগ প্রাদুর্ভাব বাড়ার সম্ভাবনা ৷ তাছাড়া আবর্জনার দুর্গন্ধে প্রভাব পড়ছে এলাকার পরিবেশের উপরেও ৷ এই বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা বেওয়া হচ্ছে না ৷ এমনই অভিযোগ ব্যবসায়ীদের ৷ আরও অভিযোগ আবর্জনা পরিষ্কার করার জন্য পৌরসভায় নিয়মিত টাকা জমা দেওয়া হলেও সেই পরিষেবা ঠিকমতো মিলছে না ৷ এই নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিধান মার্কেটের ব্যবসায়ীরা ৷
যদিও এর জন্য পালটা ব্যবসায়ী সমিতিকেই দুষছেন বারাসত পৌরসভার প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, "ওই বাজারের ভ্যাটের বিষয়ে কোনও সময় আলোচনা করা হয়নি আমার সঙ্গে ৷ যদি বিষয়টি আমাকে জানানো হত তাহলে নিশ্চয় কোনও না কোনও সমাধান করা যেত ৷ তা সত্ত্বেও ওখানকার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদককে ডেকে এই বিষয়ে আলোচনা করব , যাতে আবর্জনা পরিষ্কারের বিষয়ে কোনও সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসে ৷" এরপরই আবর্জনা পরিষ্কার না হওয়ার পিছনে সাফাই দিয়ে পৌরসভার প্রশাসক বলেন, "পৌরসভার তরফে যখনই ভ্যাটের জায়গা পরিষ্কার করা হবে তখনই ফাঁকা জায়গায় ব্যবসায়ী সমিতি কিংবা বিরোধী রাজনৈতিক দল কাউকে না কাউকে ব্যবসার জন্য বসিয়ে দেবে ৷ তখন পৌরসভা জোর খাটাতে গেলে পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নিতে পারে ৷ সেখানে এরকম অবস্থা তৈরি হয়ে আছে ৷ "
ব্যবসায়ী সমিতির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায় ৷ তাঁর মতে, "ওখানকার অনেক ব্যবসায়ীর মার্কেটের ভিতর দু থেকে তিনটি দোকান রয়েছে ৷ একটি দোকান ব্যবসার জন্য রাখা হলেও বাকি দোকান ভাড়ার জন্য ব্যবহার করা হয় ৷ এই অবস্থায় পৌরসভার তরফে একসময় সেখানে মার্কেট কমপ্লেক্স করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু ব্যবসায়ী সমিতির অসহযোগিতায় সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসতে হয় ৷"