ETV Bharat / state

লকডাউনে গোবরডাঙায় থমকে নাট্যচর্চা

দু'মাস আগে পর্যন্তও গোবরডাঙার নাট্য দলগুলির অবস্থা সম্পূর্ণ আলাদা ছিল ৷ কিন্তু, লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই সব কিছুই বদলে গেছে ৷ বাতিল হয়ে গেছে শো ৷ তাই বন্ধ নাটকের মহড়াও ৷

Drama Industry of Gobordanga
গোবরডাঙার নাট্যশিল্প
author img

By

Published : Jun 29, 2020, 10:39 PM IST

গোবরডাঙা, 29 জুন : এখন বেশিরভাগ সময়ই দরজাগুলিতে তালা ঝোলানো থাকে ৷ ছেলে-মেয়েরাও আর আসে না ৷ শোনা যায় না নাটকের কোনও সংলাপ ৷ লকডাউনের জেরে এটাই এখন গোবরডাঙার নাট্যশিল্পের বর্তমান চিত্র ৷

দু'মাস আগে পর্যন্তও গোবরডাঙার নাট্য দলগুলির অবস্থা সম্পূর্ণ আলাদা ছিল ৷ সব নাট্য দলের সদস্যদের মধ্যেই একটা ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যেত ৷ কোনও নাট্য দলের সদস্যরা শোয়ের আগে সংলাপ দিচ্ছেন ৷ আবার কোনও নাট্যদল সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে শোয়ের জন্য পোশাক নির্বাচন করতেন ৷ কোনও নাট্যদল হয়তো নিজেদের পরবর্তী নাটকের প্রেক্ষাপট আলোচনা করছে ৷ কিন্তু লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই সব কিছুই বদলে গেছে ৷ বাতিল হয়ে গেছে শো ৷ সংক্রমণের ভয়ে ছেলে-মেয়েরাও আর আসে না ৷ তাই মহড়াও হয় না ৷ বন্ধ হয়েই পড়ে রয়েছে নাটকের দলগুলির মহড়া দেওয়ার ঘর ৷

আশা ছিল আনলক 1-এ পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে ৷ কিন্তু তা নিয়েও নাটকের দলগুলির ভাগে জুটেছে শুধুই হতাশা ৷ কারণ রাজ্যে আনলক 1 চালু হলেও মানুষের মন থেকে সংক্রমণের আশঙ্কা কাটেনি ৷ তাই এখনও গোবরডাঙার নাট্যদলগুলির সদস্যরা আসতে চাইছেন না মহড়ায় ৷

গোবরডাঙায় এই নাট্যদলের সংখ্যা 20 ৷ যার মধ্যে 13 টি দল সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ৷ এই প্রতিটি নাট্য দলের গড়ে 40 জন করে সদস্য রয়েছেন ৷ সরকারি অনুদান পেলেও নাটকের শো করেই একাধিক সদস্যের সংসার চলে ৷ তাই লকডাউনের জেরে নাটকের শো বাতিল হওয়ায় এবং পাশাপাশি নতুন কোনও শো না হওয়ায় তাঁরা তো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেই ৷ অন্যদিকে বিঘ্নিত হচ্ছে নাট্যচর্চাও ৷

গোবরডাঙার জনপ্রিয় নাট্যদল শিল্পায়ন ৷ দলে সদস্য সংখ্যা প্রায় 30 ৷ এই নাট্যদলের অধীনে সরকার অনুমোদিত একটি কলেজও রয়েছে ৷ সেখানে প্রায় 150 জন ছেলে-মেয়ে নাটক নিয়ে পড়াশোনা করে ৷ কিন্তু লকডাউনের জেরে সবকিছু বন্ধ হয়ে রয়েছে ৷ শিল্পায়নের নির্দেশক আশিস চট্টোপাধ্যায় জানান, গত বছর শিল্পায়ন 123 টি নাটকের শো করেছিল ৷ কিন্তু 25 মার্চের পর থেকে সবকিছু থমকে গেছে ৷ অনলাইনে কিছুদিন কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো হচ্ছিল ৷ কিন্তু আমফানের জেরে বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে যাওয়ায়, মোবাইলে নেট না থাকায় সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে ৷ ফলে তাঁদের শিক্ষাবর্ষও পিছিয়ে গেল ৷"

এই শহরের আরও একটি নাটকের দল নকশা ৷ দলে প্রায় 28 জন সদস্য রয়েছেন ৷ গত বছর নকশা পাঁচটি নাটকের 70 টি শো করেছিল ৷ কিন্তু এই বছরে এখনও পর্যন্ত মহড়াই শুরু করতে পারেনি তারা ৷ এই নাট্যদলের নির্দেশক আশিস দাস বলেন, "লকডাউনে আমাদের গর্বের নাট্য শহরটা আজ গতিহীন । আমরা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত । নতুন কোনও প্রোডাকশনে হাত দিতে পারিনি । কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে জানি না । আমরা আশায় আছি নাটক আবার প্রাণ ফিরে পাবে ।"

একই বক্তব্য নাবিক নাট্য দলের ৷ এই দলে শিশু-সহ 30 জন সদস্য রয়েছেন ৷ গত বছর তিনটি নাটকের 73 টি শো করেছে নাবিক ৷ এই নাট্য দলের নির্দেশক জীবন অধিকারী বলেন, "সত্যিই সবকিছু থমকে গেছে । আমরা মহড়া করতে পারছি না । কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে আমরা সেই প্রতীক্ষায় রয়েছি ।"

শুধু এই তিনটি নাট্যদল নয় ৷ লকডাউনকে কেন্দ্র করে ক্ষতিগ্রস্ত গোবরডাঙার সব নাট্যদলই ৷ এখন এই নাট্যদলগুলির একটা আশা ৷ স্বাভাবিক হোক পরিস্থিতি ৷ ফের একবার নাট্যচর্চায় মুখরিত হয়ে উঠুক গোবরডাঙা ৷

গোবরডাঙা, 29 জুন : এখন বেশিরভাগ সময়ই দরজাগুলিতে তালা ঝোলানো থাকে ৷ ছেলে-মেয়েরাও আর আসে না ৷ শোনা যায় না নাটকের কোনও সংলাপ ৷ লকডাউনের জেরে এটাই এখন গোবরডাঙার নাট্যশিল্পের বর্তমান চিত্র ৷

দু'মাস আগে পর্যন্তও গোবরডাঙার নাট্য দলগুলির অবস্থা সম্পূর্ণ আলাদা ছিল ৷ সব নাট্য দলের সদস্যদের মধ্যেই একটা ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যেত ৷ কোনও নাট্য দলের সদস্যরা শোয়ের আগে সংলাপ দিচ্ছেন ৷ আবার কোনও নাট্যদল সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে শোয়ের জন্য পোশাক নির্বাচন করতেন ৷ কোনও নাট্যদল হয়তো নিজেদের পরবর্তী নাটকের প্রেক্ষাপট আলোচনা করছে ৷ কিন্তু লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই সব কিছুই বদলে গেছে ৷ বাতিল হয়ে গেছে শো ৷ সংক্রমণের ভয়ে ছেলে-মেয়েরাও আর আসে না ৷ তাই মহড়াও হয় না ৷ বন্ধ হয়েই পড়ে রয়েছে নাটকের দলগুলির মহড়া দেওয়ার ঘর ৷

আশা ছিল আনলক 1-এ পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে ৷ কিন্তু তা নিয়েও নাটকের দলগুলির ভাগে জুটেছে শুধুই হতাশা ৷ কারণ রাজ্যে আনলক 1 চালু হলেও মানুষের মন থেকে সংক্রমণের আশঙ্কা কাটেনি ৷ তাই এখনও গোবরডাঙার নাট্যদলগুলির সদস্যরা আসতে চাইছেন না মহড়ায় ৷

গোবরডাঙায় এই নাট্যদলের সংখ্যা 20 ৷ যার মধ্যে 13 টি দল সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ৷ এই প্রতিটি নাট্য দলের গড়ে 40 জন করে সদস্য রয়েছেন ৷ সরকারি অনুদান পেলেও নাটকের শো করেই একাধিক সদস্যের সংসার চলে ৷ তাই লকডাউনের জেরে নাটকের শো বাতিল হওয়ায় এবং পাশাপাশি নতুন কোনও শো না হওয়ায় তাঁরা তো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেই ৷ অন্যদিকে বিঘ্নিত হচ্ছে নাট্যচর্চাও ৷

গোবরডাঙার জনপ্রিয় নাট্যদল শিল্পায়ন ৷ দলে সদস্য সংখ্যা প্রায় 30 ৷ এই নাট্যদলের অধীনে সরকার অনুমোদিত একটি কলেজও রয়েছে ৷ সেখানে প্রায় 150 জন ছেলে-মেয়ে নাটক নিয়ে পড়াশোনা করে ৷ কিন্তু লকডাউনের জেরে সবকিছু বন্ধ হয়ে রয়েছে ৷ শিল্পায়নের নির্দেশক আশিস চট্টোপাধ্যায় জানান, গত বছর শিল্পায়ন 123 টি নাটকের শো করেছিল ৷ কিন্তু 25 মার্চের পর থেকে সবকিছু থমকে গেছে ৷ অনলাইনে কিছুদিন কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো হচ্ছিল ৷ কিন্তু আমফানের জেরে বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে যাওয়ায়, মোবাইলে নেট না থাকায় সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে ৷ ফলে তাঁদের শিক্ষাবর্ষও পিছিয়ে গেল ৷"

এই শহরের আরও একটি নাটকের দল নকশা ৷ দলে প্রায় 28 জন সদস্য রয়েছেন ৷ গত বছর নকশা পাঁচটি নাটকের 70 টি শো করেছিল ৷ কিন্তু এই বছরে এখনও পর্যন্ত মহড়াই শুরু করতে পারেনি তারা ৷ এই নাট্যদলের নির্দেশক আশিস দাস বলেন, "লকডাউনে আমাদের গর্বের নাট্য শহরটা আজ গতিহীন । আমরা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত । নতুন কোনও প্রোডাকশনে হাত দিতে পারিনি । কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে জানি না । আমরা আশায় আছি নাটক আবার প্রাণ ফিরে পাবে ।"

একই বক্তব্য নাবিক নাট্য দলের ৷ এই দলে শিশু-সহ 30 জন সদস্য রয়েছেন ৷ গত বছর তিনটি নাটকের 73 টি শো করেছে নাবিক ৷ এই নাট্য দলের নির্দেশক জীবন অধিকারী বলেন, "সত্যিই সবকিছু থমকে গেছে । আমরা মহড়া করতে পারছি না । কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে আমরা সেই প্রতীক্ষায় রয়েছি ।"

শুধু এই তিনটি নাট্যদল নয় ৷ লকডাউনকে কেন্দ্র করে ক্ষতিগ্রস্ত গোবরডাঙার সব নাট্যদলই ৷ এখন এই নাট্যদলগুলির একটা আশা ৷ স্বাভাবিক হোক পরিস্থিতি ৷ ফের একবার নাট্যচর্চায় মুখরিত হয়ে উঠুক গোবরডাঙা ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.