ETV Bharat / state

লকডাউনে বন্ধ ভিক্ষা, অনাহারে থাকা পরিবারগুলিকে সাহায্য চিকিৎসকের

author img

By

Published : Mar 30, 2020, 8:05 PM IST

কোরোনার জেরে বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল । বহু লোকের মতো আয়ের রাস্তা বন্ধ স্টেশনে ভিক্ষা করা মানুষগুলোর । দু'বেলা দু'মুঠো খাবার জুটছে না, বারাসতে এমন কয়েকজনের পাশে দাঁড়ালেন দুই চিকিৎসক । তাদের হাতে তুলে দিলেন খাদ্য সামগ্রী ।

barasat
বারাসত

বারাসত, 30 মার্চ : রোজকার গন্তব্য স্টেশন চত্বর । ট্রেন আসলেই আস্তে করে উঠে শুরু হয় ভিক্ষা চাওয়া । কখনও গান গেয়ে, কখনও ছোট্ট অভিনয় দেখিয়ে তো কখনও ভিন্ন সুরে কথা বলে । এক-দু'টাকা করে পেয়ে, কোনওরকমে পেট চলে বহু মানুষের । শুধু ট্রেন নয়, স্টেশন চত্বরেও ভিক্ষা করে তারা । লোকাল ট্রেন, দুরপাল্লার ট্রেন, বাদ যায় না কিছুই । কিন্তু কোরোনার জেরে বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল । বহু লোকের মতো আয়ের রাস্তা বন্ধ এদেরও । দু'বেলা দু'মুঠো খাবার জুটছে না, বারাসতে এমন কয়েকজনের পাশে দাঁড়ালেন দুই চিকিৎসক । তাদের হাতে তুলে দিলেন খাদ্য সামগ্রী ।

স্টেশন চত্বরে গেলই বাবু বলে সম্বোধন করে, কী চাই ? হাত পেতে করুণ মুখে তাকালেই কেউ এক টাকা, কেউ দু'টাকা তো কেউ সাধ্য মতো টাকা দেন । কেউ আবার অগ্রাহ্য চলেও যান । 20 জনের কাছে হাত পাতলে টাকা পাওয়া যায় এক-দু'জনের কাছ থেকে । খাবার জোগাড়ের টাকা না জুটলে ভিক্ষা শুরু হয় ট্রেনে ট্রেনে । গন্তব্য ছাড়াই ট্রেনে উঠে বিভিন্ন কায়দায় ভিক্ষা চায় ওরা । যার কপাল ভালো থাকে তার দু'বেলা খাবার জোটে । যার টাকা জোগার হয় না, এক বেলা আধপেটা খেয়েই তার চলে যায় । বনধের দিনগুলোয় আগে থেকেই প্রস্তুত থাকে তারা । সেই দিনের খাবার আগে থেকেই জুটিয়ে নেয় । কিন্তু লকডাউন পরিস্থিতি তো আগে থেকে জানা ছিল না । তাই বাকি দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোর মতো তারাও আজ অসহায় । অর্ধাহারে, অনাহারে দিন কাটছে প্রত্যেকের । হাওড়া স্টেশনে কেউ কেউ আজও বসে পড়ছে ভিক্ষা করতে । কিন্তু প্রাণের ভয়ে যখন সকলেই বাড়িতে, বাসও বন্ধ তখন এক টাকা রোজগার করাও তাদের তাছে চাপের হয়ে যাচ্ছে । এই পরিস্থিতিতে বারাসতে এমনই ক'জনের পাশে দাঁড়ালেন চিকিৎসক ধীমান চট্টোপাধ্যায় ও গৌতম সাহা । কোরোনা মোকাবিলায় তাদের সচেতন তো করলেনই, তুলে দিলেন খাদ্য সামগ্রীও ।

এই বিষয়ে ধীমানবাবু বলেন, "মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকাই আমাদের কর্তব্য । আর যখন কোরোনার জেরে দেশ এক কঠিন পরিস্থিতির মুখে দাঁড়িয়ে, তখন আরও বেশি করে সকলের এগিয়ে আসা উচিত । দরিদ্র, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে খুব ভালো লাগছে । আগামীদিনও এইভাবে মানুষের পাশে থাকব আমরা ।"

এদিকে, লকডাউনের জেরে পঞ্চায়েত এলাকার দরিদ্র মানুষের হাতে চাল, ডাল, আলু, তেল ও সাবান তুলে দিলেন জেলাপরিষদের পূর্ত ও পরিবহন কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ গোস্বামী । প্রায় ৫০০ দরিদ্র মানুষের মধ্যে এই সামগ্রী বিতরণ করেন তিনি । এই বিষয়ে নারায়ণ বাবু বলেন, "কোরোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাস্তায় নেমে সামনে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন । তিনি নির্দেশ দিয়েছেন লকডাউনে অসহায়, দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে । সেই মতো আমরা পশ্চিম খিলকাপুর, পূর্ব খিলকাপুর ও ইছাপুর- নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোর হাতে কিছু খাদ্য সামগ্রী তুলে দিলাম । যতদিন লকডাউন চলবে, এভাবেই মানুষের পাশে থাকব আমরা ।"

কোরোনা মোকাবিলায় লকডাউনের আজ ষষ্ঠ দিন । এই ক'দিনে লকডাউনের বহু চিত্র দেখেছে আপামর ভারতবাসী । কোথাও বাড়ি ফিরতে গিয়ে 200 কিমি হেঁটে ডেলিভারি বয়ের মৃত্যু, কোথাও বাড়ি ফেরার জন্য 1000 লোকের এক জায়গায় সমাগম । সবটা মিলিয়েই কোরোনা যুদ্ধে লড়ছে ভারত । আর এভাবেই কোথাও না কোথাও কেউ না কেউ পরিত্রাতা হিসেবে গরিবের মুখে অন্ন তুলে দিচ্ছেন ।

বারাসত, 30 মার্চ : রোজকার গন্তব্য স্টেশন চত্বর । ট্রেন আসলেই আস্তে করে উঠে শুরু হয় ভিক্ষা চাওয়া । কখনও গান গেয়ে, কখনও ছোট্ট অভিনয় দেখিয়ে তো কখনও ভিন্ন সুরে কথা বলে । এক-দু'টাকা করে পেয়ে, কোনওরকমে পেট চলে বহু মানুষের । শুধু ট্রেন নয়, স্টেশন চত্বরেও ভিক্ষা করে তারা । লোকাল ট্রেন, দুরপাল্লার ট্রেন, বাদ যায় না কিছুই । কিন্তু কোরোনার জেরে বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল । বহু লোকের মতো আয়ের রাস্তা বন্ধ এদেরও । দু'বেলা দু'মুঠো খাবার জুটছে না, বারাসতে এমন কয়েকজনের পাশে দাঁড়ালেন দুই চিকিৎসক । তাদের হাতে তুলে দিলেন খাদ্য সামগ্রী ।

স্টেশন চত্বরে গেলই বাবু বলে সম্বোধন করে, কী চাই ? হাত পেতে করুণ মুখে তাকালেই কেউ এক টাকা, কেউ দু'টাকা তো কেউ সাধ্য মতো টাকা দেন । কেউ আবার অগ্রাহ্য চলেও যান । 20 জনের কাছে হাত পাতলে টাকা পাওয়া যায় এক-দু'জনের কাছ থেকে । খাবার জোগাড়ের টাকা না জুটলে ভিক্ষা শুরু হয় ট্রেনে ট্রেনে । গন্তব্য ছাড়াই ট্রেনে উঠে বিভিন্ন কায়দায় ভিক্ষা চায় ওরা । যার কপাল ভালো থাকে তার দু'বেলা খাবার জোটে । যার টাকা জোগার হয় না, এক বেলা আধপেটা খেয়েই তার চলে যায় । বনধের দিনগুলোয় আগে থেকেই প্রস্তুত থাকে তারা । সেই দিনের খাবার আগে থেকেই জুটিয়ে নেয় । কিন্তু লকডাউন পরিস্থিতি তো আগে থেকে জানা ছিল না । তাই বাকি দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোর মতো তারাও আজ অসহায় । অর্ধাহারে, অনাহারে দিন কাটছে প্রত্যেকের । হাওড়া স্টেশনে কেউ কেউ আজও বসে পড়ছে ভিক্ষা করতে । কিন্তু প্রাণের ভয়ে যখন সকলেই বাড়িতে, বাসও বন্ধ তখন এক টাকা রোজগার করাও তাদের তাছে চাপের হয়ে যাচ্ছে । এই পরিস্থিতিতে বারাসতে এমনই ক'জনের পাশে দাঁড়ালেন চিকিৎসক ধীমান চট্টোপাধ্যায় ও গৌতম সাহা । কোরোনা মোকাবিলায় তাদের সচেতন তো করলেনই, তুলে দিলেন খাদ্য সামগ্রীও ।

এই বিষয়ে ধীমানবাবু বলেন, "মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকাই আমাদের কর্তব্য । আর যখন কোরোনার জেরে দেশ এক কঠিন পরিস্থিতির মুখে দাঁড়িয়ে, তখন আরও বেশি করে সকলের এগিয়ে আসা উচিত । দরিদ্র, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে খুব ভালো লাগছে । আগামীদিনও এইভাবে মানুষের পাশে থাকব আমরা ।"

এদিকে, লকডাউনের জেরে পঞ্চায়েত এলাকার দরিদ্র মানুষের হাতে চাল, ডাল, আলু, তেল ও সাবান তুলে দিলেন জেলাপরিষদের পূর্ত ও পরিবহন কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ গোস্বামী । প্রায় ৫০০ দরিদ্র মানুষের মধ্যে এই সামগ্রী বিতরণ করেন তিনি । এই বিষয়ে নারায়ণ বাবু বলেন, "কোরোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাস্তায় নেমে সামনে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন । তিনি নির্দেশ দিয়েছেন লকডাউনে অসহায়, দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে । সেই মতো আমরা পশ্চিম খিলকাপুর, পূর্ব খিলকাপুর ও ইছাপুর- নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোর হাতে কিছু খাদ্য সামগ্রী তুলে দিলাম । যতদিন লকডাউন চলবে, এভাবেই মানুষের পাশে থাকব আমরা ।"

কোরোনা মোকাবিলায় লকডাউনের আজ ষষ্ঠ দিন । এই ক'দিনে লকডাউনের বহু চিত্র দেখেছে আপামর ভারতবাসী । কোথাও বাড়ি ফিরতে গিয়ে 200 কিমি হেঁটে ডেলিভারি বয়ের মৃত্যু, কোথাও বাড়ি ফেরার জন্য 1000 লোকের এক জায়গায় সমাগম । সবটা মিলিয়েই কোরোনা যুদ্ধে লড়ছে ভারত । আর এভাবেই কোথাও না কোথাও কেউ না কেউ পরিত্রাতা হিসেবে গরিবের মুখে অন্ন তুলে দিচ্ছেন ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.