হাবরা, 2 ডিসেম্বর: একের পর এক সদ্যোজাত শিশুর মৃত্যু, তার জেরেই স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে বন্ধ করে দেওয়া হল বেসরকারি নার্সিংহোম 'শান্তি নিকেতন' । এমনটাই খবর জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে । স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ টিম হাবরার ওই নার্সিংহোমে তদন্তে গিয়ে বেশকিছু ক্রুটি লক্ষ্য করেন।যার মধ্যে অন্যতম নার্সিংহোমের বেহাল পরিকাঠামো । বেহাল সেই পরিকাঠামোর কথা রিপোর্ট আকারে তাঁরা জমাও দেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে । সেই রিপোর্টেই নার্সিংহোম বন্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছিল । সেই মতোই সাধারণ মানুষের সুরক্ষার স্বার্থে শনিবার থেকে ওই নার্সিংহোমের চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্ম আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ।
নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে হাবড়ার একটি নার্সিংহোমে সাত শিশুর জন্ম হয় । নার্সিংহোমে চিকিৎসা শেষে মা ও সন্তানকে কিছুদিন পরে সুস্থ অবস্থায় ছেড়েও দেওয়া হয় । কিন্তু, বাড়িতে ফেরার দু-তিনদিন পর থেকেই অসুস্থ হতে শুরু করে সেই সাত সদ্যজাত শিশু । পরিবারের লোকজন প্রথমে হাবড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কলকাতার ফুলবাগানে বিসি রায় হাসপাতালে স্থানন্তর করা হয় । সাত শিশুর মধ্যে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় তিনজনের। ভর্তি থাকা চারজনের অবস্থাও সঙ্কটজনক ৷ বর্লতমানে বিসি রায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় হাবরা শহরে ।
এরপরই নড়েচড়ে বসে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তিন শিশুর মৃত্যুর জন্য হাবরার ওই নার্সিংহোমের বেহাল পরিকাঠামোকেই দায়ী করে সরব হন পরিবারের লোকেরা । সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই, স্বাস্থ্য দফতরের তরফে দু’টি আলাদা টিম গঠন করা হয় । শিশু মৃত্যুর কারণ এবং হাসপাতালের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করে সেই দল ৷ শুক্র ও শনিবার,টানা দু'দিন স্বাস্থ্য দফতরের সেই টিম নার্সিংহোমে গিয়ে গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখেন।এরপর,সেখানকার চিকিৎসা সংক্রান্ত ক্রটির কথা উল্লেখ করে রিপোর্ট জমা করেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে । রিপোর্টে নার্সিংহোমের চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্ম আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ।
এ বিষয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সমুদ্র সেনগুপ্তের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,"তদন্তে চিকিৎসা সংক্রান্ত ক্রুটি ধরা পড়ায় ওই নার্সিংহোম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে,সদ্যোজাত মৃত্যুর নির্দিষ্ট কোনও কারণ পাওয়া না গেলেও এর সঙ্গে কোনও না কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না এখনই বলা যাবে না ৷