বেলঘড়িয়া, 26 জুন: এবার রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া বেলঘড়িয়ায় ৷ ভাইয়ের মৃতদেহ আগলে ছিলেন দাদা ৷ পরে দাদাও মারা যান ৷ পূর্ব বেলঘড়িয়া সেকেন্ড লেনে তাঁদের বাড়ি ৷ বাড়ি থেকে রবিবার রাতে ভাইয়ের কঙ্কাল ও দাদার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ৷ দাদা বীরেন্দ্র কুমার দে ছিলেন বিদ্যুৎ দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ৷ 66 বছরের বীরেন্দ্র'র দেহ পচাগলা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ৷ এদিন রাতে স্থানীয়দের থেকে পুলিশ খবর পেয়ে ওই দেহ উদ্ধার করতে এসে পাশের ঘর থেকে একটি কঙ্কাল উদ্ধার করেছে। সেটি তাঁর ভাই ধীরেন্দ্র কুমার দে'র (63) বলে মনে করছেন পুলিশ ও স্থানীয়রা।
দু'জনেরই মানসিক সমস্যা ছিল বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। কয়েকদিন ধরে ওই বাড়িতে কারও সাড়াশব্দ না-পাওয়ায় বাসিন্দাদের সন্দেহ হয় ৷ তাঁরাই স্থানীয় নিমতা থানার পুলিশকে খবর দেন ৷ নিমতা পুলিশ ঘটনার খবর শুনে তড়িঘড়ি সেখানে পৌঁছয় ৷ পুলিশের প্রাথমিক অনুমান সম্ভবত 5-6 মাস আগে ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। সেই দেহ আগলেই দাদা বসেছিলেন। দিন কয়েক আগে তাঁরও মৃত্যু হয়।
বাড়ির কাউকে দেখা না-পাওয়ায় স্থানীয়রা বিষয়টি নিয়ে তৎপর হওয়াতে এদিন পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। পুলিশ ও স্থানীয়দের থেকে জানা গিয়েছে, যার দেহ উদ্ধার হয়েছে তাঁরা চার ভাই। প্রত্যেকের মানসিক সমস্যা রয়েছে। দু'ভাই আগেই মারা গিয়েছেন। এক বোন রয়েছে। তাঁর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। প্রতিবেশীরা জানিয়য়েছেন, আপতত ঘরটিতে তাঁরা চাবি দিয়ে রাখবেন ৷ পরে যদি দে'বাড়ির কোনও পরিবার-পরিজনরা আসেন তাহলে তখন তাঁরা চাবি দিয়ে দেবেন ৷ তবে এঘটনায় তাঁরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন ৷ তাঁরা ভাবতেই পারছেন না এমন ঘটনা ওই পাড়াতে ঘটেছে ৷
2015 সালে কলকাতার অভিজাত পাড়া রবিনসন স্ট্রিটের ঘটনায় সাড়া পড়ে গিয়েছিল। 3 নম্বর রবিনসন স্ট্রিটের বাড়িতে থাকত দে পরিবার। বাড়ির কর্তা আত্মহত্যা করেন । তারপরই জানা যায় কয়েক মাস আগে তাঁর মেয়ে দেবযানীর মৃত্যু হয়। ছেলে পার্থ তাঁর দেহ আগলে রেখে বসেছিলেন। বাড়ি থেকে দেবযানীর কঙ্কাল উদ্ধার হয়। দীর্ঘদিন ধরে মানসিক চিকিৎসা হয় পার্থর। পরে তিনিও আত্মহত্যা করেন। এই ঘটনাই রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ড নামে পরিচিত । তবে এদিনের মর্মান্তিক ঘটনা যেন রবিনসন স্ট্রিটকেও ছাপিয়ে গেল ।
আরও পড়ুন: দরজা ভাঙতেই পচা গন্ধ ! জগাছায় স্ত্রীর মৃতদেহ আগলে বসে অসুস্থ স্বামী